দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ঋতু পরিবর্তনের সময় ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে হলে, দিনশেষে বাইরে থেকে বাড়িতে ফিরে গোসল করাটা জরুরি। কিন্তু অফিস থেকে বাড়ি ফিরে ঠাণ্ডা পানি গায়ে ঢালা কী ঠিক?

মে মাসের এই গরমে প্রাণ ওষ্ঠাগত। মাঝে-মধ্যে রাতের দিকে ঝোড়ো হাওয়া বইছে তবে কালেভদ্রে। তার উপর বাস-ট্রেনের গরম তো রয়েছেই। কর্মব্যস্ত দিন শেষে যখন বাড়ি ফিরছেন, শরীরে বিন্দুমাত্রও এনার্জি অবশিষ্ট থাকে না। তবে গায়ে ঠাণ্ডা পানি ঢালার পর তবে খানিকটা স্বস্তিও পাওয়া যায়। এছাড়াও শরীরজুড়ে শুধু ক্লান্তি নয়, একরাশ ধুলোবালি বয়ে আনছেন। ঋতু পরিবর্তনের সময় ভাইরাস সংক্রমণ ঝুঁকি এড়াতে, তাই দিনশেষে বাইরে থেকে বাড়িতে ফিরে গোসল করাটা জরুরি।
তবে ঠাণ্ডা পানিতে নয়। গরম কাল হলেও ঈষদুষ্ণ পানিতে গোসল করা ভালো। এক লহমায় ক্লান্তি কেটে যাওয়ার পাশাপাশি ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি কমে যায়। দেশ-বিদেশের বহু গবেষণা জানাচ্ছে যে, উষ্ণ পানি শারীরবৃত্তীয় নানা রকম কাজ সঠিকভাবে পরিচালনা করতে সাহায্যও করে। শরীর ও মন চাঙ্গা-চনমনে রাখতে সব ঋতুকেই উষ্ণ পানিতে গোসল করার পরামর্শও দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
মানসিক শান্তি
সাধারণভাবে ক্লান্তি শরীরের পাশাপাশি জমা হয় মনেও। তাই দিনের শেষে যাতে মনও ফুরফুরে থাকে, সেজন্য উষ্ণ পানিতে গোসল করলে ভালো। গোটা দিনের ক্লান্তির পাশাপাশি স্ট্রেস হরমোন কিংবা কর্টিসলের মাত্রা কমিয়ে দিতে পারে হালকা গরম পানি। সেইসঙ্গে হ্যাপি হরমোন কিংবা এন্ডোফরফিনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।
দেহঘড়ি সচল থাকে
স্নায়ুর স্বাভাবিক কাজকর্ম সচল রাখার জন্য ঈষদুষ্ণ পানিতে গোসল করা ভীষণভাবে জরুরি। দেহের সার্কাডিয়ান ক্লক সচল রাখতে সাহায্য করে ঈষদুষ্ণ পানি। গরমকাল হলেও একটু উষ্ণ পানিতে গোসল করা প্রয়োজন।
আর্থ্রাইটিসের ব্যথা নিয়ন্ত্রণে
ঈষদুষ্ণ পানিতে গোসল করলে আর্থ্রাইটিসের সমস্যা নিয়ন্ত্রণেও থাকে। ‘আর্থ্রাইটিস ফাউন্ডেশন’-এর তরফ হতে তেমনই জানানো হয়েছে। ‘পেন ম্যানেজমেন্ট টুল’ হিসাবেও ভিষণ কাজ করে গরমপানি।
ঘুম ভালো হয়
যারা অনিদ্রজনিত সমস্যায় ভুগছেন, প্রতিদিন বাড়ি ফিরে আগে ঈষদুষ্ণ পানিতে গোসল করে নিন। এতে দেহের পেশিগুলো শিথিল হবে এবং দেহে রক্ত সঞ্চালনও ভালো হবে। যে কারণে ঘুমও হবে ভালো। তথ্যসূত্র: এই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org