দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অবশেষে বিদ্রোহের তোপের মুখে দামেস্ক ছেড়ে পালিয়েছেন যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। তিনি বিমানে করে অজানা গন্তব্যের দিকে রওয়ানা হয়েছেন।
তবে শনিবার প্রেসিডেন্ট বাশারের কার্যালয় হতে এক বিবৃতিতে বলা হয়, কিছু বিদেশি গণমাধ্যমে গুঞ্জন এবং ভুয়া খবর ছড়ানো হচ্ছে। দাবি করা হচ্ছে যে, প্রেসিডেন্ট দামেস্ক ছেড়েছেন কিংবা দ্রুত অন্য দেশে চলে গেছেন। তবে তা সত্য নয়। প্রেসিডেন্ট জাতীয় এবং সাংবিধানিক কাজে ব্যস্ত রয়েছেন ও রাজধানী দামেস্কেই রয়েছেন। আজ রবিবার (৮ ডিসেম্বর) সকালে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই তথ্য দিয়েছে। দেশটির দু’জন কর্মকর্তা সূত্রে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থাটি।
ইতিমধ্যেই মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটির রাজধানীতে রাস্তায় নেমে এসেছেন হাজার হাজার মানুষ। তারা উল্লাস প্রকাশের পাশাপাশি ‘স্বাধীনতা’ নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন। অপরদিকে দামেস্কের বিমানবন্দরে ব্যাপক বিশৃঙ্খলাও দেখা দিয়েছে। আজ রবিবার (৮ ডিসেম্বর) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
সংবাদমাধ্যমটি তার লাইভ আপডেটে বলেছে যে, বিদ্রোহীদের হাতে দামেস্কের পতন হয়েছে কিনা তা এখনও বলা যাচ্ছে না। প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের ২৪ বছরের শাসনের অবসান আসলে হয়েছে কিনা সেটিও সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না। তবে কোনও সন্দেহ নেই যে- এটি সিরিয়ার যুদ্ধে একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটির নিয়ন্ত্রণের জন্য বিরোধীরা বছরের পর বছর ধরে যারা সংগ্রামে লিপ্ত ছিলেন তাদের কাছে। লাইভ আপডেটে আল জাজিরা আরও বলেছে যে, আমরা যা নিশ্চিত করতে পারি তা হলো- সশস্ত্র বিরোধীরা সিরিয়ার রাজধানীতে প্রবেশ করেছেন। দামেস্ক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে।
মূলত গত ১০ দিনে যা দেখা যায় তা হলো- বিরোধীদের অগ্রযাত্রার মুখে সিরীয় সেনাবাহিনী কার্যত একেবারে ভেঙে পড়েছে। তাদের লড়াই করার ইচ্ছা ছিল কম কিংবা নেই বললেই চলে। মনে রাখতে হবে, সিরীয় সেনাবাহিনীর ওই ব্যক্তিরা ছিল নিয়োগপ্রাপ্ত। মূলত সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে বাধ্য হন তারা।
এদিকে প্রত্যক্ষদর্শীদের উদ্ধৃত করে বার্তাসংস্থা রয়টার্স বলছে যে, হাজার হাজার মানুষ গাড়িতে ও পায়ে হেঁটে দামেস্কের প্রাণকেন্দ্রে জড়ো হচ্ছেন। তারা “স্বাধীনতা” স্লোগান দিচ্ছেন। এছাড়াও অনলাইনে পোস্ট করা বেশ কিছু ভিডিওতে দামেস্কের উমাইয়াদ স্কোয়ারে বেশ কিছু লোককে পরিত্যক্ত সামরিক ট্যাংকের উপর দাঁড়িয়ে থাকতে ও আনন্দ-উল্লাস উদযাপনে গান গাইতে দেখা যায়। আল জাজিরা এইসব ভিডিও ফুটেজের সত্যতা যাচাই করেছে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org