খুশকি দূর করতে আপনাকে যা যা করতে হবে

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ খুশকি এমন একটি সাধারণ সমস্যা যা প্রায় সব বয়সের মানুষকেই কোনো না কোনো সময় ভোগায়। এটি মূলত মাথার ত্বকে মৃত কোষ জমে সাদা বা ধূসর গুঁড়ার মতো ঝরে পড়ার ফলে দেখা দেয়।

খুশকি শুধু চুলের সৌন্দর্য নষ্ট করে না, বরং চুলকানি, চুল পড়া ও আত্মবিশ্বাসহীনতার মতো সমস্যাও তৈরি করে। তাই এর সঠিক প্রতিকার জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

প্রথমেই জানা দরকার খুশকি হওয়ার কারণ কি। সাধারণত ত্বকের অতিরিক্ত শুষ্কতা, তেল ও ঘামের জমাট, ফাঙ্গাস (Malassezia) নামক ছত্রাকের সংক্রমণ, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, মানসিক চাপ ও অনিয়মিত চুল পরিষ্কার না করা- এসবই খুশকি সৃষ্টির প্রধান কারণ। অনেকে ভুল করে প্রতিদিন অপ্রয়োজনীয় শ্যাম্পু ব্যবহার করেন, যা মাথার ত্বককে আরও শুষ্ক করে তোলে ও খুশকি বাড়ায়।

Related Post

খুশকি দূর করতে সবচেয়ে আগে নিয়মিত চুলের পরিচর্যা জরুরি। সপ্তাহে অন্তত ২ থেকে ৩ বার হালকা গরম পানিতে চুল ধোয়া উচিত। খুশকি নিরোধক মেডিকেটেড শ্যাম্পু ব্যবহার করা যেতে পারে, যেমন সালফার, জিঙ্ক পাইরিথিওন, কেটোকোনাজল বা সেলেনিয়াম সালফাইডযুক্ত শ্যাম্পু। এগুলো ছত্রাক এবং তেল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। তবে খুব বেশি ঘন ঘন ব্যবহার করা উচিত নয়; বরং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবহার করাই উত্তম।

প্রাকৃতিকভাবে খুশকি দূর করতে কিছু ঘরোয়া উপায়ও কার্যকর। যেমন- লেবুর রস এবং নারকেল তেলের মিশ্রণ মাথায় মালিশ করলে খুশকি কমে যায়, কারণ এতে প্রাকৃতিক অ্যান্টিফাঙ্গাল উপাদান রয়েছে। এছাড়া দই এবং অ্যালোভেরা মাথায় লাগিয়ে ২০-৩০ মিনিট পর ধুয়ে ফেললে ত্বক আর্দ্র থাকে এবং খুশকি হ্রাস পায়। মেথি বীজ ভিজিয়ে পেস্ট করে লাগালে চুলের গোড়া মজবুত হয় ও খুশকি কমে।

খাদ্যাভ্যাসের দিকেও মনোযোগ দেওয়া জরুরি। ভিটামিন বি, জিঙ্ক ও ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডসমৃদ্ধ খাবার যেমন মাছ, ডিম, বাদাম ও শাকসবজি খুশকি প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে। পর্যাপ্ত পানি পান করাও জরুরি, কারণ শরীরের পানিশূন্যতা মাথার ত্বককে শুষ্ক করে তোলে।

খুশকি কোনো তুচ্ছ সমস্যা নয়। নিয়মিত চুলের যত্ন, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এবং প্রাকৃতিক পদ্ধতির প্রয়োগের মাধ্যমে এটি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। তবে দীর্ঘদিনেও যদি খুশকি না কমে, তাহলে অবশ্যই চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত। সঠিক যত্নে খুশকিমুক্ত চুল পাওয়া কঠিন কিছু নয়- শুধু নিয়ম মেনে যত্ন নিতে হবে।

>>>>>>>>>>>>>>

ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।

লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-

১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর

২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।

সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-

১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।

২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।

৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।

৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।

৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।

৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।

৭. ত্বকে র‌্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।

রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :

১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।

২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।

এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

অপরদিকে

জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:

১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।

২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।

৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।

৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।

৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।

৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।

৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।

৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org

This post was last modified on অক্টোবর ১৬, ২০২৫ 11:12 পূর্বাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

View Comments

Recent Posts

দেশজুড়ে বাংলালিংকের ‘সেফটি অ্যান্ড ওয়েলনেস উইক ২০২৫’ উদ্বোধন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দেশের শীর্ষস্থানীয় ডিজিটাল উদ্ভাবনী অপারেটর বাংলালিংক গতকাল (শনিবার) ঢাকা, চট্টগ্রাম,…

% দিন আগে

দীপিকা ছেলের জন্য সুস্থ হয়ে উঠতে চান

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভারতীয় অভিনেত্রী দীপিকা কক্কর যে কোনো মূল্যেই হোক না কেনো…

% দিন আগে

নাখোশ ইউরোপ: যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিরাপত্তা কৌশল নিয়ে খুশি রাশিয়া

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অনুমোদিত নতুন জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলকে…

% দিন আগে

কানাডায় বরফের নিচে আয়োজন হলো পার্টি!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কানাডার কুইবেকে কিছু তরুণ বরফে জমে যাওয়া হ্রদের নিচে ডুব…

% দিন আগে

বরফে আচ্ছাদিত রাস্তা

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। সোমবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৫ খৃস্টাব্দ, ২৩ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২…

% দিন আগে

শীতে ঠোঁট ফাটা হতে রক্ষা পেতে করণীয়

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শীতকালে বাতাসের আর্দ্রতা কমে যাওয়া এবং ঠাণ্ডা হাওয়ার কারণে মুখের…

% দিন আগে