দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দেশের সিমেন্ট কারখানাগুলো অর্থনৈতিক কারণে ব্যবসার প্রসার ঘটাতে পারছে না। অর্থনৈতিক মন্দা ও নানা সমস্যার কারণে এমন পরিস্থিতি বলে অনেকেই মনে করছেন।
মানুষ এখন আগের মতো কাঁচা ঘর-বাড়িতে বসবাস করেন না। শুধু শহর নয়, এখন গ্রাম-গঞ্জেও পাকা ঘরের কদর বেড়েছে। অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতার পাশাপাশি আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে গ্রাম-গঞ্জেও। এখন ইটের দালান বানানো গ্রামের মানুষের প্রায় নিত্য নৈমিত্তিকে পরিণত হয়েছে। গ্রামে গেলেই দেখা যায় এমন দৃশ্য। দালানের পর দালান তৈরি হচ্ছে গ্রামে। আগের সেই মাটির ও ছনের ঘর এখন খুব কমই চোখে পড়ে।
এই ইটের ঘর তৈরি করতে মূল যে জিনিসটি না হলেই নয়, তা হলো সিমেন্ট। আর তাই শুধুযে রাজধানী তাই নয় সিমেন্ট কারখানা এখন গড়ে উঠেছে অনেক মফস্বল শহরেও। যেমন গড়ে উঠেছে পাবনার ঈশ্বরদীতে। সেখানে গড়ে উঠেছিল ৭টি সিমেন্ট ফ্যাক্টরি। কিন্তু অর্থনৈতিক সংকটের কারণে এখন চালু আছে মাত্র ৩টি সিমেন্ট ফ্যাক্টরি। এই সিমেন্ট ফ্যাক্টরি সূত্র জানিয়েছে, কিংকার সমস্যার কারণে মূলত তাদের ফ্যাক্টরি বন্ধ করা হয়েছে। কারণ সিমেন্টের দাম অনুযায়ী কিংকার আমদানি করে উৎপাদন খরচ পড়ে অনেক। যে কারণে ব্যাপক লোকসান গুনতে হয়েছে মালিককে।
অপরদিকে চাঁদাবাজি এবং রাজনৈতিক অনিশ্চয়তাসহ নানাবিধ কারণে দেশের অর্থনীতিতে চলছে চরম মন্দা। এর প্রভাবে দেশের সবচেয়ে দ্রুত সম্প্রসারণশীল নির্মাণ শিল্প খাতে চলছে অবিশ্বাস্য স্থবিরতা। ফলে সম্ভাবনাময় সিমেন্ট শিল্প খাতেও অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।
এক পরিসংখ্যানে জানা গেছে, দেশের ৭৪টি সিমেন্ট কারখানার মধ্যে চালু আছে ৪২টি। চাহিদা থাকলেও নানা সমস্যার কারণে চালু কারখানাগুলোও উৎপাদন ক্ষমতার পুরোটা কাজে লাগাতে পারছে না। ফলে ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে এ খাতের হাজার হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ।
সিমেন্ট কারখানা কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে জানা যায়, সম্পূর্ণ বিদেশী কাঁচামাল নির্ভর সিমেন্ট একটি পুঁজিঘন শিল্প। বিশ্ববাজারে প্রযুক্তিগত উন্নতির সাথে তাল মিলিয়ে দেশী কারখানাগুলোয়ও প্রতিনিয়ত নতুন নতুন বিনিয়োগ করতে হয়; কিন্তু উৎপাদন ক্ষমতার পুরোটা কাজে লাগাতে ব্যর্থ হওয়ায় বেশির ভাগ কারখানায়ই নতুন বিনিয়োগ তো দূরের কথা, দৈনন্দিন ব্যয় নির্বাহ করাই কঠিন হয়ে পড়েছে। ফলে ছোট কারখানাগুলো একে একে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ক্ষেত্রবিশেষে বড় কোম্পানিগুলো ছোটগুলোকে কিনে নিচ্ছে নামমাত্র মূল্যে এমন কথাও শোনা গেছে।
আবার চাহিদা কমে যাওয়ায় এবং উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় আয়-ব্যয়ের সামঞ্জস্য বিধানে ব্যর্থ হয়ে অনেক উৎপাদনকারীর পক্ষে সিমেন্টের মান বজায় রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। সিমেন্টের প্রধান উপাদান কিংকারের পরিমাণ কমিয়ে কস ফার্নেয়স স্লেট, লাইমস্টোন ও ফাই অ্যাশের ব্যবহার বাড়িয়ে দিচ্ছে অনেক কোম্পানি। এতে উৎপাদিত পণ্যের মান কমে যাওয়ার পাশাপাশি আশঙ্কা দেখা দিয়েছে এসব সিমেন্ট দিয়ে নির্মিত স্থাপনার স্থায়িত্ব নিয়েও।
জানা যায়, প্রতি টন কিংকারের দাম বর্তমানে ৫০ থেকে ৫২ ডলার। অন্য দিকে ফাই অ্যাশের দাম মাত্র ৮ থেকে ১০ ডলার। বিএসটিআইর পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ ৩৫ শতাংশ ফাই অ্যাশ ব্যবহারের অনুমোদন থাকলেও এতদিন প্রতিযোগী কোম্পানিগুলোর তুলনায় ভালো অবস্থানে থাকতে অনেকে ফাই অ্যাশ, লাইমস্টোন, ফার্নেস স্লেট প্রভৃতি কম দিয়ে অধিক পরিমাণে কিংকার ব্যবহার করতেন। কিন্তু আয়-ব্যয়ের হিসাব মেলাতে ব্যর্থ হয়ে অনেকে বর্তমানে কিংকারের ব্যবহার কমিয়ে দিয়েছে।
এমন অবস্থায় পতিত হয়েছে দেশের বর্তমান সিমেন্ট ফ্যাক্টরিগুলো। এর হাত থেকে সিমেন্ট ফ্যাক্টরিগুলোকে রক্ষা করতে হলে দরকার সরকারি উদ্যোগ। একমাত্র সরকারি উদ্যোগের ফলে দেশের এই সম্ভাবনাময় সিমেন্ট শিল্প আবার মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে। সহজ শর্তে ঋণ প্রদানসহ বিদেশ থেকে কিংকার আমদানি শুল্ক কমানোসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ এই শিল্পকে প্রসার ঘটাতে সাহায্য করবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন।
This post was last modified on জুন ২৪, ২০১৫ 6:23 অপরাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ স্বপ্ন দেখে তা মনে রাখা সত্যিই দুষ্কর। আর তাই রাতের…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ৩০ কার্তিক ১৪৩১…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেকই সুজি খেতে খুবই ভালোবাসেন। তাই তারা প্রতিদিন সুজির পায়েস,…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রথমবারের মতো প্যান ইন্ডিয়ান চলচ্চিত্র বানিয়েছেন নির্মাতা অনন্য মামুন। ঢালিউড…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আপনার যদি প্রতিদিন চিকেন খাওয়ার অভ্যাস থাকে, তাহলে জেনে রাখুন,…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কোটা সংস্কার আন্দোলনের সংগঠন ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’- এর অন্যতম সমন্বয়ক…