দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শোনা যায় ব্যথানাশক ওষুধ মহিলাদের শরীরে নাকি কম কাজ করে, এমন দাবি করা হয়েছে নানা গবেষণাতে। বলা হচ্ছে যে, একজন পুরুষের ক্রনিক ব্যথা থাকলে তা ওষুধ খেলে সেরেও যেতে পারে। তবে মহিলাদের ক্ষেত্রে তা অতো সহজে হবে না।
মহিলাদের ক্ষেত্রে হয় ব্যথানাশক ওষুধটি কাজই করবে না, অথবা অনেক বেশি ডোজ়ে খাওয়াতে হবে। তাহলে এই বৈষম্য কেনো?
১৯৯০ সাল হতেই বিষয়টি নিয়ে গবেষণা চলছে। ভারতের ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্থ’ জানিয়েছে, ব্যথা কমাতে আইবুপ্রোফেন, কোনও কোনও স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ মহিলাদের কম কাজ করছে। কয়েক রকম ক্রনিক রোগের ব্যথা, মাইগ্রেন, পিঠ-কোমরের ব্যথা একেবারে সারছেই না। একই দাবি করেছে আমেরিকার ‘ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’। তারা জানিয়েছে যে, মহিলাদের মাইগ্রেন, ঋতুস্রাব ও বাত জনিত ব্যথা সারাতে ব্যথানাশক ওষুধ প্রেসক্রাইবই করা হয় না বেশির ভাগ সময়। কারণ হলো অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, চেনা ব্যথানাশক ওষুধগুলো মহিলাদের শরীরে ঠিকমতো কাজ করে না। বেশি ডোজ়ে খাওয়াতে গেলে নানা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও হতে পারে।
২০০০ সালে এই বিষয়টি নিয়ে সমীক্ষা চালায় হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুল। ‘দ্য নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিন’-এ সমীক্ষার ফলাফল নিয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনে গবেষকরা দাবি করেছিলেন, মহিলা এবং পুরুষদের শারীরিক গঠন ভিন্ন। হরমোনের ওঠানামার প্রক্রিয়াও ভিন্ন। তাই যে ব্যথানাশক ওষুধটি পুরুষের শরীরে ভালো কাজ করছে, তা মহিলাদের শরীরে কার্যকরী নাও হতে পারে। এছাড়াও আরও অনেক কারণও রয়েছে।
কী কী সেইসব কারণ?
প্রথমত: ২০১৬ সাল অবধি যে কোনও বৈজ্ঞানিক গবেষণায় পুরুষদের উপরে যাবতীয় পরীক্ষা নিরীক্ষা বেশি করা হতো। কোন ওষুধটি মানুষের শরীরে কাজ করবে ও কোনটি নয়, তা পরীক্ষা করে দেখতে পুরুষরাই হয়ে যেতেন ‘অবজেক্ট’। তাই বেশির ভাগ পুরনো ব্যথাবেদনার ওষুধ এমন ভাবে তৈরি করা হয়, যা পুরুষের শরীরে ঠিকমতো কাজ করতে পারবে।
দ্বিতীয়ত: হরমোনের তারতম্যও এর বড় একটি কারণ। গবেষকরা দাবি করেছেন, মহিলাদের শরীরে যে ইস্ট্রোজেন হরমোন থাকে, তার ভূমিকাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ডিম্বাশয়, অ্যাড্রিনাল গ্রন্থি ও অ্যাডিপোজ় কোষ হতে এই হরমোন তৈরি হয়, যা প্রজননে বড় ভূমিকা রাখে। এই হরমোনটি মহিলাদের হাড়ের গঠনে সাহায্য করে। ইস্ট্রোজেন হরমোনের তারতম্য হলে ব্যথাবেদনা বেড়েও যেতে পারে- আবার অনেক সময় কমেও যেতে পারে। সেটি নির্ভর করে, হরমোন কোথা থেকে এবং কী পরিমাণে ক্ষরিত হচ্ছে। পুরুষদের ক্ষেত্রে বিষয়টি ভিন্ন। পুরুষের শরীরে টেস্টোরস্টেরণ হরমোনের মাত্রা কম থাকে ও এই হরমোন ব্যথাবেদনা সারাতে বড় ভূমিকা রাখে। তাই অনেক সময় পুরুষদের শরীরে ক্রনিক ব্যথা সারাতে টেস্টোস্টেরন থেরাপিও করা হয়ে থাকে।
তৃতীয়ত: মহিলা এবং পুরুষের শরীরে রোগ প্রতিরোধী কোষগুলোর (ইমিউন কোষ) মধ্যেও পার্থক্য রয়েছে বিস্তর। মস্তিষ্কে এক প্রকার ইমিউন কোষ রয়েছে যার নাম ‘মাইক্রোগ্লিয়া’। এর কাজই হলো মস্তিষ্কে প্রদাহ কমানো এবং ব্যথা নাশ করা। পুরুষের শরীরে এই কোষটি কাজ করে। ব্যথানাশক ওষুধ এই কোষটিকে সক্রিয় করে তুলতে পারলে ব্যথার তীব্রতা অনেকটা কমে যায়। তবে মহিলাদের শরীরে এই কাজটি করে টি-কোষ। টি-কোষের সংখ্যা যদি কম থাকে, তাহলে ব্যথা সারতেও দেরি হয়।
এই গবেষণাটি সকলের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য কি-না, তা নিয়ে চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদারের মত হলো, “গবেষণাটি কতো জনের উপর করা হয়েছে সেটি আসল। ব্যথানাশক ওষুধ সব মহিলার শরীরে কম কাজ করবে, এমন কিন্তু নয়। প্রকৃতপক্ষে, অনেক মহিলার ক্ষেত্রে দেখা যায়, স্টেরয়েড কিংবা ওই জাতীয় ওষুধ খেলে তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও হয়। সেই কারণে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ খাওয়া ঠিক নয়। সঠিক ডোজ়ে এবং নিয়ম মেনে ওষুধ না খেলে তা কখনওই ঠিকমতো কাজ করবে না।”
তবে ব্যথাবেদনা পুরুষদের তাড়াতাড়ি সারে ও মহিলাদের কম, এই বিষয়টি নিয় সহমত নন চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী। এই বিষয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করেন এই চিকিৎসক। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org
This post was last modified on মার্চ ১১, ২০২৫ 11:40 পূর্বাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ স্যামসাং সম্প্রতি সুপারফাস্ট কানেক্টিভিটি এবং শক্তিশালী পারফরমেন্সের নতুন স্মার্টফোন গ্যালাক্সি…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডের পর গত শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) একযোগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ফিলিস্তিনের গাজায় সামরিক অভিযান নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে কয়েক…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এক ব্যতিক্রমি নিলাম! ১০০ টন জীবন্ত এক কুমির নিলামের দর…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫ খৃস্টাব্দ, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গরমে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি এড়াতে শুধু পানিই খেতে হবে? তা…