গরমে আখের রস খাওয়া ঠিক নাকি ভুল?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা জানি আখের রস পুষ্টিকর। তবে এটি পুষ্টিকর হলেও এই পানীয়ের কিছু ক্ষতিকর দিকও রয়েছে। এই গরমে আখের রস খেলে সমস্যাতেও পড়তে পারেন।

তাপপ্রবাহের হাত থেকে বাঁচতে ও শারীরিক অস্বস্তি কমাতে এই গরমে ভরসা পানি। চিকিৎসকরা বলেছেন, এই গরমে প্রচুর পরিমাণে পানি খান। সেইসঙ্গে মৌসুমি ফল খাওয়ার পরামর্শও দিয়েছেন। এতে দেহে ইলেক্ট্রোলাইটের ঘাটতি যেমন পূরণ হবে, তেমনি ডিহাইড্রেশনের ঝুঁকিও এড়ানো যাবে। তবে আখের রস খাওয়া যাবে কী? এই প্রশ্ন উঠে আসে।

পুষ্টিবিদ অরিজিৎ দে জানিয়েছেন যে, আখের রস পুষ্টিকর হলেও এই পানীয়ের কিছু ক্ষতিকর দিক রয়েছে। এই গরমে আখের রস খেলে সমস্যাতেও পড়তে পারেন। কী রকম সমস্যা সেগুলো? অরিজিৎ বলেছেন, ‘আখের রসের গ্লাইসেমিক সূচক একটু বেশি, যা রক্তে শর্করার মাত্রা আরও বাড়ায়।’ অর্থাৎ, যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে, তাদের একেবারেই খাওয়া চলবে না আখের রস। অপরদিকে যাদের ডায়াবেটিস নেই তাদের উপর কী প্রভাব ফেলবে এই পানীয়তে? অরিজিতের বক্তব্য হলো, ‘আখের রস রক্তকে পাতলাও করে দিতে পারে। অনেক সময় কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়েও দিতে পারে।’ আখের রস মেটাবলিক ডিসঅর্ডার এবং কার্ডিওভাস্কুলার রোগের ঝুঁকিও বাড়ায়।

Related Post

অত্যাধিক গরমে হিট স্ট্রোক, হিট এগজ়শনের ঝুঁকিও বাড়ে। রোদে বেরিয়ে ক্লান্তি, মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাবের মতো উপসর্গও দেখা দেয়। এর উপর আখের রস খেলে ক্ষতিও হতে পারে। অরিজিৎ বলেছেন, ‘আখের রস পলিকোসানল নামে একটি দীর্ঘ-চেইন অ্যালকোহলও রয়েছে। এটি অনিদ্রা, মাথা ঘোরা, মাথাব্যথা এবং পেট খারাপের সমস্যা ডেকে আনতে পারে।’ সুতরাং, গরমে আখের রস খেলে সমস্যাতেও পড়তে পারেন। তবে এই পানীয় যে একদমই খাবেন না, তা কিন্তু নয়।

আখের রস এক ধরনের প্রাকৃতিক টনিক হিসেবে বিবেচিত হয়। এই রিফ্রেশিং পানীয় গরমে কাজ করার শক্তি জোগাতে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও সাহায্য করে। তবে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আখের রস খেলে কিন্তু চলবে না। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা মেনে চলা জরুরি বলেও জানিয়েছেন পুষ্টিবিদ। তার বক্তব্য হলো, ‘আখের রসই দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। তার উপর খোলা জায়গায় তৈরি আখের রস বেশি জীবাণুও বহন করে। এভাবে আখের রস খেলে পেটের সমস্যা হওয়া খুবই স্বাভাবিক একটি বিষয়।’

মাঝেমধ্যে ১-২ গ্লাস আখের রস খাওয়ায় কোনও রকম ক্ষতি নেই। খালি পেটের বদলে খাবার খাওয়ার ১-২ ঘণ্টা পর আখের রস খেলে ভালো উপকার পাওয়া যায়। সেইসঙ্গে এতে লেবুর রস, আদা এবং পুদিনা পাতা মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যাবে। তথ্যসূত্র: এই সময়।

>>>>>>>>>>>>>>

ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।

লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর

২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।

সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-

১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।

২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।

৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।

৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।

৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।

৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।

৭. ত্বকে র‌্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।

রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :

১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।

২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।

এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

অপরদিকে

জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:

১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।

২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।

৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।

৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।

৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।

৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।

৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।

৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org

This post was last modified on মে ২৬, ২০২৫ 5:54 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

শসার পুষ্টিগুণ জেনে নিন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শসা আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় অন্যতম পরিচিত এবং সহজলভ্য একটি সবজি।…

% দিন আগে

অ্যাপল ও গুগল সাইবার হামলার বিষয়ে ব্যবহারকারীদের সতর্ক করেছে

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অ্যাপল ও গুগল বিশ্বজুড়ে তাদের ব্যবহারকারীদের আবারও নতুন করে সাইবার…

% দিন আগে

টমেটোর গুণাগুণ জেনে নিন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় সবচেয়ে পরিচিত ও সহজলভ্য একটি সবজি হলো…

% দিন আগে

শাহরুখ খান কাজল-টুইঙ্কেলের কাছে ক্ষমা চাইলেন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বলিউডের দুই অভিনেত্রী কাজল-টুইঙ্কেলের ‘টু মাচ উইথ কাজল অ্যান্ড টুইঙ্কেল’…

% দিন আগে

অস্ট্রেলিয়ায় দাবানলে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গত কয়েক দিন ধরে, নিউ সাউথ ওয়েলস (অস্ট্রেলিয়া) এবং দ্বীপ…

% দিন আগে

চিন্তা করেই লেখা যাচ্ছে কম্পিউটারে শব্দ!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ চীনা বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, তারা এমন একটি কৃত্রিম চিপ উদ্ভাবন…

% দিন আগে