দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নিজে থেকে ওষুধ কিনে খেলে লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশি হয়। ওষুধ না খেয়ে বরং নিয়ম মেনে চলার পরামর্শ দিয়ে থাকেন গবেষকরা।
মুঠো মুঠো ওষুধ খেলেই যে মাইগ্রেন সারবে তা কিন্তু একেবারেই নয়। বরং এমন কিছু দামি ওষুধ বাজারে রয়েছে যা ব্যথা তো সারাতে পারেই না, উল্টো বিভিন্ন রকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণও হয়ে উঠতে পারে। ‘বিএমজে’ বিজ্ঞানপত্রিকায় প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে এমনটিই দাবি করা হয়েছে। গবেষকদের বক্তব্য হলো, চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়ে নিজে থেকে ওষুধ কিনে খেলে লাভের চেয়ে ক্ষতি বেশি হবে। এমন অনেকেই রয়েছেন, যারা ব্যথা শুরু হলে দোকান থেকে ব্যথানাশক ওষুধ কিনে তা খেয়ে ফেলেন। ওষুধের ডোজ় কী পরিমাণ, কখন খেতে হবে তা না জেনেই এটি করেন। ওষুধ না খেয়ে বরং নিয়ম মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন গবেষকরা।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন বিজ্ঞানী রয়েছেন এই গবেষণায়। তারা দাবি করে বলেছেন, ব্যথানাশক সব ওষুধ নিরাপদ এবং সুরক্ষিত নয়। বেশি ডোজ়ে খেয়ে ফেললে নানা রকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও হতে পারে।
মাইগ্রেন হলো ‘নিউরোলজিক্যাল’ একটি রোগ। চিকিৎসকরা বলেছেন, মাথার এক দিকে ব্যথা হয় বেশি। সারাক্ষণই দপদপ করতে থাকে। সাধারণত ৪৮ ঘণ্টা হতে ৭২ ঘণ্টা অবধি এই ব্যথা থাকতে পারে। মাইগ্রেনের ব্যথার অনেক রকম লক্ষণও রয়েছে। সকলের ক্ষেত্রেই তা সমান নয়। কাজেই একই ওষুধ সকলের ক্ষেত্রেই কার্যকরী হবে- তা নাও হতে পারে। তার চেয়ে কিছু নিয়ম মানলে ব্যথা নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে।
কী কী নিয়ম মানতে হবে?
একটি ভিজে তোয়ালে মিনিট পনেরোর মতো ফ্রিজে রাখুন। ব্যথা শুরু হলে ওই ঠাণ্ডা তোয়ালে মাথায় এবং চোখের উপর রেখে দিন। এতে ব্যথা অনেক কমে যাবে।
চন্দন পানি দিয়ে গুলে ব্যথার জায়গায় লাগালেও অনেক সময় আরাম পাওয়া যায়। চন্দন কিন্তু খুব ঠাণ্ডা। এই মিশ্রণের প্রলেপ লাগালে যন্ত্রণা অনেকটা কমে যাবে।
মোবাইল, টিভির পর্দায় মোটেও চোখ রাখা চলবে না। অর্থাৎ চোখকে বিশ্রাম দিতে হবে। কম্পিউটারের সামনে বসে দীর্ঘক্ষণ কাজ করার অভ্যাস থাকলে মাঝে-মধ্যেই উঠুন। চোখে পানি দিন- চোখকে কিছু সময়ের জন্য হলেও বিশ্রাম দিন।
মাইগ্রেন শুরু হলেই বমি বমি ভাব আসে, শরীরে অস্বস্তি শুরু হয়ে যায়। এই সমস্যা দূর করতে আদা চা’য়ে চুমুক দিতে পারেন। আদার অ্যান্টি-ইমফ্ল্যামেটরি গুণও রয়েছে। প্রদাহ কমিয়ে ব্যথা সারাতে পারে এই আদার অ্যান্টি-ইমফ্ল্যামেটরি। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org