বার্ধক্য নাকি পিছিয়ে দেবে ভিটামিন ডি: আয়ু বাড়বে!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বলা হচ্ছে ভিটামিন ডি যৌবন ধরে রাখবে? বার্ধক্যে পৌঁছানোর সময়টাকেও পিছিয়ে দেবে অনেকটাই। সম্প্রতি এমনই দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা।

যৌবনের চাকা যেনো গড়গড়িয়ে চলবে। বার্ধক্যের দোরগোড়ায় আসামাত্রই বয়স যেনো পিছনের দিকে ছুটতে শুরু করবে। বার্ধক্যকে ঠেকিয়ে রাখার এই যে অদম্য বাসনা, এর থেকে ‘অ্যান্টি-এজিং’ নিয়ে গবেষণা চলছে বিশ্ব জুড়ে। মূলত শরীরের বয়স কেবল লুকিয়ে রাখার থেরাপি নয়, বৃদ্ধ হওয়ার সময়টাকে পিছিয়ে দেওয়ার পদ্ধতি নিয়ে গবেষণা করছেন মাস জেনারেল ব্রিগহ্যাম ও জর্জিয়া মেডিক্যাল কলেজের বিজ্ঞানীরা। তারা এবার দাবি করেছেন যে, যদি বয়সের চাকা পিছিয়ে দিতে হয়, তাহলে সহায়ক হতে পারে ভিটামিন ডি। একমাত্র এই ভিটামিনে রয়েছে সেই গুণ।

কীভাবে ভিটামিন ডি বয়স কমাবে?

Related Post

‘আমেরিকান জার্নাল অফ ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন’-এ নতুন গবেষণার একটি খবর প্রকাশিত হয়েছে। চিকিৎসক জোয়ান ম্যানসন জানিয়েছেন যে, ভিটামিন ডি খাবার থেকেই হোক, রোদ থেকে কিংবা সাপ্লিমেন্ট হিসেবে- যেভাবেই হোক শরীরে ঢুকুক, তা যদি নির্ধারিত মাত্রাতে থাকে, তাহলে বার্ধক্যে পৌঁছানোর সময়টাকে আর একটু পিছিয়ে দেওয়াও সম্ভব। এটি এমন একটি ভিটামিন, যা শরীরের অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়াকেও নিয়ন্ত্রণ করে। কেবলমাত্র হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখাই নয়, প্রদাহ কমানো, রোগ প্রতিরোধী কোষগুলোকে সক্রিয় করে তোলা, ক্রনিক রোগের ঝুঁকি কমানোসহ বিভিন্ন কাজ রয়েছে তার। শারীরবৃত্তীয় ক্ষেত্রে এই ভিটামিন রোগভোগের ঝুঁকিও কমায়, কোষের পুনরুজ্জীবনেও এর ভূমিকা বিদ্যমান। শুধু তাই নয়, অস্থিমজ্জায় স্টেম কোষের সক্রিয়তা বাড়াতে কার্যকরী ভূমিকা নেয় ভিটামিন ডি। এই স্টেম কোষ থেকে শরীরের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কোষ তৈরি হয়।

মানুষের শরীরে প্রতি ১০ বছরে হার্ট, লিভার, কিডনি, ফুসফুসের কার্যক্ষমতা ৫-১০ শতাংশ হারে কমতে থাকে। সাধারণত ৩০ বছরের পর হতেই এই ক্ষয়ের প্রক্রিয়া শুরু হয়। তাই দেখা যায় যে, ৫০ বছরে গিয়ে হয়তো শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোর ক্ষমতা প্রায় ২০ শতাংশ কমে গেছে। ৮০ বছরে গিয়ে তাই ৫০ শতাংশ কিংবা তার চেয়েও বেশি কমে যাবে। এর কারণই হলো, কোষের ক্ষয় ক্রমাগতভাবে হয়ে চলেছে।

ভিটামিন ডি এই ক্ষয়ের প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করতে পারবে। কীভাবে হবে? গবেষকরা জানিয়েছেন, কোষের মূল জিনগত উপাদানই হলো ক্রোমোজ়োম। যা দেখতে ‘এক্স’-অক্ষরের মতোই। এর দু’টি বাহু, ছোটটির শেষ প্রান্তকে বলে টেলোমিয়ার। ক্ষয়টা হয় ঠিক এখানেই। কোষ কতো বার বিভাজিত হবে তার হিসেবও রয়েছে। আর যখন বিভাজন প্রক্রিয়া একেবারেই বন্ধ হয়ে যাবে, তখনই কোষের মৃত্যু ঘটবে। এই প্রক্রিয়াকে পিছিয়ে দিতে পারে ভিটামিন ডি। তবে তারজন্য দিনে ২০০০ আইইউ (ইন্টারন্যাশনাল ইউনিট) ভিটামিন ডি৩ শরীরে যেতেই হবে। তাহলেই দেখবেন টেলোমিয়ারের ক্ষয় বন্ধ হয়ে যাবে, কোষের মৃত্যুও তখন দেরিতে হবে। যে কারণে সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কার্যক্ষম থাকবে আরও কয়েক বছর। শরীরের বয়সও তখন বাড়বে না।

তবে এই গবেষণা এখনও চলছেই। এই বিষয়ে স্নায়ুরোগ চিকিৎসক অনিমেষ করের বক্তব্য হলো, কেবল ভিটামিন ডি খেয়েই যে যৌবন ধরে রাখা সম্ভব, তা অবশ্য নয়। শরীরের বয়স ধরে রাখতে হলে শরীরচর্চা, পুষ্টিকর খাওয়া-দাওয়া এবং মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখাটাও জরুরি। কম বয়স থেকে জীবনকে নিয়মে বাঁধলে, শরীর সচল এবং সক্ষমও থাকবে দীর্ঘ সময় ধরে- এমনটিই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।

>>>>>>>>>>>>>>

ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।

লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর

২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।

সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-

১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।

২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।

৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।

৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।

৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।

৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।

৭. ত্বকে র‌্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।

রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :

১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।

২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।

এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

অপরদিকে

জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:

১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।

২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।

৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।

৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।

৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।

৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।

৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।

৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org

This post was last modified on জুন ৪, ২০২৫ 5:04 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

বছরের অন্যতম সেরা সিনেমা ‘ট্রেন ড্রিমস’

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ‘ট্রেন ড্রিমস’ সিনেমার গল্পে জীবন এবং মৃত্যু পাশাপাশি হাঁটে- ঠিক…

% দিন আগে

শীতকালীন ঝড়ে গাজায় চরম মানবিক বিপর্যয়

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শীতকালীন ঝড় এবং অবিরাম বৃষ্টির কারণে ফিলিস্তিনের গাজায় এক ভয়াবহ…

% দিন আগে

হঠাৎ ধরা পড়লো তাসমানিয়ার সৈকতে ওপারফিস!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অস্ট্রেলিয়ার তাসমানিয়ার এক সৈকতে একজন কুকুরচালক হঠাৎ দেখতে পান একটি…

% দিন আগে

গাছিদের রস সংগ্রহের দৃশ্য

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫ খৃস্টাব্দ, ৩ পৌষ ১৪৩২…

% দিন আগে

আপনি কেনো খাবেন ছোট মাছ?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ছোট মাছ যেমন- মলা, কাচকি, পুঁটি, টেংরা, তিনকাটা, খরে ইত্যাদি…

% দিন আগে

এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন পিএলসি-এর ৩০তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন পিএলসি এর ৩০ তম বার্ষিক সাধারণ সভা…

% দিন আগে