দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিয়ের পরই নতুন সংসার শুরু হয়। এই সময়টি নবদম্পতিদের কাছে বেশ রোমাঞ্চকর। জীবনে প্রথমবার সংসারের দায়িত্ব সামলানোর অভিজ্ঞতার কোনও তুলনাও হয় না। ঠিক এই সময়টাতেই কিছু লোক আগ বাড়িয়ে নবদম্পতিকে পরামর্শ দেওয়ার অছিলায় তাদের সংসারে নাক গলাতে শুরু করে দেন।
তালিকায় ঘনিষ্ঠ আত্মীয়, বন্ধুবান্ধব বা প্রতিবেশী যে কেওই হতে পারে। এতো পরামর্শের ভিড়ে কোনটা ঠিক কিংবা কোনটা ভুল, তা বোঝা বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। এইসব অযাচিত পরামর্শে কান দিয়ে অনেকেই অনেক সময় নানা ভুল সিদ্ধান্তও নিয়ে ফেলেন। সকলের কথা শুনুন, তবে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার পূর্বে স্বামী-স্ত্রী নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে নিতে হবে।
সামর্থ্যের বাইরে খরচ
বিয়ের অনুষ্ঠান মানেই বিশাল খরচ। বিয়ের পর উভয়ের পরিবার থেকে পৃথক হয়ে নিজেদের মতো গুছিয়ে নিতে চাইলে খরচ এমনিতেই বেড়েও যায়। এই সময়টিতে দামি ফ্ল্যাট, অন্দরসজ্জা ইত্যাদির ক্ষেত্রে সামর্থ্য অনুযায়ীই খরচ করা উচিত। অথচ আশপাশের লোকেরা এই সবের পিছনে খরচ করার পরামর্শ দিতে থাকেন। যে কারণে লোকের কথা শুনে দেখনদারির ফাঁদে পড়ে রীতিমতো হিমশিম খেতে শুরু করেন নতুন দম্পতিরা। বিশেষজ্ঞ ও অভিজ্ঞদের পরামর্শ, শুরুতেই অত্যাধিক খরচ কখনও করবেন না। নতুন সংসারে আয় ও ব্যয়ের ভারসাম্য থাকাটা অত্যন্ত জরুরি। আয় যদি বেশিও হয় তবে বাড়তি টাকা খরচ না করে সঞ্চয় করায় হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
সন্তান নেওয়ার চাপ সৃষ্টি
বিয়ের কয়েক মাস হতে না হতেই আত্মীয় স্বজনদের কাছ থেকে নবদম্পতিদের উপর দ্রুত সন্তান নেওয়ার একটা চাপ আসতে থাকে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে। সকলেই প্রায় দাবি করেন, স্বামী-স্ত্রীকে সন্তান জন্মানোর দায়িত্ব পালন করলে হবে। সন্তান বড় করার দায়িত্ব নাকি তাদের। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হলো, এইসব কথায় কান দেওয়ার কোনও দরকারও নেই। সন্তান নিতে চাইলে আগে নিজেদের বয়স, স্বাস্থ্যের অবস্থা ও অর্থনৈতিক সক্ষমতা বিবেচনাও করতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা, স্বামী-স্ত্রীকে একে অপরের ইচ্ছা-অনিচ্ছাকে সম্মানও করতে হবে।
পরিবার হতে দূরে
বিয়ের পর পরিস্থিতি বিবেচনা করে অনেকেই পরিবার থেকে আলাদাও থাকতে শুরু করেন। এই সময় অনেকেই আবার পরিবার হতে নবদম্পতিকে একেবারে দূরে একান্তে থাকার পরামর্শও দেন। সেই পরামর্শ মানলে যে একে অন্যের পরিবারের মধ্যে দূরত্ব ক্রমশ বাড়তেই থাকবে, তা নিশ্চয়ই পৃথক করে বলে দিতে হবে না। মনে রাখবেন বিপদে-আপদে মা-বাবা, ভাই-বোনরাই তবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়।
পার্সোনাল স্পেস না রাখার পরামর্শ
এতগুলো বছর একা থাকার পরই হঠাৎ করে কারও সঙ্গে থাকতে শুরু করলে প্রাথমিকভাবে অস্বস্তি হতে পারে। একে অন্যের জীবনব্যবস্থা, চিন্তাধারা, ভালো-মন্দ অভ্যাসের সঙ্গে নবদম্পতিরা যেমনি পরিচিত হন, তেমনি অনেকেই আবার পার্সোনাল স্পেস কিংবা ব্যক্তিগত পরিসরের অভাব বোধ করেন। এই রকম পরিস্থিতিতে একদল মানুষ এগিয়ে এসে নবদম্পতিকে পরামর্শও দিতে শুরু করেন যে, “স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ব্যক্তিগত পরিসর বলে কিছুই হয় না।’ এই ধরনের মানুষকে বেশি পাত্তা দিলেই সংসারে অশান্তি লেগে যায়।
সন্দেহ জাগানোর নানা চেষ্টা
নবদম্পতির মনে একে অন্যের প্রতি সন্দেহ জাগানোর চেষ্টা করে অনেকেই আনন্দ পান। সাবধানবাণীর আড়ালে স্বামী বা স্ত্রীর বিরুদ্ধে উস্কে দেওয়ার প্রবণতা অনেক আত্মীয়, বন্ধুবান্ধব, প্রতিবেশী কিংবা সহকর্মীর মধ্যেই থাকে। তাদের এক তরফা কথা শুনে বা চাপে পড়ে সঙ্গীর উপর নজরদারিও শুরু করে দেন অনেকেই। যে কারণে সংসারে অশান্তি অবসম্ভাবীও হয়ে পড়ে। তাই লোকের কথায় উত্তেজিত না হয়ে নিজেদের মধ্যে খোলাখুলি আলোচনা করাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। তথ্যসূত্র: এই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org