দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ব্রিটিশ কাউন্সিল এবং লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে গত ১১ ডিসেম্বর ব্রিটিশ কাউন্সিলের মিলনায়তনে ‘নন-ফর্মাল এডুকেশন ফর ইয়ুথ-লেড চেঞ্জ: ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামিং ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে তরুণ প্রজন্মের উন্নয়ন সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমের ওপর সম্যক ধারণা প্রদান করা হয়। ব্রিটিশ কাউন্সিল এবং লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত গবেষণাটিতে অর্থায়ন করেছে ইউকে রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশনের (ইউকেআরআই) আর্টস অ্যান্ড হিউম্যানিটিস রিসার্চ কাউন্সিল (এএইচআরসি)। গবেষণায় ব্রিটিশ কাউন্সিলের ‘লিডারশিপ ফর অ্যাডভান্সিং ডেভেলপমেন্ট ইন বাংলাদেশ (লিড বাংলাদেশ)’ প্রকল্প নিয়ে বিশদ বিশ্লেষণ করা হয়েছে, যেখানে তরুণদের ক্ষমতায়ন, সামাজিক ন্যায়বিচারের প্রচার এবং তরুণ নেতৃত্বাধীন পরিবর্তনকে প্রভাবিত করার ক্ষেত্রে প্রকল্পটির ভূমিকা তুলে ধরা হয়।
লিড বাংলাদেশ প্রোগ্রামটি কীভাবে প্রয়োজনভিত্তিক ও প্রাসঙ্গিক প্রশিক্ষণ মডিউলের মাধ্যমে তরুণ নেতৃত্বাধীন সামাজিক পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে এই বিষয়ে প্রতিবেদনে সম্যক ধারণা প্রদান করা হয়। সক্রিয় নাগরিকত্ব, লৈঙ্গিক সমতা এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় (এসডিজি) গুরুত্বারোপ করে পরিচালিত প্রোগ্রামটির সাফল্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে এর অংশগ্রহণ এবং সম্পৃক্ততামূলক কার্যক্রম। এ ছাড়াও, গবেষণায় তরুণ নেতৃত্বাধীন সামাজিক কর্ম প্রকল্পগুলোর (এসএপি) গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে, যা তাত্ত্বিক জ্ঞানের ব্যবহারিক প্রয়োগে এবং ইতিবাচক পরিবর্তনে ভূমিকা রেখেছে।
গবেষণায় বিভিন্ন চ্যালেঞ্জও চিহ্নিত করা হয়; যার মধ্যে রয়েছে: তরুণদের সঙ্গে সম্পৃক্ততা এবং তাদের উৎসাহ প্রদান, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, নীতিনির্ধারকদের সাথে যোগাযোগ, কমিউনিটির সংশয়, সম্পদের অপ্রতুলতা ও ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বিষয়। পাশাপাশি, এতে প্রোগ্রামের সময় বাড়ানো, এসএপি বাজেট বৃদ্ধি, ফলো-আপ এবং মনিটরিং ব্যবস্থা শক্তিশালী করা, অতিরিক্ত এসডিজি লক্ষ্য যুক্ত করা, ধারাবাহিকভাবে বিস্তৃত পরিসরে শেখার পরিবেশ তৈরি সহ মান উন্নয়ন সহ বিভিন্ন বিষয়ে সুপারিশ করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী। তিনি তরুণদের শক্তিকে অগ্রাধিকার দেওয়ার বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন ও তরুণদের উন্নয়নে আরও সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর স্টিফেন ফোর্বস; লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব পলিটিকস অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের ড. কেটি হজকিনসন; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা এবং গবেষণা ইনস্টিটিউটের ভাষা শিক্ষা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মনিনুর রশিদসহ অন্যান্য বিশিষ্ট অতিথিবৃন্দ।
ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর স্টিফেন ফোর্বস তার স্বাগত বক্তব্যে বলেন, “ব্রিটিশ কাউন্সিলের লিড বাংলাদেশ প্রোগ্রামের ওপর এই গবেষণা প্রতিবেদনটি তরুণদের উন্নয়ন কার্যক্রমের রূপান্তরমূলক শক্তিকেই তুলে ধরে। আমরা এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের জ্ঞান ও দক্ষতার উন্নয়নে কাজ করেছি, যা তাদের নিজ নিজ কমিউনিটিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে ভূমিকা রেখেছে। তবে এখনও অনেক চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করতে হবে এবং বাংলাদেশের তরুণদের ক্ষমতায়নে আরও অনেক কিছু করার সুযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে ব্রিটিশ কাউন্সিলে আমরা আমাদের অংশীদারদের সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে কাজ করে যেতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।” ড. কেটি হজকিনসন গবেষণার ফলাফল বিস্তারিতভাবে উপস্থাপন করেন। এরপর অধ্যাপক মোহাম্মদ মনিনুর রশিদ ও ব্রিটিশ কাউন্সিলের নন-ফর্মাল এডুকেশন (এনএফই) টিম প্রশ্নোত্তর পর্ব পরিচালনা করেন ও গবেষণার বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। অনুষ্ঠানে একটি আলোচনা সভারও আয়োজন করা হয়, যেখানে বাংলাদেশে তরুণদের উন্নয়নের অগ্রাধিকারের বিষয়গুলো- যেমন কর্মসংস্থানের জন্য দক্ষতা, গণতান্ত্রিক শাসন ও কমিউনিটির সম্পৃক্ততার মত বিষয়গুলোতে আলোকপাত করা হয়।
# খবর সংবাদ বিজ্ঞপ্তির।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org