নতুন গবেষণা: শিম্পাঞ্জি মানুষের মতোই প্রকৌশলবিদ্যার চর্চাও করে!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা অনেকেই জানি শিম্পাঞ্জি বুদ্ধিমান প্রাণী। শিম্পাঞ্জি বেঁচে থাকার জন্য বিভিন্ন সরঞ্জামও তৈরি করতে পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে রীতিমতো মানব প্রকৌশলীর মতোও আচরণ করে এই শিম্পাঞ্জি!

শিম্পাঞ্জি নিজেদের কাজের জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে এমন গাছপালা বেছে নেয়, যা নমনীয় উপকরণ সরবরাহ করে থাকে। তানজানিয়ার গোম্বে স্ট্রিম ন্যাশনাল পার্কে শিম্পাঞ্জিদের দীর্ঘদিন পর্যবেক্ষণ করে এইসব তথ্য জানিয়েছেন গবেষকরা। শিম্পাঞ্জির এই প্রকৌশলচর্চার খবর ‘আইসায়েন্স’ সাময়িকীতেও প্রকাশ করেছেন গবেষকরা।

‘আইসায়েন্স’ সাময়িকীতে প্রকাশিত গবেষণা ফলাফলে বলা হয়, শিম্পাঞ্জি সরঞ্জাম তৈরিতে বিশেষ ধরনের সহজাত প্রকৌশলক্ষমতা ব্যবহার করে থাকে, যা অনেকটাই আদি মানুষের সরঞ্জাম বিবর্তনের প্রতিফলনের মতো। শিম্পাঞ্জি নিজেদের প্রয়োজনে বিভিন্ন ক্ষণস্থায়ী সরঞ্জামও তৈরি করে। সেজন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত দক্ষতা ও প্রকৌশলগত নির্ভুলতা সম্পর্কে ধারণাও রয়েছে শিম্পাঞ্জির। মানবসভ্যতার শুরুতেই এদের প্রযুক্তিগত বিবর্তন কেমন ছিল, সেটি জানতে শিম্পাঞ্জির প্রকৌশলচর্চা নিয়ে কাজ করছেন গবেষকরা।

Related Post

গবেষণার এক ফলাফলে দেখা গেছে, শিম্পাঞ্জি যেসব গাছপালা কখনও ব্যবহার করে না, তা নিয়ে যন্ত্র বানাতেও আগ্রহী নয়। নিজেদের পছন্দের উপকরণ দিয়ে প্রকৌশল চর্চা করে থাকে তারা। গবেষণায় উইপোকা ধরার সময় শিম্পাঞ্জি আসলে কীভাবে কাজ করে, তা নিয়ে বিপুল তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এই বিষয়ে বিজ্ঞানী আলেজান্দ্রা পাস্কুয়াল-গারিডো বলেছেন, ‘প্রথমবারের মতো আমরা শিম্পাঞ্জির প্রকৌশলচর্চা সম্পর্কে বিপুল তথ্য সংগ্রহ করেছি। বন্য শিম্পাঞ্জি উইপোকা ধরার সরঞ্জাম তৈরি করার জন্য নির্দিষ্ট যান্ত্রিক কৌশল ব্যবহার করে সরঞ্জাম তৈরির উপকরণও নির্বাচন করে।’

গবেষকদের তথ্যমতে জানা যায়, সরঞ্জাম ভাগাভাগির মাধ্যমে অর্জিত শিক্ষা পরস্পরের সঙ্গে ভাগাভাগিও করে শিম্পাঞ্জি। শিম্পাঞ্জি সম্ভবত একধরনের লোক পদার্থবিদ্যাও অনুসরণ করে। যার অর্থই হলো শিম্পাঞ্জি বস্তুর বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে সহজাত ধারণা ধারণ করে। এই বিষয়ে বিজ্ঞানী পাস্কুয়াল-গারিডো বলেছেন, ‘বায়োমেকানিকসের সমন্বয়ে গঠিত এই অভিনব পদ্ধতিটি আমাদের শিম্পাঞ্জির সরঞ্জাম নির্মাণের পেছনের জ্ঞানীয় প্রক্রিয়া এবং কার্যকর বৈশিষ্ট্য জানতেও সহায়তা করছে। শিম্পাঞ্জির ওপর এই গবেষণার ফলাফল মানুষ অতীতে কীভাবে সরঞ্জাম ব্যবহারের ক্ষমতা অর্জন করেছিলো, তা জানতে নতুন তথ্যও দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।’ তথ্যসূত্র : এনডিটিভি।

>>>>>>>>>>>>>>

ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।

লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর

২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।

সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-

১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।

২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।

৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।

৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।

৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।

৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।

৭. ত্বকে র‌্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।

রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :

১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।

২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।

এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

অপরদিকে

জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:

১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।

২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।

৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।

৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।

৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।

৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।

৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।

৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org

This post was last modified on মে ৭, ২০২৫ 12:36 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

View Comments

Recent Posts

কানাডায় বরফের নিচে আয়োজন হলো পার্টি!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কানাডার কুইবেকে কিছু তরুণ বরফে জমে যাওয়া হ্রদের নিচে ডুব…

% দিন আগে

বরফে আচ্ছাদিত রাস্তা

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। সোমবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৫ খৃস্টাব্দ, ২৩ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২…

% দিন আগে

শীতে ঠোঁট ফাটা হতে রক্ষা পেতে করণীয়

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শীতকালে বাতাসের আর্দ্রতা কমে যাওয়া এবং ঠাণ্ডা হাওয়ার কারণে মুখের…

% দিন আগে

নাসার রোভার মঙ্গল গ্রহে বজ্রপাতের সম্ভাব্য শব্দ ধারণ করলো

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা পরিচালিত পারসিভিয়ারেন্স রোভার সম্প্রতি…

% দিন আগে

স্বাস্থ্য সচেতন হতে হলে আপনাকে অবশ্যই পেয়ারা খেতে হবে

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ স্বাস্থ্য সচেতন জীবনের অন্যতম শর্ত হলো সঠিক খাবার বেছে নেওয়া।…

% দিন আগে

ভারতের দক্ষিণি সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী রাশমিকা মান্দানার না বলা কথা

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভারতের দক্ষিণি সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী রাশমিকা মান্দানা তার জীবনের অভিজ্ঞতার…

% দিন আগে