দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সাধারণত জয়েন্ট শক্ত হয়ে হওয়া, জয়েন্ট ফুলে ওঠা বা মারাত্মক ব্যথা এবং যন্ত্রণা -এইসব উপসর্গকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেইনকিলারে কাজ না করলে ঘরোয়া টোটকার সাহায্য নিতে পারেন।
আর্থ্রাইটিস ক্রনিকও অটোইমিউন অসুখ। এই রোগে আক্রান্ত হলে জয়েন্টে ব্যথা-যন্ত্রণা শুরু হয়। বাতের ব্যথা এতোটাই কষ্টকর যে, দৈনন্দিন কাজকর্ম করতে গেলেও সমস্যা হয়। পেইনকিলার খেয়ে বা পেইন রিলিফ জেল লাগিয়েও অনেক সময় সুরাহা পাওয়া যায় না। চিকিৎসকরাও চেষ্টা করেন আর্থ্রাইটিসের উপসর্গ নিয়ন্ত্রণে রাখার, বিশেষত: ব্যথা-যন্ত্রণা কমানোর চেষ্টা করেন।
যেমন জয়েন্ট শক্ত হয়ে হওয়া, জয়েন্ট ফুলে ওঠা কিংবা মারাত্মক ব্যথা এবং যন্ত্রণা -এইসব উপসর্গ নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘরোয়া টোটকারও সাহায্য নিতে পারেন অনায়াসে। বেশ কিছু ভেষজ উপাদানও রয়েছে, যা বাতের ব্যথাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
হলুদ
‘গোল্ডেন’ মশলা বলা হয় হলুদকে। যারমধ্যে থাকা কারকিউমিন যৌগ, দেহে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান হিসেবেও কাজ করে। এটি জয়েন্টের প্রদাহও কমায়। জয়েন্টের ব্যথা-যন্ত্রণা, ফোলা ভাব কমাতে প্রতিদিনের ডায়েটে হলুদ রাখুন। হলুদ মেশানো দুধ, চা ইত্যাদিও খেতে পারেন।
আদা
একাধিক শারীরিক জটিলতা দূর করতে আদা একাই একশো। এই শারীরিক জটিলতার মধ্যে বাতের ব্যথাও একটি। এই ভেষজেও রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান। আর্থ্রাইটিসের কষ্ট কমাতেও পারে আদা। ব্যথা কিংবা ফোলা ভাব, প্রদাহ থেকে মুক্তি দেয় এই আদা। প্রতিদিনকার খাবারে আদা ব্যবহার করুন। এ ছাড়াও গাঁটের উপর আদার তেলও মালিশ করতে পারেন।
অ্যালোভেরা
অ্যালোভেরার মধ্যে আছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান। এই ভেষজ গাঁটের ব্যথা-যন্ত্রণা এবং ফোলা ভাব কমায়। শরীরের যে অংশটিতে যন্ত্রণা হচ্ছে, তার উপর অ্যালোভেরা জেল মালিশও করতে পারেন। তাতে আরাম পাবেন। এ ছাড়াও প্রতিদিন সকালে খালি পেটে অ্যালোভেরার রস পান করতে পারে। এই পানীয় শরীরের ক্ষত নিরাময়েও সাহায্য করে ও ডিটক্সিফিকেশনের কাজও করে।
গ্রিন টি
আবার গ্রিন টি-ও খেতে পারেন। জয়েন্টের প্রদাহ কমাতে গ্রিন টি’য়ের জুড়ি নেই। এই চায়ের মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদানও রয়েছে। বাতের ব্যথা কমানোর পাশাপাশি হাড়ের স্বাস্থ্য উন্নত করে এই পানীয়টি। তথ্যসূত্র: এই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org