দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে বর্বর গণহত্যা চালানোর জন্য ইসরায়েলকে শাস্তি না দিয়ে উল্টো আরও মদদ দেওয়ায় জো বাইডেন প্রশাসনের ব্যর্থতার কড়া ভাষায় সমালোচনা করেছেন প্রগতিশীল মার্কিন সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেন।
ইসরায়েলকে নৃশংসতা বন্ধ করতে না পারাকে বাইডেন প্রশাসনের একটি গুরুতর ভুল হিসেবে বর্ণনা করেছেন ওয়ারেন। -খবর আরব নিউজের। এই মার্কিন এই সিনেটর বলেছেন, বাইডেন প্রশাসনের ব্যর্থতা বিশ্বব্যাপী আমেরিকান বিশ্বাসযোগ্যতাকে ক্ষুণ্ণ করেছে।
তিনি আরও বলেন, যদি এই প্রশাসন কাজ না করে, কংগ্রেসকে অবশ্যই মার্কিন আইন প্রয়োগের জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে এবং একটি যৌথ রেজোলেশনের মাধ্যমে ইসরায়েলের যুদ্ধবাজ প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু সরকারকে জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে যে, মার্কিন পররাষ্ট্র বিভাগ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কোনো ব্যবস্থা নেবে না বলে ডেমোক্র্যাটিক এই সিনেটর কংগ্রেসে একটি যৌথ রেজোলেশনকেও সমর্থন করেছেন।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গত ১১ মাসের মধ্যে গাজায় পৌঁছানো সাহায্যের পরিমাণ একেবারে সর্বনিম্ন স্তরে নেমে এসেছে। হোয়াইট হাউসের ৩০ দিনের আলটিমেটাম সত্ত্বেও যদি সাহায্য না বাড়ানো হয়, তাহলে ইসরায়েলকে সামরিক সহায়তা হারানোর হুমকিও দেওয়া হয়েছে।
গত মঙ্গলবার ৩০ দিনের আলটিমেটামের শেষ দিনে আন্তর্জাতিক মানবিক গোষ্ঠীগুলো সতর্ক করেছে যে, ওয়াশিংটনের ঘোষিত সাহায্য লক্ষ্যমাত্রা থেকে অনেক কম খাদ্যই ফিলিস্তিনে পৌঁছাতে দিচ্ছে ইসরায়েল।
খাদ্য নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরাও সতর্ক করে বলেছে যে, যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে গাজার কিছু অংশে দুর্ভিক্ষ আসন্ন।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দাবি, ইসরায়েলের ত্রাণ সাহায্যের ক্ষেত্রে অগ্রগতি সীমিত ছিল, কিন্তু ত্রাণ কার্যক্রমে বাধা দেয়নি, অর্থাৎ এটি মার্কিন আইন লঙ্ঘন করেনি।
ম্যাসাচুসেটসের সিনেটর ওয়ারেন এক বিবৃতিতে বলেছেন যে, ১৩ অক্টোবর বাইডেন প্রশাসন ইসরায়েল প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুকে জানিয়েছিলেন যে, গাজায় মানবিক সহায়তা বাড়ানোর জন্য তার সরকারের কাছে ৩০ দিনের সময় রয়েছে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে সামরিক সহায়তা পুরোপুরি বন্ধ থাকবে।
এই আলটিমেটামের ৩০ দিন পর তারা স্বীকার করেছেন যে, ফিলিস্তিনি নাগরিকদের জন্য পর্যান্ত খাদ্য, পানি এবং মৌলিক প্রয়োজনীয়তা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ায়নি ইসরায়েল।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দাবি পূরণে নেতানিয়াহুর ব্যর্থতা সত্ত্বেও, বাইডেন প্রশাসন আক্রমণাত্মক অস্ত্রের সরবারাহ বন্ধ করার জন্য কোনোই পদক্ষেপ নেয়নি।
মার্কিন সিনেটর ওয়ারেনের অনুমোদিত যৌথ রেজোলেশনটি যদি হোয়াইট হাউস ও সিনেটে পাসও হয়, তবে কংগ্রেসকে বাইডেনের সিদ্ধান্ত বাতিল করতেও হতে পারে।
অপর এক সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স জানিয়েছেন, আগামী সপ্তাহে ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র পাঠানো বন্ধ করতে উদ্যোগ নেবে নতুন এই যৌথ রেজোলেশন। তিনি বলেন, নেতানিয়াহুর সরকার গাজায় ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে যে ধরনের বর্বরোচিত হামলা চালাচ্ছে তা মার্কিন ও আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্টই লঙ্ঘন।
গত বৃহস্পতিবার ১৫ জন সিনেটর ও ৬৯ জন কংগ্রেস সদস্য ইসরায়েলি মন্ত্রিসভার সদস্যদের নজরদারিতে রাখার জন্য বাইডেন প্রশাসনকে চাপ দেওয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org