টুথব্রাশ একাধারে কয়মাস ব্যবহার করা উচিত

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমাদের দৈনন্দিন জীবনে দাঁতের যত্নের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ হলো টুথব্রাশ। তবে অনেকেই জানেন না, একটি টুথব্রাশ কতদিন ব্যবহার করা উচিত এবং কত সময় পর সেটি বদলানো প্রয়োজন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, নিয়মিত দাঁত পরিষ্কার করলেও পুরোনো টুথব্রাশ ব্যবহারে মুখগহ্বরের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই নির্দিষ্ট সময় পরপর ব্রাশ পরিবর্তন করা অত্যন্ত জরুরি।

দাঁতের চিকিৎসকরা সাধারণত পরামর্শ দেন, একটি টুথব্রাশ তিন মাসের বেশি ব্যবহার না করাই ভালো। তিন মাস পর ব্রাশের ব্রিসল বা কাঁটাগুলো নরম হয়ে যায় এবং বাঁকা বা ছেঁড়া রূপ নেয়। ফলে ব্রাশ ঠিকমতো দাঁতের ফাঁকে জমে থাকা প্লাক বা ব্যাকটেরিয়া পরিষ্কার করতে পারে না। এর ফলে দাঁতে পচন, মাড়ি ফুলে যাওয়া, দুর্গন্ধ এবং ইনফেকশন হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়।

Related Post

তবে ব্রাশ পরিবর্তনের সময়সীমা অনেকাংশে নির্ভর করে ব্যবহারের ধরন ও যত্নের ওপর। কেও যদি দিনে দুইবার জোরে জোরে ব্রাশ করেন, তবে সেটি আরও দ্রুত ক্ষয় হতে পারে। ব্রাশের ব্রিসল ছেঁড়া, বাঁকানো বা রঙ পরিবর্তন হলে সেটি সঙ্গে সঙ্গেই ফেলে দেওয়া উচিত, এমনকি তিন মাস পূর্ণ না হলেও।

এ ছাড়াও রোগের সময় বা পরপরও ব্রাশ পরিবর্তন করা জরুরি। যেমন- সর্দি-জ্বর, ইনফ্লুয়েঞ্জা বা মুখের ইনফেকশন হলে ব্যবহৃত টুথব্রাশে জীবাণু থেকে যেতে পারে। রোগ সেরে গেলেও সেই ব্রাশ ব্যবহার করলে সংক্রমণ পুনরায় হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই এমন অবস্থায় নতুন টুথব্রাশ ব্যবহার করা নিরাপদ।

টুথব্রাশের সঠিক যত্ন নেওয়াও প্রয়োজন। প্রতিবার ব্যবহারের পর ভালোভাবে পানিতে ধুয়ে শুকনো স্থানে উল্টো করে রাখলে ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি কমে। ভেজা অবস্থায় ঢাকনা দিয়ে রাখলে বা বন্ধ জায়গায় রাখলে ব্যাকটেরিয়া দ্রুত বাড়ে, যা মুখের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

চিকিৎসকদের মতে, সঠিক সময় টুথব্রাশ পরিবর্তন করার পাশাপাশি এর মানও গুরুত্বপূর্ণ। ভালো মানের ব্রাশ দাঁতের এনামেল নষ্ট না করে কার্যকরভাবে প্লাক দূর করে। শিশুদের ক্ষেত্রে তাদের বয়স অনুযায়ী নরম ব্রিসলের ব্রাশ ব্যবহার করা উচিত।

আর তাই সংক্ষেপে বলা যায়, একটি টুথব্রাশ সর্বোচ্চ ৩ মাস ব্যবহার করাই নিরাপদ। এর পর সেটি বদলে নতুন ব্রাশ ব্যবহার করলে দাঁত ও মাড়ি দুটোই থাকবে সুস্থ ও পরিষ্কার। নিয়মিত ব্রাশ পরিবর্তনের অভ্যাস দাঁতের ক্ষয়, দুর্গন্ধ ও অন্যান্য মুখগহ্বরজনিত রোগ প্রতিরোধে বড় ভূমিকা রাখে। সঠিক সময়ে একটি ছোট পরিবর্তন আপনার হাসিকে রাখতে পারে আরও উজ্জ্বল এবং আত্মবিশ্বাসী।

>>>>>>>>>>>>>>

ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।

লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-

১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর

২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।

সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-

১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।

২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।

৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।

৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।

৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।

৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।

৭. ত্বকে র‌্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।

রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :

১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।

২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।

এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

অপরদিকে

জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:

১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।

২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।

৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।

৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।

৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।

৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।

৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।

৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org

This post was last modified on নভেম্বর ১০, ২০২৫ 1:53 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

তুরস্কে বিড়াল পেল নাগরিকত্বের স্বীকৃতি!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় “তোমক” নামে এক জনপ্রিয় বিড়ালকে শহরের ‘সম্মানিত…

% দিন আগে

এক অসাধারণ প্রাকৃতিক দৃশ্য

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫ খৃস্টাব্দ, ২৫ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২…

% দিন আগে

শসার পুষ্টিগুণ জেনে নিন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শসা আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় অন্যতম পরিচিত এবং সহজলভ্য একটি সবজি।…

% দিন আগে

অ্যাপল ও গুগল সাইবার হামলার বিষয়ে ব্যবহারকারীদের সতর্ক করেছে

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অ্যাপল ও গুগল বিশ্বজুড়ে তাদের ব্যবহারকারীদের আবারও নতুন করে সাইবার…

% দিন আগে

টমেটোর গুণাগুণ জেনে নিন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় সবচেয়ে পরিচিত ও সহজলভ্য একটি সবজি হলো…

% দিন আগে

শাহরুখ খান কাজল-টুইঙ্কেলের কাছে ক্ষমা চাইলেন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বলিউডের দুই অভিনেত্রী কাজল-টুইঙ্কেলের ‘টু মাচ উইথ কাজল অ্যান্ড টুইঙ্কেল’…

% দিন আগে