দি ঢাকা টাইমস্ বিনোদন ডেস্ক ॥ মান্না দে জীবনের প্রতিটি গানই তাঁর স্ত্রীকে উৎসর্গ করেছিলেন । নিজের দীর্ঘ ও সফলতম ক্যারিয়ারের প্রায় সব গানই স্ত্রী সূলচনা কুমারানকে নিয়েই গেয়েছেন বলে বেঁচে থাকা অবস্থায় জানিয়েছিলেন এই কিংবদন্তি।
ভারতীয় বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম উপমহাদেশের প্রখ্যাত কিংবদন্তি মান্না দে সম্পর্কে নানা স্টোরি করছে। সংবাদ মাধ্যমে জানা যায়, স্ত্রীর প্রতি তার অগাধ ভালবাসার কথা সবারই জানা ছিল। সূলচনাই ছিল গান ও জীবনের সবচেয়ে বড় উৎসাহ। এদিকে মান্না দে-সূলচনা রেখে গেছেন সুমিতা দে ও সুরমা দে নামের দুই কন্যা। তবে আরও একজন গায়িকাকে নিজের তিন নম্বর মেয়ে হিসেবেই দেখতেন মান্না দে। তিনি হলেন ভারতের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী কবিতা কৃষ্ণমূর্তি। তিনি মান্না দে’র পরিবারের একজনই হয়ে উঠেছিলেন। এমনকি মান্না দে’র শেষের সময়গুলোতেও কাছাকাছি ছিলেন কবিতা। মৃত্যুর ২০ দিন আগেও অসুস্থ অবস্থায় চোখ মেলছিলেন না মান্না দে। ঠিক সে সময় কবিতা কৃষ্ণমূর্তি গিয়ে হাজির হন হাসপাতালে। তার কণ্ঠ শুনেই কবিতা বলে ডাক দিয়ে ওঠেন মান্না দে।
সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা যায়, কবিতা ও শ্রেয়া ঘোষালের গান খুব পছন্দ করতেন মান্না দে। তাই অনেক দিক-নির্দেশনাও তাদের দিতেন তিনি। এদিকে গত কয়েক বছর ধরে বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থ থাকলেও ২০১২ সালে স্ত্রীর মৃত্যুর পর একেবারেই ভেঙে পড়েন মান্না দে। সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়, সেই সময়ই বাঁচার আগ্রহ অনেকটাই হারিয়ে ফেলেছিলেন মান্না দে। এ কথাটি তিনি কাছের অনেককেই বলেছিলেন।
পারিবারিক সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদ মাধ্যম বলেছে, নিজের বাসার ড্রইংরুমে বাঁধানো স্ত্রীর ছবির দিকে তাকিয়ে থেকেই বেশির ভাগ সময় পার করেছেন মান্না দে। এরপর ধীরে ধীরে অসুস্থতা বাড়তে থাকে তার। স্ত্রী শোক সহ্য করতে পারেননি তিনি। তারপরও ঘোষণা দিয়েছিলেন শুধুমাত্র স্ত্রীকে উৎসর্গ করে তাকে নিয়ে একটি অ্যালবাম করার। সেই উদ্দেশ্যে কাজও শুরু করেছিলেন। কিন্তু অসুস্থ হওয়ার কারণে সেই কাজ সম্পন্ন করতে পারেননি। কারণ কয়েক মাস হাসপাতালেই কাটিয়েছেন মান্না দে। প্রচণ্ড অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ব্যাঙ্গালোরের ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
অবশ্য কিছুদিন আগে তিনি কিছুটা সুস্থ বোধ করায় হাসপাতাল থেকে তাঁকে বাড়িতে নেওয়া হয়। আর সেখান থেকেই তিনি মৃত্যুর রাতে আবার ভর্তি হন হাসপাতালে। কিন্তু আর ফেরেননি এই কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী মান্না দে। সবাইকে ছেড়ে চলে গেছেন পরলোকে। সঙ্গীত জগতসহ বিশ্বের কোটি কোটি ভক্ত অনুরাগীদের কাঁদিয়ে বিদায় নিয়েছেন মান্না দে। কিন্তু তাঁর সঙ্গীতের এই অনবদ্য সৃষ্টি হাজার বছর ধরে রয়ে যাবে মানুষের হৃদয়ে।