দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমাদের দৈনন্দিন জীবনে রান্নার জন্য ব্যবহৃত তেল একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। বর্তমানে বাজারে বিভিন্ন ধরনের ভোজ্য তেল পাওয়া যায়, তবে সবচেয়ে প্রচলিত হলো সোয়াবিন তেল এবং সরিষার তেল।
কোন তেল বেশি স্বাস্থ্যকর– এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই রয়েছে বিতর্ক। বৈজ্ঞানিক গবেষণা এবং পুষ্টিবিদদের মতে, উভয় তেলের কিছু ইতিবাচক দিক রয়েছে, আবার কিছু সীমাবদ্ধতাও রয়েছে।
সোয়াবিন তেলের গুণাগুণ
সোয়াবিন তেলে পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড (PUFA) এবং ওমেগা–৩ ফ্যাটি অ্যাসিড বিদ্যমান, যা হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়ক। এটি কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে এবং হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়তা করে। এছাড়া এতে ভিটামিন–ই থাকে, যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে এবং শরীরের কোষকে ফ্রি-র্যাডিকেলের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। তবে সোয়াবিন তেল বেশি গরম করলে বা বারবার ব্যবহার করলে এতে ট্রান্স–ফ্যাট তৈরি হয়, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ করলে স্থূলতা, ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের ঝুঁকি আরও বাড়তে পারে।
সরিষার তেলের গুণাগুণ
দীর্ঘকাল ধরেই বাংলাদেশ এবং ভারতীয় উপমহাদেশে রান্নার জন্য ব্যবহৃত হয়ে আসছে সরিষার তেল। এতে মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড (MUFA) এবং ওমেগা–৩ ও ওমেগা–৬ ফ্যাটি অ্যাসিড সুষমভাবে বিদ্যমান। এইসব উপাদান রক্তে কোলেস্টেরল কমায়, রক্তসঞ্চালন উন্নত করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস করে। এছাড়া সরিষার তেলে প্রাকৃতিক অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিফাঙ্গাল গুণ রয়েছে, যা হজমে সহায়তা করে এবং প্রদাহ কমাতে কার্যকর। গবেষণায় দেখা গেছে, সরিষার তেল শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও সহায়তা করে। তবে সরিষার তেলে ইরুসিক অ্যাসিড নামে একটি উপাদান থাকে, যা অতিরিক্ত মাত্রায় গ্রহণ করলে হৃদযন্ত্রের ক্ষতিও করতে পারে। যদিও আমাদের দেশে প্রচলিত সরিষার তেলে এই উপাদানের মাত্রা তুলনামূলকভাবে কম।
তুলনামূলক বিশ্লেষণ:
# সোয়াবিন তেল হালকা স্বাদের হওয়ায় ভাজার কাজে বেশ উপযোগী, তবে একই তেল বারবার ব্যবহারের কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ায়।
# সরিষার তেল অল্প পরিমাণে ব্যবহার করলেও স্বাদে ভিন্নতা নিয়ে আসে এবং স্বাস্থ্য উপকারিতাও তুলনামূলকভাবে বেশি।
হৃদরোগ প্রতিরোধ এবং হজমের ক্ষেত্রে সরিষার তেলকে অনেক বিশেষজ্ঞ বেশি কার্যকর মনে করেন। তবে আধুনিক প্রক্রিয়ায় পরিশোধিত সোয়াবিন তেলও সঠিক পরিমাণে গ্রহণ করলে নিরাপদ।
গবেষণা অনুযায়ী জানা যায়, সরিষার তেল পরিমিত মাত্রায় ব্যবহার করলে স্বাস্থ্যকর দিক থেকে সোয়াবিন তেলের চেয়ে এগিয়ে। তবে দীর্ঘদিন ভালো থাকতে হলে এক ধরনের তেল সবসময় ব্যবহার না করে পালাক্রমে বিভিন্ন ভোজ্য তেল যেমন সরিষা, সোয়াবিন, সূর্যমুখী কিংবা অলিভ অয়েল ব্যবহার করা যেতে পারে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো- তেল সীমিত পরিমাণে ব্যবহার করা, কারণ অতিরিক্ত যে কোনো তেলই শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
>>>>>>>>>>>>>>
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org
This post was last modified on সেপ্টেম্বর ৪, ২০২৫ 3:29 অপরাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দেশের শীর্ষস্থানীয় ডিজিটাল উদ্ভাবনী অপারেটর বাংলালিংক গতকাল (শনিবার) ঢাকা, চট্টগ্রাম,…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভারতীয় অভিনেত্রী দীপিকা কক্কর যে কোনো মূল্যেই হোক না কেনো…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অনুমোদিত নতুন জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলকে…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কানাডার কুইবেকে কিছু তরুণ বরফে জমে যাওয়া হ্রদের নিচে ডুব…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। সোমবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৫ খৃস্টাব্দ, ২৩ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শীতকালে বাতাসের আর্দ্রতা কমে যাওয়া এবং ঠাণ্ডা হাওয়ার কারণে মুখের…