ঘাড়ে-গলায় কালচে দাগ না সারলে কোন রোগের লক্ষণ?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেকের দেখা যায় ঘাড়ের কাছে কালচে দাগ। আবার চামড়া কুঁচকে যাওয়া চর্মরোগ নাও হতে পারে। শরীরে কোন রোগ বাসা বাঁধলে এমন লক্ষণ দেখা দিতে পারে?

গলায়, ঘাড়ে কিংবা কনুইতে কালচে দাগ দেখা দেয় অনেকের মধ্যেই। ঘাড়ের কাছে চামড়া কুঁচকে যাওয়ার মতো সমস্যা, সেখানে ফুস্কুড়ি-চুলকানির সমস্যাও হয় অনেক সময়। অনেকেই ভাবেন যে, হয়তো ময়লা জমে কালচে দাগ হয়েছে। কিন্তু তা নয়। এই কালচে দাগ কিছু ক্ষেত্রে চর্মরোগের জন্যও হয়ে থাকে, এছাড়াও লিভারের অসুখ দেখা দিলে তার জন্যও এমন দাগ পড়তে পারে গলায় কিংবা ঘাড়ে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয়, ‘অ্যাকান্থোসিস নিগ্রিকানস’। লিভারে মেদ জমতে থাকলে এমন সমস্যা দেখা দিতে পারে।

পাবমেড থেকে প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে ‘অ্যাকান্থোসিস নিগ্রিকানস’-এর কারণ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন গবেষকরা। সেখানে বলা হয়, রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে বা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ‘ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্ট’ হলে ত্বকের মেলানিন রঞ্জকের তারতম্যও দেখা দেয়। চামড়া কুঁচকে যেতে শুরু করে। টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রেও রোগীর শরীরে এমন লক্ষণ দেখা দেয় অনেক সময়।

Related Post

গবেষকরা জানিয়েছেন, ‘ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স’-এর একটি কারণ হলো লিভারের রোগ। লিভারে মেদ জমতে শুরু করলে রক্তে ইনসুলিনের ক্ষরণও বেড়ে যায়। এরমধ্যে যদি জাঙ্ক ফুড, ভাজাভুজি বেশি খাওয়া হয়, তাহলে মেটাবলিক সিনড্রোমও দেখা দেয়। যে কারণে শরীরে প্রদাহ বাড়তে থাকে। শুধু ফ্যাটি লিভার হলে সেটি কম ক্ষতিকর। তবে তারসঙ্গে যদি প্রদাহ দেখা দেয়, তাহলে ক্ষতি বেশি হয়। কারণ হলো, এর থেকেই পরে ফাইব্রোসিস, সিরোসিসও হতে পারে।

তবে গলায় এমন দাগ দেখা দিলে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যাওয়ারই পরামর্শ দিয়েছেন গবেষকরা। সেইসঙ্গে, জীবনযাপনে কিছু পরিবর্তনও আনতে হবে। শুধু ওষুধের উপর নির্ভর করে থাকলেই চলবে না। প্যাকেটজাত, ভাজাভুজি, চিজ়যুক্ত খাবার, অতিরিক্ত চকোলেট খাওয়াও বন্ধ করতে হবে। এর পরিবর্তে সুষম খাবার গ্রহণ করতে হবে। প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে শাকসব্জি, ফল খাওয়াটা জরুরি। ২টি করে মৌসুমি ফল রাখুন প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায়। আর স্ন্যাক্স খাওয়ার ইচ্ছা হলে, শুকনো কড়াইয়ে নাড়া মুড়ি, চিঁড়া ও মাখনা রাখতে পারেন। চপ-কাটলেট খাওয়া মোটেও চলবে না। স্বাদের জন্যই নয়, স্বাস্থ্যের জন্যও ভালো, এমন খাবার নির্বাচন করতে হবে বুঝে-শুনে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।

>>>>>>>>>>>>>>

ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।

লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর

২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।

সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-

১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।

২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।

৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।

৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।

৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।

৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।

৭. ত্বকে র‌্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।

রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :

১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।

২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।

এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

অপরদিকে

জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:

১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।

২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।

৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।

৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।

৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।

৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।

৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।

৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org

This post was last modified on এপ্রিল ২৩, ২০২৫ 9:25 পূর্বাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

দেশজুড়ে বাংলালিংকের ‘সেফটি অ্যান্ড ওয়েলনেস উইক ২০২৫’ উদ্বোধন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দেশের শীর্ষস্থানীয় ডিজিটাল উদ্ভাবনী অপারেটর বাংলালিংক গতকাল (শনিবার) ঢাকা, চট্টগ্রাম,…

% দিন আগে

দীপিকা ছেলের জন্য সুস্থ হয়ে উঠতে চান

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভারতীয় অভিনেত্রী দীপিকা কক্কর যে কোনো মূল্যেই হোক না কেনো…

% দিন আগে

নাখোশ ইউরোপ: যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিরাপত্তা কৌশল নিয়ে খুশি রাশিয়া

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অনুমোদিত নতুন জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলকে…

% দিন আগে

কানাডায় বরফের নিচে আয়োজন হলো পার্টি!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কানাডার কুইবেকে কিছু তরুণ বরফে জমে যাওয়া হ্রদের নিচে ডুব…

% দিন আগে

বরফে আচ্ছাদিত রাস্তা

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। সোমবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৫ খৃস্টাব্দ, ২৩ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২…

% দিন আগে

শীতে ঠোঁট ফাটা হতে রক্ষা পেতে করণীয়

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শীতকালে বাতাসের আর্দ্রতা কমে যাওয়া এবং ঠাণ্ডা হাওয়ার কারণে মুখের…

% দিন আগে