থাইরয়েডের সমস্যা হলে বাঁধাকপি-ফুলকপি কী একেবারেই বাদ?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এই সময় ফুলকপি, বাঁধাকপির মৌসুম। বাজারে গেলেই দেখা যায় এই সবজির। অনেক ক্ষেত্রেই শোনা যায় যে, থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে বাঁধাকপি, ফুলকপি খাওয়া যাবে না। তাহলে থাইরয়েডের সমস্যা হলে বাঁধাকপি-ফুলকপি কী একেবারেই বাদ?

আমাদের সমাজে থাইরয়েডের সমস্যা খুব একটা অপরিচিত নয়। অথচ থাইরয়েড নিয়ে সচেতনতার অভাব রয়েছে। পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের মধ্যেই থাইরয়েডের সমস্যা তুলনামূলকভাবে বেশি দেখা যায়। অনেকের ধারণা যে, থাইরয়েড ধরা পড়লে খাওয়া-দাওয়ায় বিধি নিষেধ তৈরি হয়। তাহলে সত্যিই কী তাই? এই সম্পর্কে যোগাযোগ করা হয় পুষ্টিবিদ রাখি চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘থাইরয়েডের রোগীদের খাওয়া-দাওয়া নিয়ে বিশেষ কোনো নিয়ম মানতে হয় না। সব ধরনের খাবারই খাওয়া যায়, তবে অবশ্যই বুঝেশুনে খেতে হবে।’

রাখি চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘বাঁধাকপি, ফুলকপির মধ্যে গোয়ট্রোজেনিক (Goitrogenic) নামে একটি যৌগ রয়েছে। ক্রসিফেরস প্রজাতির এইসব সবজি খেলে দেহে থাইরয়েড হরমোনের ভারসাম্যও নষ্ট হয়।’ বাঁধাকপি, ফুলকপি অত্যাধিক মাত্রায় খাওয়ার কারণে থাইরয়েড হরমোন ঠিকমতো কাজ করতে পারে না।

Related Post

‘৫-৬ বছর আগেও বলা হতো যে, থাইরয়েড থাকলে বাঁধাকপি, ফুলকপি, পালংশাক খাওয়া যাবে না। তবে এখন সেটি আর বলা হয় না। এইসব সবজি সেদ্ধ করলে এর মধ্যে যে গোয়ট্রোজেনিক উপাদান থাকে, তার পরিমাণও কমে যায়। এছাড়াও কয়েক কিলো বাঁধাকপি-ফুলকপি খেলে তবেই গোয়ট্রোজেনিক থাইরয়েডের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। তবে মানুষ অতো সবজি খায় না’, বলেন রাখি। অতএব, থাইরয়েডের রোগীরা মাঝে-মধ্যে বাঁধাকপি, ফুলকপি খেলে কোনও ক্ষতি হবে না।

শুধু বাঁধাকপি, ফুলকপিই নয়, বিনস বিশেষত সোয়াবিন খাওয়ার উপরও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে থাইরয়েডের রোগীদের জন্য। এই সম্পর্কে রাখি বলেছেন, ‘বাঁধাকপি, ফুলকপি খেলেও সোয়াবিন কিংবা বিনস না খাওয়াই ভালো। এতে গোয়ট্রোজেনিক উপাদান এতোটা বেশি পরিমাণেই থাকে যে, এটি থাইরয়েড হরমোনের ভারসাম্য নষ্টও করতে পারে।’ কিন্তু, সোয়া চাঙ্ক খাওয়া যায়। যেহেতু এটি বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তৈরি করা হয়ে থাকে, তাই এতে গোয়ট্রোজেনিক উপাদানের পরিমাণও কমে যাবে।

থাইরয়েডের রোগীদের খাওয়া-দাওয়া নিয়ে খুব বেশি সচেতন হওয়ার দরকারও পড়ে না। তবে থাইরয়েড হরমোনের মাত্রা যাচাই করে নেওয়া প্রয়োজন। যেমন হাইপোথাইরয়েডিজমে কম কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবারও খেতে হয়, ওজন কম রাখতে হবে। আবার হাইপারথাইরয়েডিজমে ব্যালেন্স ডায়েট মেনে চললে ও শরীরচর্চা করলে সুস্থ থাকা যায় বলেও জানিয়েছেন রাখি। সুতরাং, খাদ্যতালিকা হতে খাবার বাদ দেওয়ার আগে থাইরয়েড হরমোন পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে। তথ্যসূত্র: এই সময়।

>>>>>>>>>>>>>>

ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।

লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর

২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।

সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-

১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।

২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।

৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।

৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।

৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।

৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।

৭. ত্বকে র‌্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।

রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :

১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।

২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।

এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

অপরদিকে

জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:

১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।

২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।

৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।

৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।

৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।

৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।

৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।

৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org

This post was last modified on ডিসেম্বর ২৯, ২০২৪ 11:35 পূর্বাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বর্ষবরণে গাড়ি হামলায় ১৫ জন নিহত

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানার নিউ অরলিন্স শহরের ফ্রেঞ্চ কোয়ার্টারে বর্ষবরণের উদ্‌যাপনে…

% দিন আগে

বিচিত্র এক উদ্যোগ: জানাজা নামাজ আদায় প্রতিযোগিতা!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা অনেক প্রতিযোগিতা দেখে থাকি। তবে আজ এমন এক বিচিত্র…

% দিন আগে

কুয়াশাচ্ছন্ন এক শীতের সকাল

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। বৃহস্পতিবার, ২ জানুয়ারী ২০২৫ খৃস্টাব্দ, ১৮ পৌষ ১৪৩১…

% দিন আগে

সকালের কয়েকটি অভ্যাসে কমে যাবে ক্রনিক অসুখের ঝুঁকি!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে, অনিয়ম জীবনযাপনের জেরে শরীরে রোগের…

% দিন আগে

গ্রামীণফোনে নিরবচ্ছিন্নভাবে অনলাইন ভিডিও দেখার সুযোগ পাবেন যেভাবে

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান গ্রামীণফোন, মোবাইল ইন্টারনেট বাজারে…

% দিন আগে

বেশি পরিমাণে হেঁটে ক্যালোরি ঝরাবেন কীভাবে?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ যদি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে পেটের চর্বির কয়েক ইঞ্চি ফারাক চোখে…

% দিন আগে