দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সন্তানের খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিতে হবে ভাজাভুজি, বেশি তেলযুক্ত খাবার, ফাস্টফুড ইত্যাদি। তার পরিবর্তে পুষ্টিকর এবং সহজপাচ্য খাবার খাওয়ান।
শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এমনিতেই অনেক কম থাকে। বিশেষ করে পেটে ব্যথার সমস্যায় তারা প্রায় সময় ভোগে। সাধারণত গ্যাস, অ্যাসিডিটি বা বদহজমের কারণে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। সেই ক্ষেত্রে শিশুর খাবারের ব্যাপারে মা-বাবাকে প্রথম থেকেই সাবধান হতে হবে। ভাজাভুজি, বেশি তেলযুক্ত খাবার, ফাস্টফুড ইত্যাদি সন্তানের খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। এর পরিবর্তে পুষ্টিকর ও সহজপাচ্য খাবার খাওয়ান। অনেক চেষ্টা করেও যদি পেটের সমস্যা না কমে সেইক্ষেত্রে কয়েকটি ঘরোয়া টোটকা মেনে চললে উপকার পেতে পারেন।
আদা পানি
আদাতে খুব ভালো অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি, হজমকারী ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য রয়েছে। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রেও আদার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিশুর পেট ফাঁপা, বমি বমি ভাব দূর করতে তাকে আদা দেওয়া হালকা লিকার চা খাওয়ানো যেতে পারে। অথবা গরম পানিতে আদা ফুটিয়ে তাতে মধু মিশিয়ে ছেঁকে শিশুকে দিন। এতে পেটের কষ্ট দূর হবে।
হিং
পেটের গ্যাস দূর করত হিং এর জুড়ি নেই। পানিতে হিং গুলে পেস্ট তৈরি করে শিশুর পেটে বেশ কিছুক্ষণ ভালো করে মালিশ করতে হবে। এতে করে পেট ব্যথা কমে যাবে। হজমশক্তিও বাড়বে।
জোয়ান পানি
জোয়ান চিবিয়ে খেতে পারলে খুবই ভালো। তবে ছোটো বাচ্চার পক্ষে অনেক সময়ই তা সম্ভব হয় না। তাই হজমের গণ্ডগোল হলে শিশুকে জোয়ানের পানি খাইয়ে দিতে হবে। এতে বদহজম দ্রুত সেরে যাবে।
জিরা বা জিরার পানি
জোয়ানের মতোই জিরা কিংবা জিরার পানিও দ্রুত বদহজম দূর করবে। এক লিটার পানিতে দুই চা চামচ জিরা দিয়ে গরম করে ছেঁকে বোতলে ভরে রাখতে পারেন। সারাদিন ধরে ওই পানি খাওয়ানো যাবে।
শসা
ভালো হজমের জন্য সন্তানের খাদ্যতালিকায় শসা রাখতে পারে। এতে থাকা ফাইবার অন্ত্রের হাল ফেরাবে, গ্যাস-অ্যাসিডিটির সমস্যাও দূর করতে সহায়তা করবে।
দই
গ্যাসের সমস্যা, হজমের গণ্ডগোল হলে শিশুকে দই খাওয়ানো যেতে পারে। দইয়ে রয়েছে ভরপুর প্রোবায়োটিক। যে কারণে পেটে ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়ে। একাধিক জটিল রোগের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। শিশুকে নিয়মিত দই খাওয়ালে তার শরীরে প্রোটিন, ক্যালসিয়ামসহ একাধিক পুষ্টির ঘাটতি দূর হয়।
পানি
বদহজম হলে শিশুকে কিছুক্ষণ পর পর পানি খাওয়ান। দেখবেন ধীরে ধীরে পেট ব্যথা সেরে গেছে। মাঝে-মধ্যে পানির পরিবর্তে ভেষজ চা, আদা পানিও দিতে পারেন ইচ্ছে করলে। তথ্যসূত্র: এই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org