মুঠো মুঠো ভিটামিন সি সাপ্লিমেন্ট খেলে কিডনিতে কী পাথর জমতে পারে?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ একটি বিষয় হলো সাপ্লিমেন্ট যখন খুশি তখন খাওয়া যায় না। কোন ভিটামিন কিংবা সাপ্লিমেন্ট কখন, কীভাবে ও কী পরিমাণে খেতে হবে, তার কিন্তু নিয়ম রয়েছে। চিকিৎসকরাই তা বলতে পারেন।

শরীর সুস্থ রাখতে ও প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে নিয়মিত ভিটামিন সি খাওয়ার পরামর্শও দেন চিকিৎসকরা। করোনার সময় আরও বেশি করে বলা হচ্ছিল ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার জন্য। তবে প্রতিদিন খাওয়া-দাওয়া থেকে ভিটামিন সি শরীরে ঢোকা ও সাপ্লিমেন্ট খাওয়া কিন্তু এক নয়। সাপ্লিমেন্ট যখন খুশি তখন খাওয়া যায় না। কোন ভিটামিন কিংবা সাপ্লিমেন্ট কখন, কীভাবে ও কী পরিমাণে খেতে হবে, তার নিয়মও রয়েছে। চিকিৎসকরা সেটি বলতে পারেন। যদি সেই মাপ পেরিয়ে যায়, তখন নানাবিধ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও দেখা দেবে। যেমন কিছু গবেষণায় দাবি করা হয় যে, ভিটামিন সি সাপ্লিমেন্ট অতিরিক্ত পরিমাণে খেয়ে ফেললে কিডনিতে পাথর জমার ঝুঁকিও বহু গুণে বেড়ে যায়।

এশিয়ান ইনস্টিটিউট অফ নেফ্রোলজির চিকিৎসক বি বিজয় কিরণ এই বিষয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করে জানিয়েছেন যে, ভারতের মতো দেশে একজন প্রাপ্তবয়স্ক মহিলার দিনে ৭৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি কিংবা অ্যাসকরবিক অ্যাসিড দরকার পড়ে, প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের ক্ষেত্রে এর পরিমাণ ৯০ মিলিগ্রাম। দিনে ২০০০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত ভিটামিন সি খাওয়া নিরাপদ কিন্তু তার বেশি নয়। একটি পাতিলেবুতে প্রায় ৬০ মিলিগ্রাম পরিমাণ ভিটামিন সি থাকে। তবে অন্য অনেক খাবারের চেয়ে আরও বেশি মাত্রায় ভিটামিন সি থাকে। তবে সাপ্লিমেন্টগুলোতে ভিটামিন সি’র মাত্রা বেশি থাকে। তাই সাপ্লিমেন্ট খেলে কী ডোজ়ে খেতে হবে, তা চিকিৎসকের কাছ থেকে জেনে নেওয়া উচিত। ভিটামিন সি যেহেতু রক্তে দ্রবীভূতই হয় না, তাই অতিরিক্ত ভিটামিন সি শরীরে ঢুকে ভেঙে গিয়ে অক্সালেটও তৈরি করবে। আর তখন এই অক্সালেট ক্রিস্টালের আকারে কিডনিতে জমা হতে থাকবে। বেশি ভিটামিন সি খেয়ে ফেললে হজমের সমস্যা হতে পারে।

Related Post

এই বিষয়টি নিয়ে চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী বলেছেন, সাপ্লিমেন্ট না খেয়ে ফল-সব্জি খেয়ে শরীরে ভিটামিন সি’র চাহিদা মেটানো অনেক বেশি নিরাপদ। প্রতিদিন যদি পাতিলেবু কিংবা আমলকি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলেন, তাহলে তা শরীরের পক্ষে খুবই উপকারী। সেইসঙ্গে পাতে রাখুন ক্যাপসিকাম। পেঁপেতেও রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি।

এই চিকিৎসকের কথায়, এক কাপ বাঁধাকপিতে প্রায় ৮০ মিলিগ্রাম পরিমাণ ভিটামিন সি থাকে। ফুলকপি, শালগম খেলেও প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি পাওয়া যায়। এক কাপ কুচোনো ব্রকোলিতে ৮১.২ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি থাকে, একটি ছোট পরিমাণ পাকা পেঁপেতে থাকে ৯৫.৬ মিলিগ্রাম, একটি পেয়ারায় প্রায় ৩৭৫ মিলিগ্রাম, একটি গোটা কমলালেবুতে ৫১ মিলিগ্রাম থাকে। সে কারণে সুষম খাবার থেকেই শরীরে ভিটামিনের চাহিদা পূরণ হয়ে যেতে পারে, তখন আর সাপ্লিমেন্ট প্রয়োজন হবে না। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।

>>>>>>>>>>>>>>

ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।

লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর

২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।

সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-

১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।

২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।

৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।

৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।

৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।

৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।

৭. ত্বকে র‌্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।

রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :

১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।

২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।

এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

অপরদিকে

জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:

১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।

২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।

৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।

৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।

৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।

৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।

৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।

৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org

This post was last modified on জানুয়ারী ৭, ২০২৫ 6:05 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

কাঁধে ব্যথা কী ফুসফুস ক্যান্সা‌রের নীরব লক্ষণ?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কাঁধে ব্যথা হলে বেশিরভাগ মানুষই ভুল ভঙ্গীতে শোয়া, কাঁধে ক্রমাগত…

% দিন আগে

ট্রাম্পের শুল্ক এড়াতে ভারত হতে ৬০০ টন আইফোন ফেরত নিলো অ্যাপল

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত পাল্টা শুল্ক এড়াতে ভারত…

% দিন আগে

থেরাপিতে বিপ্লব ঘটাচ্ছেন জাপানের বিজ্ঞানীরা: পক্ষাঘাত সারবে ও হুইলচেয়ারে বসা রোগীও হাঁটতে পারবেন!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ স্টেম কোষ থেরাপিতে পক্ষাঘাতও সারিয়ে ফেলা সম্ভব হবে। যে কারণে…

% দিন আগে

‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ অভিনেত্রী গুলশান আরার ইন্তেকাল

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ জনপ্রিয় অনলাইন সিরিজ ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ অভিনেত্রী গুলশান আরা আহমেদ ইন্তোকাল…

% দিন আগে

গাজায় নতুন করে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব মিশরের: রাজি হয়নি হামাস

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ হামাসকে নতুন করে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিলো মিশর। সোমবার আল জাজিরা…

% দিন আগে

রাস্তায় ‘ক্যাটওয়াক’ অ্যালিগেটরকে দেখে থেমে গেলো ট্র্যাফিকও!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ফ্যাশন সরণিতে মডেলরা যেভাবে ‘ক্যাটওয়াক’ করে, অ্যালিগেটরের হাঁটার ধরনেও ঠিক…

% দিন আগে