দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভারতের জম্মু-কাশ্মীরের পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি (পিডিপি) প্রধান এবং সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি উত্তরপ্রদেশের সাম্ভালে সংঘটিত সহিংসতার প্রতিক্রিয়ায় মসজিদ জরিপ বিতর্ক নিয়ে বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত নিপীড়নের প্রসঙ্গ তুলেছেন।
উত্তরপ্রদেশের সাম্ভালে মসজিদের মধ্যে মন্দিরের অস্তিত্ব খোঁজার জন্য মসজিদ জরিপের পর পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষে ৪ মুসল্লি নিহত এবং বহু মুসলিম আহত হন। যাদের মধ্যে পুলিশের সদস্য ও কর্মকর্তারাও ছিলেন। -খবর টাইমস অব ইসরায়েলের।
রবিবার ভারতীয় গণমাধ্যম এনআইকে দেওয়া এক বিবৃতিতে মেহবুবা মুফতি বলেছেন, আজ আমি আশঙ্কা করছি যে, ১৯৪৭ সালের পরিস্থিতির দিকেই আমাদের ঠেলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। যুবকরা যখন চাকরির কথা বলেন, তখন তারা তা পায় না। ভালো হাসপাতাল কিংবা শিক্ষা ব্যবস্থা নেই। রাস্তার অবস্থাও উন্নত হচ্ছে না, অথচ মসজিদের ভিতরে গিয়ে মন্দির খোঁজার কথা বলে মসজিদ ভাঙার চেষ্টা করা হচ্ছে। সাম্ভাল ঘটনাটি খুবই দুর্ভাগ্যজনক। সেখানে কেও দোকানে কাজ করছিলেন, তাদেরকেও গুলি করা হয়েছে।
এই সময় বাংলাদেশ প্রসঙ্গ টেনে সাবেক এই মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর নিপীড়ন চলছে বলে অনেক গণমাধ্যমই খবর প্রকাশ করছে। এইসব খবরের সত্যতা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। কারণ হলো, বাংলাদেশে এই মুহূর্তে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে। এটাকে অনেকেই সংখ্যালঘু নির্যাতন বলে চালিয়ে দিতে চাইছেন।
যদি ভারতেও সংখ্যালঘুদের ওপর একই ধরনের আচরণ করা হয়, তবে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে পার্থক্য কোথায়? আমি কোনো পার্থক্যই খুঁজে পাই না।
মেহবুবা মুফতি আরো উল্লেখ করেন যে, আজমির শরীফ দরগাহ, যেখানে সব ধর্মের মানুষরা প্রার্থনা করেন। এটা ভ্রাতৃত্বের সবচেয়ে বড় একটি উদাহরণ। এখন সেটির নিচেও মন্দির খোঁজার জন্য খনন করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
সাম্প্রতিক সময় বাংলাদেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাড়িঘরে কিছু হামলার ঘটনা ঘটছে। যাদের মধ্যে অবশ্য কিছু সংখ্যক হিন্দু ধর্মাবলম্বীর লোকজনও রয়েছেন। তবে তারা কেবল আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন বলেই তারা অন্যদের মতোই হামলার শিকার হন। এই সময় ছাত্রজনতা বেশকিছু জেলায় হিন্দুদের মন্দির এবং ধর্মীয় স্থাপনাগুলো পাহারাও দিয়েছেন।
যদিও এইসব ঘটনাকে ভারতের কিছু সংবাদমাধ্যমে ভুলভাবে উপস্থাপন করে প্রচার করছে। যার ওপর ভিত্তি করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতারা এইসব ঘটনাকে হিন্দুদের মন্দির এবং ধর্মীয় স্থাপনাগুলোতে হামলা করা হয়েছে ও এখানে সংখ্যালঘুদের ওপরও কথিত সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। সেইসঙ্গে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ও ভারতের পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দার মুখে পড়ে বাংলাদেশ।
একই প্রসঙ্গ টেনে করা মেহবুবা মুফতির এই মন্তব্য ভারতের বর্তমান সাম্প্রদায়িক পরিবেশ ও বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে একটি অস্বস্তিকর চিত্রই উঠে এসেছে। যদিও এটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার জন্য উভয় দেশকেই দায়িত্বশীল আচরণের প্রয়োজনীয়তার দিকেই ইঙ্গিত করা হচ্ছে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org