দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ঋতু পরিবর্তনের মুখে সর্দি-কাশি খুব কমন একটি সমস্যা। তবে গোটা শীতকাল যদি এই সর্দি লেগেই থাকে, তাহলেই হয় মুশকিল। শীতে সর্দি-কাশি হতে বাঁচতে খেতে পারেন মধু।
ইতিমধ্যেই পারদ নামতে শুরু করেছে। এই ঋতু পরিবর্তনের মুখে নিজেকে সুস্থ রাখা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। মৌসুম বদলের মুখে সর্দি-কাশি লেগেই থাকে। আবার কেও কেও তো গোটা শীতকাল জ্বর-সর্দিতেই ভোগেন। শরীরের তাপমাত্রাকে স্বাভাবিক রাখা, সংক্রমণের হাত হতে নিজেকে বাঁচানো খুব সহজ কাজ নয়। তবে, প্রতিদিন এক চামচ করে মধু খেলে শীতকাল আরামে কাটতে পারে। মধুর মধ্যে রয়েছে প্রাকৃতিক এনজাইম, ভিটামিন, মিনারেল এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। মূলত মধু দেহের ইমিউনিটি সিস্টেমকে উন্নত করে। তবে সেই মধু হতে হবে অবশ্যই খাঁটি। তবে যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে পরিপূর্ণ
ফ্ল্যাভোনয়েড এবং ফেনোলিক অ্যাসিডের মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে এই মধুতে। এগুলো শরীরকে ক্ষয়, সংক্রমণের হাত হতে রক্ষা করে। ফ্রি র্যাডিকেলের সঙ্গে লড়াই করে ও শরীরকে রোগ মুক্তও রাখে। কোষকে ক্ষয়ের হাত থেকে বাঁচায় ও দেহের অক্সিডেটিভ স্ট্রেসও কমায়। শীতকালে শরীরকে রোগের সঙ্গে লড়াই করার ক্ষমতাও দেয় মধু।
অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিভাইরাল উপাদান
মূলত মধু হলো প্রাকৃতিক অ্যান্টিমাইক্রোবিয়ালের পাওয়ারহাউস। যারমধ্যে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিভাইরাল উপাদান রয়েছে। শরীরকে ভাইরাস, রোগ জীবাণুর সঙ্গে লড়াই করার ক্ষমতাও দেয় এই মধু। সর্দি-কাশি, জ্বর এবং ফুসফুসের সংক্রমণ এড়াতে হলে মধু খেতে হবে।
গলার সংক্রমণ দূরে রাখতে
শীতকালে গলা ব্যথা ও কাশি খুব কমন একটি সমস্যা। গলার প্রদাহ কমাতে, শ্লেষ্মা পরিষ্কার করতে সাহায্য করে এই মধু। গলা খুশখুশ করলে মধু কাজে আসতেই পারে। মধুর মধ্যে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদানও রয়েছে, যা গলার সংক্রমণ দূর করতেও সাহায্য করে। সেইসঙ্গে সর্দি-কাশি কমাতে ও সংক্রমণের উপসর্গ হতে মুক্তি দিতেও সাহায্য করে এই মধু।
শরীরে এনার্জি
মধু শরীরে জমে থাকা টক্সিন পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। এছাড়াও মধুর মধ্যে গ্লুকোজ এবং ফ্রুটোজ রয়েছে, যা দেহে কাজ করার এনার্জিও প্রদান করে। সাধারণত শীতের দিনগুলোতে কাজ করার ইচ্ছে থাকে না, এনার্জিও থাকে না। সেই ক্ষেত্রে মধু খেলে এনার্জেটিক অনুভব করা যায়।
শরীরের তাপমাত্রা
মধুর মধ্যে থার্মোজেনিক এমন একটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা দেহের তাপ উৎপাদন বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে। শীতকালে শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখতে ও শরীরকে গরম রাখার জন্য মধু খান। তবে, মধুতে যেনো ভেজাল না থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে অর্থাৎ অরিজিন্যাল মধু খেতে হবে। তথ্যসূত্র: এই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org