দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এবার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে যে, আগামী বছরের ১ এপ্রিল হতে দেশে আমদানি, উৎপাদন বা বিক্রি করা যাবে না সিঙ্গেল ব্যান্ড রাউটার! মূলত গ্রাহকদের ইন্টারনেট ব্যবহারের অভিজ্ঞতা আরও স্বাচ্ছন্দ্যময় করতেই এমন একটি সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন।
ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে বর্তমানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রযুক্তিপণ্য হলো রাউটার। গৃহকোণ হতে শুরু করে অফিস বা কারখানা সবখানেই অবাধে ইন্টারনেট ব্যবহারের অভিজ্ঞতাকে সহজ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় করছে এইসব রাউটারগুলো। দেশে বিভিন্ন কোম্পানির তৈরি বিভিন্ন মানের রাউটার পাওয়া যায়, যারমধ্যে রয়েছে সিঙ্গেল ব্যান্ড, ডুয়াল ব্যান্ড কিংবা ট্রাই-ব্যান্ডের রাউটার।
দেশে ব্যবহৃত সিঙ্গেল ব্যান্ড রাউটারগুলোর ফ্রিকোয়েন্সির সক্ষমতাও থাকে সাধারণ ২ দশমিক ৪ গিগাহার্টজ। এই রাউটারে ইন্টারনেটের গতি পাওয়া যায় অনেকটা কম। তবে ডুয়াল-ব্যান্ড বা ট্রাই-ব্যান্ডের রাউটারে সিঙ্গেল ব্যান্ডের হতে বেশি ফ্রিকোয়েন্সি পাওয়া যায়। এতে ইন্টারনেট ব্যবহারের গতি আরও যেনো মসৃণ হয়, যা ব্যবহারকারীদের জন্য অত্যন্ত সুবিধাজনক। দেশে সিঙ্গেল ব্যান্ডের রাউটারের আমদানি ওএবং উৎপাদন নিষিদ্ধ হওয়ার এটিই কারণ বলে জানিয়েছে বিটিআরসি।
২০২৫ সালের এপ্রিল হতে দেশের বাজারে যেসকল ওয়াই-ফাই রাউটার বাজারজাত হবে, সেগুলোকে বাধ্যতামূলকভাবে ২ দশমিক ৪ হতে ২ দশমিক ৪৮৩ গিগাহার্জ ও ৫ দশমিক ৭২৫ হতে ৫ দশমিক ৮৭৫ গিগাহার্জ, উভয় ব্যান্ডই সাপোর্ট করতে হবে। এই দু’টির মধ্যে মাত্র একটিকে সাপোর্ট করে এমন ওয়াই-ফাই রাউটার বাজারজাত করা যাবে না। যে কারণে নিম্নমানের ও কম ব্যান্ডের রাউটার বিদেশ থেকে আমদানি এবং দেশে উৎপাদনের রাস্তা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
এই বিষয়ে বিটিআরসির তরঙ্গ বিভাগের পরিচালক ড. মো. সোহেল রানা বলেছেন, সিঙ্গেল ব্যান্ডের রাউটারে স্পিড মোটেও ভালো পাওয়া যায় না। তাই গ্রাহকদের সুবিধার কথা চিন্তা করে এই রাউটারকে বাজার থেকে তুলে নেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও ডুয়েল ব্যান্ড রাউটার কিনতেও খুব বেশি খরচও বাড়বে না গ্রাহকদের। হয়তো এক দুই’শ টাকার পার্থক্য হতে পারে। আগামী ১ এপ্রিল হতে আর কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স পাবেন না এক ব্যান্ডের রাউটার আমদানিকারকরা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org