দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামে গরুর মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, রাজ্যের সব রেস্টুরেন্ট, হোটেল ও জনসম্মুখে গরুর মাংস পরিবেশন এবং খাওয়া নিষিদ্ধ। বুধবার (৪ ডিসেম্বর) রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মা এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন।
সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার নতুন বিধান অন্তর্ভুক্ত করতে গরুর মাংস খাওয়ার ওপর বিদ্যমান আইন সংশোধন করার জন্য রাজ্যের মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়।
আসামে গরুর মাংস খাওয়া বেআইনি নয়, তবে আসাম ক্যাটল প্রিজারভেশন অ্যাক্ট ২০২১ অনুযায়ী, গবাদি পশু জবাই ও গরুর মাংস এবং গরুর মাংসের পণ্য বিক্রি, এমনকি পরিবহন নিয়ন্ত্রণের কথা বলা হয়েছে।
আসামের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, ‘আমরা ইতিপূর্বে (২০২১ সালে রাজ্য বিধানসভায়) আসামে গরু রক্ষার জন্য একটি বিল উত্থাপন করেছি ও আমরা সফলও হয়েছি।’
তিনি বলেন যে, এখন আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, রাজ্যের কোনো হোটেল কিংবা রেস্তোরাঁয় গরুর মাংস পরিবেশন করা হবে না। এমনকি কোনো পাবলিক অনুষ্ঠান কিংবা কোনো পাবলিক প্লেসেও পরিবেশন করা যাবে না।
২০২১ সালের হিন্দু, জৈন ও শিখ সংখ্যাগরিষ্ঠ এবং মন্দির বা সাতরা (বৈষ্ণব মঠ) এর ৫ কিলোমিটারের মধ্যে গবাদি পশু জবাই ও গরুর মাংস বিক্রি নিষিদ্ধ করে আসাম গবাদি পশু সংরক্ষণ আইন পাস করা হয়েছিলো।
আসামের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আগে আইনে মন্দিরের ৫ কিলোমিটারের কথা বলা থাকলেও এখন সেটি অন্যান্য এলাকায় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি আমরা। আইন লঙ্ঘন করলে ৩ থেকে ৮ বছরের কারাদণ্ড এবং ৩ লাখ থেকে ৫ লাখ রুপি পর্যন্ত জরিমানার বিধানও রয়েছে।
অপরদিকে আসামের বিধানসভার বিরোধী দল অল ইন্ডিয়া ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (এআইইউডিএফ) প্রস্তাবিত এই নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করে এক বিবৃতি দিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, বিজেপি দলীয় রাজ্য সরকার রাজ্যের উন্নতির বিষয়ক যেসব প্রতিশ্রুতি বিধানসভা নির্বাচনের পূর্বে দিয়েছিল, সেইসব পূরণে শোচনীয়ভাবে ব্যর্থ হয়েছে। সেইসব ব্যর্থতা ঢাকার জন্যই তারা তাদের পুরোনো সাম্প্রদায়িতকতা এবং বিভেদের খেলা শুরু করেছে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org