দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ চোখ মানবদেহের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, যা আমাদের চারপাশের সৌন্দর্য ও বাস্তবতা দেখার সুযোগ দেয়। তাই চোখের সঠিক যত্ন নেওয়া স্বাস্থ্য রক্ষার এক অপরিহার্য অংশ।
আধুনিক যুগে দীর্ঘ সময় মোবাইল, কম্পিউটার ও টেলিভিশনের স্ক্রিনের সামনে থাকার কারণে চোখের ক্লান্তি, শুষ্কতা এবং দৃষ্টিশক্তি দুর্বল হওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত যত্ন ও সচেতনতা চোখের সুস্থতা বজায় রাখতে বড় ভূমিকা রাখে।
চোখের যত্ন নেওয়ার প্রথম ধাপ হলো সঠিক খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা। গবেষণায় প্রমাণিত, ভিটামিন এ, সি, ই, জিঙ্ক এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড চোখের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত জরুরি। গাজর, পালংশাক, ডিম, মাছ, বাদাম, কমলালেবু এবং টমেটোর মতো খাবার চোখের কোষকে পুষ্টি জোগায় এবং দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে। বিশেষ করে গাজরে থাকা বিটা-ক্যারোটিন রেটিনাকে সুরক্ষা দেয় এবং রাতকানা প্রতিরোধে সহায়তা করে।
চোখের নিয়মিত বিশ্রাম নেওয়াও সমান গুরুত্বপূর্ণ। যারা দীর্ঘ সময় কম্পিউটার কিংবা মোবাইলের দিকে তাকিয়ে কাজ করেন, তাদের “২০-২০-২০ নিয়ম” মেনে চলা উচিত। অর্থাৎ, প্রতি ২০ মিনিট কাজের পর ২০ সেকেন্ডের জন্য অন্তত ২০ ফুট দূরের কোনো কিছুর দিকে তাকানো। এটি চোখের পেশিকে শিথিল রাখে এবং ক্লান্তি দূর করে।
চোখের শুষ্কতা রোধে পর্যাপ্ত পানি পান করা জরুরি। প্রতিদিন অন্তত ৮ গ্লাস পানি পান করলে চোখের ভেতরের তরল ভারসাম্য বজায় থাকে। ধুলাবালি, ধোঁয়া বা দূষিত পরিবেশে গেলে সানগ্লাস ব্যবহার করা উচিত, যা অতিবেগুনি রশ্মি (UV rays) থেকে চোখকে সুরক্ষা দেয়।
গবেষণা বলছে যে, চোখে হাত না দেওয়া বা না ঘষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এতে জীবাণু প্রবেশ করে সংক্রমণ ঘটাতে পারে। চোখে কোনো অস্বাভাবিকতা বা লালচে ভাব দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কৃত্রিম চোখের ড্রপ বা অ্যান্টি-ড্রাই আই সলিউশন ব্যবহার করার আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের অনুমতি নিতে হবে।
চোখের পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে প্রতিদিন মুখ ধোয়ার সময় চোখের চারপাশ পরিষ্কার রাখা উচিত। মেয়েরা চোখের মেকআপ ব্যবহারের পর রাতে অবশ্যই তা পরিষ্কার করে ঘুমাবেন। এ ছাড়াও, পর্যাপ্ত ঘুম চোখের কোষ পুনর্গঠনে সাহায্য করে এবং ডার্ক সার্কেল প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
চোখের যত্ন নেওয়া মানে শুধু বাহ্যিক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নয়, বরং সুষম খাদ্য, পর্যাপ্ত বিশ্রাম, সুরক্ষা ও নিয়মিত পরীক্ষা করানো। নিয়মিত যত্ন এবং সচেতনতা চোখের দীর্ঘস্থায়ী সুস্থতা নিশ্চিত করতে পারে। মনে রাখতে হবে—চোখ একবার ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা সহজে ফিরিয়ে আনা যায় না, তাই আজ থেকেই চোখের যত্নে সচেতন হওয়াই সর্বোত্তম সিদ্ধান্ত।
>>>>>>>>>>>>>>
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org
This post was last modified on অক্টোবর ৭, ২০২৫ 4:12 অপরাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভারতীয় অভিনেত্রী দীপিকা কক্কর যে কোনো মূল্যেই হোক না কেনো…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অনুমোদিত নতুন জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলকে…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কানাডার কুইবেকে কিছু তরুণ বরফে জমে যাওয়া হ্রদের নিচে ডুব…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। সোমবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৫ খৃস্টাব্দ, ২৩ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শীতকালে বাতাসের আর্দ্রতা কমে যাওয়া এবং ঠাণ্ডা হাওয়ার কারণে মুখের…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা পরিচালিত পারসিভিয়ারেন্স রোভার সম্প্রতি…