দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করার জন্য দৃঢ়প্রত্যয় ঘোষণা করেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট সি জিন পিং।
বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে সর্বশেষ বৈঠকে গত ১৬ নভেম্বর সি জিন পিং এই প্রত্যয় ঘোষণা করেছেন। খবর রয়টার্সের।
এই বৈঠকে তাদের মধ্যে সাইবার অপরাধ হতে বাণিজ্য, তাইওয়ান এবং রাশিয়ার মতো মতবিরোধপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
পেরুর রাজধানী লিমার যে হোটেলটিতে চীনের প্রেসিডেন্ট অবস্থান করছিলেন, সেখানেই তাদের মধ্যে এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অর্থনৈতিক সহযোগিতা সংস্থার (এপেক) সম্মেলন উপলক্ষেই বর্তমানে তারা লিমায় অবস্থান করছেন।
সম্মেলনের এক ফাঁকে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। বাইডেন এবং সি জিন পিংর মধ্যে গত ৭ মাসের মধ্যে এটিই প্রথম বৈঠক।
সি জিন পিং বাইডেনকে বলেছেন, সদ্য সমাপ্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পরেও ‘চীন-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি স্থিতিশীল, চমৎকার এবং টেকসই সম্পর্ক রাখার বিষয়ে চীনের লক্ষ্য অপরিবর্তিতই রয়েছে। অবশ্য দুই দেশের সম্পর্কের মধ্যে ‘উত্থান-পতন’ থাকার কথা স্বীকারও করেছেন সি জিন পিং।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে সি বলেছেন যে, ‘চীন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখতে, সহযোগিতা বাড়াতে ও পার্থক্য সামলে চলার বিষয়ে কাজ করতেও প্রস্তুত।’
দুই নেতা সব সময়ই একমত না হলেও নিজেদের মধ্যে ‘অকপট’ এবং ‘খোলাখুলি’ আলোচনা হয়েছে, সি’কে এমনটিই বলেছেন জো বাইডেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের দায়িত্ব নেওয়ার দুই মাস আগে বাইডেন এবং সি জিন পিংর মধ্যে এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হলো। ট্রাম্প ইতিমধ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, তিনি যুক্তরাষ্ট্রে চীনা পণ্য আমদানির ওপর ৬০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন। এটা তার ‘সবার আগে আমেরিকা’ বাণিজ্যব্যবস্থারই অংশ। চীন এইসব পদক্ষেপের বিরোধিতা করছে।
বাইডেন চীনের সঙ্গে উত্তেজনা কমাতেও চেষ্টা করেছেন। তবে সম্প্রতি চীন-সংশ্লিষ্ট একটি পক্ষ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর প্রচার শিবিরের কর্মকর্তাদের মধ্যকার টেলিফোন যোগাযোগ ফাঁস করায় ক্ষুব্ধ হয় ওয়াশিংটন। এছাড়াও তাইওয়ানের ওপর বেইজিংয়ের চাপ বাড়ানো এবং রাশিয়ার প্রতি চীনের সমর্থন নিয়ে উদ্বিগ্ন ওয়াশিংটন।
বৈঠকে উত্তর কোরিয়ার বিষয়েও চীনের সহযোগিতা চেয়েছেন জো বাইডেন। উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে রাশিয়ার গভীর সম্পর্ক এবং ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধে দেশটির সেনা মোতায়েনও উদ্বিগ্ন হয়েছে ওয়াশিংটন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org