দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ড দখল করার ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গাজা উপত্যকা দখল করবে ও সেখানকার মালিক হবে।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে এক প্রেস কনফারেন্সে তিনি এই ঘোষণা দিয়েছেন। প্রয়োজনে গাজা উপত্যকায় মার্কিন সেনা পাঠানোর ঘোষণাও দিয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান এই প্রেসিডেন্ট। -খবর রয়টার্স এবং আনাদোলুর।
তুর্কি বার্তাসংস্থা আনাদোলু বলছে যে, গাজার বাইরে ফিলিস্তিনিদের স্থায়ী পুনর্বাসনের ইঙ্গিত দেওয়ার পরপরই প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মঙ্গলবার বলেছেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গাজা উপত্যকা দখল করবে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র গাজা উপত্যকা দখল করবে ও আমরা এটি নিয়ে কাজও করবো।
ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, আমরা গাজার মালিক হবো ও সেখানকার সব বিপজ্জনক অবিস্ফোরিত বোমা ও অন্য অস্ত্র নির্মূল করবো, ভূখণ্ডটি সমতল করবো ও ধ্বংস হওয়া ভবনগুলো থেকেও আমরা মুক্তি পাবো, এগুলোকে সমতল করবো- সেখানে এমন অর্থনৈতিক উন্নয়ন করবো যা ওই এলাকার মানুষের জন্য প্রচুর চাকরি ও আবাসন সৃষ্টি হবে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গাজা উপত্যকায় সেনা পাঠাবে কিনা জানতে চাইলে তিনি জবাবে বলেন, যদি প্রয়োজন হয়- আমরা তা করবো।
তিনি বলেন, আমরা সেই অংশটিই দখল করতে যাচ্ছি। আমরা এর উন্নয়ন করতে যাচ্ছি, হাজার হাজার কর্মসংস্থানও তৈরি করতে যাচ্ছি, ও এটি এমন কিছু হবে যা সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যই খুব গর্বিত হতে পারে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প আরও বলেছেন, তিনি গাজা উপত্যকায় “দীর্ঘমেয়াদী মালিক” হিসেবেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে দেখেন। মার্কিন রিপাবলিকান এই প্রেসিডেন্ট বলেন, আমি অনেক মাস ধরে এটি খুব ঘনিষ্ঠভাবে অধ্যায়ন করেছি ও আমি একে প্রতিটি ভিন্ন কোণ থেকেই ভেবে দেখেছি। এটি খুব, খুবই বিপজ্জনক জায়গা ও এটি কেবল আরও খারাপই হতে চলেছে।
আমি মনে করি যে, এই ধারণাটি অসাধারণ হয়েছে ও আমি নেতৃত্বের সর্বোচ্চ স্তর হতেই এই কথা বলছি ও যদি যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীলতা এবং শান্তি আনতে সাহায্য করতে পারে, আমরা তা করবো।
অপরদিকে নেতানিয়াহু বলেছেন, আমরা যেমনটা আলোচনা করেছি- মিস্টার প্রেসিডেন্ট, আমাদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে ও আমাদের অঞ্চলে শান্তি আনতে- আমাদের কাজ শেষ করতে হবে। ইসরায়েলকে নিশ্চিত করতে হবে যে, গাজা কখনও ইসরায়েলের জন্য হুমকি হয়ে উঠবে না।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org