দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কলকাতার জনপ্রিয় কন্ঠশিল্পী লগ্নজিতা চক্রবর্তী আবারও সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছেন। সম্প্রতি বাংলাদেশ ইস্যুতে ‘হিন্দু-মুসলিম’ প্রসঙ্গ টেনে ফেসবুকে নিজের মতামত প্রকাশ করার পর, তাকে তীব্র ট্রোলিংয়ের শিকার হতে হচ্ছে।
এই ঘটনার পর সামাজিক মাধ্যমে গায়িকাকে বিদ্রুপ, কটাক্ষ ও হুমকির মুখেও পড়তে হয়। যদিও পাল্টা জবাবও দিয়েছেন তিনি, তারপরও ট্রোলিং কিংবা থ্রেট বন্ধই হয়নি। অবশেষে সমস্ত পোস্টই ডিলিট করে দেন লগ্নজিতা।
গত ৩০ নভেম্বর লগ্নজিতা তার ফেসবুকে একটি পোস্টে লেখেন যে, “”ভেবেছিলাম এই হিন্দু-মুসলিম ব্যাপারটা আমরা পেরিয়ে এসেছি, অনেক দিন, বছর, কাল আগে’ই। কোনো দিন ভাবিনি ২০২৪ সালে দাঁড়িয়ে, এই বিষয়টি নিয়ে একটা পোস্ট করতে হবে। এটা অতীত হয়ে গেছে, এমনটিই আমার ভাবনা এবং চিন্তা ছিল”।
এই পোস্টটি করার পরই শুরু হয় তীব্র ট্রোলিং। অনেকেই মন্তব্য করেন যে, লগ্নজিতা হয়তো কিছুই জানেন না এই বিষয়টি সম্পর্কে। আবার কেও কেও লেখেন যে, গায়িকাকে বাংলাদেশের শ্রোতা ধরে রাখতে হবে তো। এইসব ট্রোল সয়ে নিয়ে গায়িকা পাল্টা জবাবও দেন। তিনি লেখেন যে, অনেকেই বলছেন, “”এই যে আমার হিন্দু-মুসলিম নিয়ে ভাগ করতে ইচ্ছে করে না, করছেও না। এটার কারণ নাকি সিপিএমের ৩৪ বছরের শাসন, আমি নাকি কলকাতা ও পশ্চিমবঙ্গ এবং ভারতে কী হয় কিছুই জানি না, আমি নাকি খুব’ই অশিক্ষিত, আমার আরও শিক্ষিত হওয়া উচিত ছিল ইত্যাদি ইত্যাদি”।
তিনি আরো বলেন, “”তবে আমি তো হিন্দু-মুসলিম যে ভাই-ভাই, এটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, এনাদের থেকেই শিখেছিলাম। তো রবীন্দ্রনাথ আর নজরুলও কী সিপিএম ছিলেন? জাস্ট জানতে চাইছি”।
লগ্নজিতা এরপর বলেন যে, শুনুন, থ্রেট শুনে আজকাল হুমকির বিরক্ত লাগে। যে কোনো জিনিসই একঘেয়ে হয়ে গেলে যা হয় আরকি। আমি তো আপনার অফিস যাওয়া নিয়ে কিছুই বলছি না। আমার গান গাওয়া নিয়েই বা আপনার এতো সমস্যা কোথায়?
তাছাড়াও, গায়িকা মহাত্মা গান্ধীর মন্তব্য শেয়ার করে লেখেন যে, তাহলে এখন থেকে আমিও কংগ্রেস হয়ে গেলাম (আপনারা যেভাবে ট্রেন্ড ঠিক করে দিচ্ছেন আরকি)।
রবিবার, তার পোস্ট করার কিছুক্ষণের মধ্যেই গায়িকা তার পুরোনো সব পোস্ট ডিলিট করে দেন। তারপর তিনি আরেকটি পোস্ট করেন, যেখানে তিনি লেখেন যে, আমার পরিবার (আমার ব্যক্তিগত জীবন) ও আমার ব্যান্ড (আমার পেশাদার জীবন) -এর কাতর অনুরোধ, তাদের যেনো আর অসম্মান না হয়, আমি আমার সমস্ত পোস্টই ডিলিট করতে বাধ্য হলাম। সমালোচনাকারীরা, আপনারাই জিতে গেলেন; আনন্দ করুন।
এভাবেই সোশ্যাল মিডিয়ায় একের পর এক মন্তব্যের পর লগ্নজিতা চক্রবর্তী শেষ পর্যন্ত নিজের সমস্ত পোস্ট ডিলিট করতে বাধ্য হয়েছেন ও সমালোচনাকারীদের সাফ জবাবও দিয়েছেন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org