দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেকেই ঘরে বেড়াল পোষেন। আর ঋতু পরিবর্তনের সময় বিশেষ খেয়াল রাখা দরকার আপনার পোষ্যর। এইক্ষেত্রে আপনি কী-কী সতর্কতা অবলম্বন করবেন? কিংবা প্রিয় পোষ্যর জন্য কী কী সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে?
ঋতু পরিবর্তনের সময় শুধু মানুষের স্বাস্থ্যের গোলযোগের দেখা দেয় তা কিন্তু নয়, আপনার প্রিয় পোষ্যটির বিশেষ নজরদারিও প্রয়োজন। বাড়তি সতর্ক না থাকলে একাধিক সমস্যা ভোগাতে পারে আপনার প্রিয় পোষ্যটিকে। তাই এই সময় কী-কী সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে? কোন ধরনের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা আরও বেশি থাকে পোষ্যদের? জানিয়েছেন পশু চিকিৎসক সায়ন্তন সরকার।
আমাদের সমাজে অনেকেই বাড়িতে বিড়াল পোষেন। দেশীয় ব্রিড কিংবা পার্সিয়ান, বিড়ালকে ১০০% পোষ মানানো প্রায় অসম্ভব বলে মত বিশেষজ্ঞের। সেই কারণেই বর্তমান সময় ফেলাইন প্যানলিউকোপেনিয়া ভাইরাসে (এফপিভি) আক্রান্ত হচ্ছে বাড়ির পোষ্য বিড়াল। যেখানে সুস্থতার হার মাত্র ৩০%। সবচেয়ে চিন্তার বিষয় হলো এই রোগ ভীষণ রকমভাবে ছোঁয়াচে।
আপনি কীভাবে বুঝবেন আপনার বিড়ালটিও এই রোগে আক্রান্ত?
চিকিৎসকের ধারণা মতে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিড়াল স্বভাবগতভাবেই একটু চঞ্চল হয়ে থাকে, তবে যদি দেখা যায়, হঠাৎ করে কোনও বিড়াল ঝিমিয়ে পড়েছে কিংবা ল্যাথার্জিক হয়ে পড়ে, তবে একটু সচেতন হতেই হবে। সেইসঙ্গে খাওয়া বন্ধ, বমি হলে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা দরকার।
কী কী কারণে এই ভাইরাস সংক্রমণ ঘটে?
মূলত ভ্যাকসিনেশনের গাফিলতির জন্যই এই রোগ হয়ে থাকে। কুকুরের থেকে বিড়ালের ক্ষেত্রে এই ভ্যাকসিন নিয়ে খুব বেশি উদাসীনতা দেখা যায়। সঠিক সময় মনিটরিং না করানোর জন্য একটা খুব কমন সমস্যা দেখা দেয়। এমনিতেও বিড়ালদের চার দেওয়ালের মধ্যে আটকে রাখা যায় না। তাদের বাইরে বেরিয়ে যাওয়ার একটা প্রবণতা প্রায় সময় থাকেই। সে জন্য কোনওভাবে সেই জার্মের সংস্পর্শে এলে আপনার বাড়ির ভিতরে যদি একাধিক বিড়াল থাকে, তবে বাকিরাও আক্রান্ত হয়ে পড়বে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ছোট বিড়ালগুলোই এই রোগে আক্রান্ত হয়।
প্রতিরোধের উপায়
উল্লেখ করা লক্ষণগুলো চোখে পড়লে দেরি না করে চিকিৎসকের সঙ্গে অতিদ্রুত যোগাযোগ করা দরকার। এই রোগটির সাপোর্টিভ হিসেবে কাজ করে স্যালাইন, ইনজেকশন ও অ্যান্টিবায়োটিক। এই সবের পরও সুস্থতার সংখ্যা নেহাতই কম। তবে এই ভাইরাস শুধুমাত্র বিড়ালের শরীরে সংক্রমিত হয় অন্য কোনও পশু কিংবা মানুষের শরীরে এই ভাইরাসটি বাসা বাঁধতে পারে না। চিকিৎসকের মতে এর থেকে বাঁচার উপায় হলো, সঠিক সময় ডিওয়ার্মিং করানো ও ভ্যাকসিন এবং তার বুস্টার ডোজ নেওয়া। তথ্যসূত্র: এই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org