পুষ্টিবিদের অভিমত: গরমের কোন সব্জি খেলে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমে আসবে?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সাধারণত অত্যাধিক পরিমাণে প্রোটিন খেলে, ওজন বাড়লে দেহে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রাও তখন বাড়ে। দেহে অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড যখন শরীর থেকে বের হতে পারে না, তখন সেটি জমা হয় গাঁটে। আর তখন দেখা দেয় প্রস্রাবের সমস্যা। এমনকি, কিডনিতে পাথর তৈরি হওয়ার আশঙ্কাও তখন বাড়িয়ে দেয়।

দেহে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়লে সাধের অনেক খাবারের থেকে অবশ্যই মুখ ফেরাতে হয়। ছুঁয়ে দেখাও বারণ রেড মিট এবং অ্যালকোহল। পুষ্টিবিদ জয়িতা ব্রহ্ম বলেছেন, ‘দেহে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়লে রেড মিট, সামুদ্রিক খাবার, মদ্যপান, জাঙ্ক ফুড পুরোপুরিভাবে এড়িয়ে চলতে হবে। এমনকি, ময়দা-চিনির তৈরি খাবার যতো বেশি এড়িয়ে চলা যায়, ততোই ভালো।’

বর্তমানে গরম পড়ছে। আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে প্রতিদিনকার খাবার পাতে বদল আনতে হবে। এই পরিস্থিতিতে ইউরিক অ্যাসিডে আক্রান্ত রোগীরা আসলে কী ধরনের ডায়েট মেনে চলবেন? এই প্রশ্নের উত্তরে জয়িতা বলেন, ‘যেসব ফল এবং সব্জিতে পানির পরিমাণ বেশি, সেগুলোই ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। গরমের এই সময় তরমুজ, শসা, জামরুল, মুসাম্বি লেবু, পটল, শাক ছাড়াও সব ধরনের ফল এবং সব্জি খাওয়া যায়।’ একইভাবে, গরমে লেবুর পানিও উপকারী।

Related Post

পুষ্টিবিদের সংযোজন হলো, ‘মৌসুমি শাকসব্জি এবং ফল খাওয়ার পাশাপাশি সারা বছর পাতে দানা শস্য রাখতে হবে। এই ধরনের খাবারে ফাইবারও থাকে, যা ইউরিক অ্যাসিডের রোগীদের জন্য বেশ উপযোগী।’ ওটস, বাজরা, রাগি, ব্রাউন রাইসের মতো দানাশস্য স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।

তবে ইউরিক অ্যাসিডের রোগীরা কী টম্যাটো খেতে পারবেন? এ সম্পর্কে জয়িতা জানিয়েছেন, ইউরিক অ্যাসিডের রোগীদের জন্য টম্যাটো উপকারী কি-না, তা নিয়ে একাধিক গবেষণা রয়েছে ও গবেষণাও চলছে। যেহেতু টম্যাটোয় পানির পরিমাণ বেশি ও তাতে ভিটামিন সি রয়েছে, তাই এই সব্জি ইউরিক অ্যাসিডের রোগীরা খেতে পারেন।

শুধু তাই নয়, মূলত টম্যাটো অ্যালকালাইন প্রকৃতির। এই অ্যাসিডিক উপাদান দেহে অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমাতেও সহায়ক। পুষ্টিবিদ জয়িতার বক্তব্য হলো, ‘যদি তাজা টম্যাটো দানা ছাড়া খাওয়া যায়, তাহলে কোনওই ক্ষতি নেই।’ তবে, প্রত্যেক মানুষের শারীরিক অবস্থা ভিন্ন হয়ে থাকে। তাই আপনি টম্যাটো খাবেন কি-না, বা কী ধরনের ডায়েট চার্ট মেনে চলবেন, তা আপনার শারীরিক অবস্থার উপরেই কিন্তু নির্ভর করছে। সেজন্য অবশ্যই চিকিৎসক কিংবা পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিতে হবে। তথ্যসূত্র: এই সময়।

>>>>>>>>>>>>>>

ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।

লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর

২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।

সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-

১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।

২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।

৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।

৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।

৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।

৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।

৭. ত্বকে র‌্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।

রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :

১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।

২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।

এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

অপরদিকে

জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:

১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।

২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।

৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।

৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।

৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।

৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।

৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।

৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org

This post was last modified on মার্চ ২৩, ২০২৫ 12:54 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

শীতে ঠোঁট ফাটা হতে রক্ষা পেতে করণীয়

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শীতকালে বাতাসের আর্দ্রতা কমে যাওয়া এবং ঠাণ্ডা হাওয়ার কারণে মুখের…

% দিন আগে

নাসার রোভার মঙ্গল গ্রহে বজ্রপাতের সম্ভাব্য শব্দ ধারণ করলো

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা পরিচালিত পারসিভিয়ারেন্স রোভার সম্প্রতি…

% দিন আগে

স্বাস্থ্য সচেতন হতে হলে আপনাকে অবশ্যই পেয়ারা খেতে হবে

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ স্বাস্থ্য সচেতন জীবনের অন্যতম শর্ত হলো সঠিক খাবার বেছে নেওয়া।…

% দিন আগে

ভারতের দক্ষিণি সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী রাশমিকা মান্দানার না বলা কথা

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভারতের দক্ষিণি সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী রাশমিকা মান্দানা তার জীবনের অভিজ্ঞতার…

% দিন আগে

যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রির জন্য ‘মেঘে ভাসমান’ বাড়ি!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের এক বাসিন্দা তার বাড়ি বিক্রির বিজ্ঞাপনে লিখেছেন-“ফ্লোটিং…

% দিন আগে

এমন সুন্দর প্রকৃতি বোধহয় আর হতে পারে না

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। রবিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫ খৃস্টাব্দ, ২২ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২…

% দিন আগে