দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শীতের আগমনে আবহাওয়ার পরিবর্তন শুধু তাপমাত্রাই কমায় না, মানুষের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাকেও কিছুটা দুর্বল করে দেয়।
ঠাণ্ডা এবং শুষ্ক বাতাস, ঘন কুয়াশা, কম সূর্যালোক এবং ঘরের ভেতরে মানুষের বেশি ভিড়- সব মিলিয়ে নানা ধরনের রোগজীবাণুর বিস্তার এই সময়ে বেড়ে যায়। ফলে শীতকালে কিছু রোগ অন্য সময়ের তুলনায় অনেক বেশি ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষজ্ঞরা শীতকে সংক্রমণ বৃদ্ধির অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ মৌসুম বলে মনে করেন।
যে রোগের কথা উল্লেখ করা প্রয়োজন তা হলো সর্দি-কাশি ও ফ্লু। এটি শীতের সবচেয়ে সাধারণ সমস্যা। ঠান্ডা বাতাস নাক ও গলার শ্লেষ্মা ঝিল্লিকে শুকিয়ে দেয়, যার ফলে ভাইরাস অনায়াসে শরীরে প্রবেশ করতে পারে। শীতের সময় ঘরের ভেতরে বেশি মানুষের উপস্থিতি থাকায় ফ্লুর জীবাণু দ্রুত ছড়ায়। অনেকের ক্ষেত্রে সামান্য ঠান্ডা সমস্যা থেকে সাইনাসাইটিসেও রূপ নিতে পারে।
নিউমোনিয়া এবং ব্রঙ্কাইটিসের মতো শ্বাসতন্ত্রের রোগ শীতে বাড়ে উল্লেখযোগ্যভাবে। বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক এবং অ্যাজমা রোগীরা এসময়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকেন। শীতের কারণে বায়ুর আর্দ্রতা কমে গিয়ে বাতাসে ধূলিকণা ও দূষণ বেশি ভেসে বেড়ায়, যা ফুসফুসে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়। অনেক সময় ভাইরাসজনিত সংক্রমণের পর ব্যাকটেরিয়া যুক্ত হয়ে অবস্থা আরও জটিল হয়।
অ্যাজমা এবং এলার্জির সমস্যা শীতে তীব্র আকার নিতে পারে। ঠান্ডা বাতাস শ্বাসনালী সংকুচিত করে, ফলে অ্যাজমার উপসর্গ বাড়ে। বাড়ির ভেতর ধূলা, ডাস্ট মাইট এবং পোষা প্রাণীর লোমে এলার্জি আরও বেশি ছড়াতে পারে। তাই অ্যাজমা রোগীদের শীতে বিশেষ সতর্ক থাকতে হয়।
শীতকালে ত্বকের রোগ যেমন একজিমা, স্কিন অ্যালার্জি, খুশকির সমস্যা, ত্বক ফেটে যাওয়া ইত্যাদি বেড়ে যায়। শুষ্ক এবং ঠাণ্ডা আবহাওয়া ত্বকের প্রাকৃতিক তেল কমিয়ে দেয়, যে কারণে ত্বক হয়ে পড়ে রুক্ষ এবং সংবেদনশীল। এই ধরনের ত্বকে জীবাণুর সংক্রমণ সহজেই হতে পারে।
এ ছাড়াও শীতে হৃদরোগের ঝুঁকিও বেড়ে যেতে পারে। তাপমাত্রা কমে গেলে রক্তনালীগুলো সংকুচিত হয়, যে কারণে রক্তচাপ বেড়ে যায়। যাদের আগেই হৃদরোগ বা উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে, তারা শীতে অতিরিক্ত ঝুঁকিতে থাকেন।
শীতের সময় জয়েন্ট পেইন বা বাতের ব্যথা বাড়ে বলে অনেক রোগী অভিযোগ করেন। ঠাণ্ডা পরিবেশে শরীরের রক্তসঞ্চালন হ্রাস পাওয়ায় জয়েন্টগুলো কাঠিন্য অনুভব করে এবং ব্যথা বেশি হয়।
শীতের এসব রোগ থেকে সুরক্ষার জন্য প্রয়োজন কিছু সচেতনতা- গরম কাপড় ব্যবহার, পুষ্টিকর খাবার খাওয়া, পর্যাপ্ত পানি পান, ভিড় এড়িয়ে চলা ও প্রয়োজন অনুযায়ী মাস্ক ব্যবহার। শীত উপভোগের পাশাপাশি সামান্য সতর্কতাই পারে আপনাকে রাখবে সুস্থ এবং সুরক্ষিত।
>>>>>>>>>>>>>>
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org
This post was last modified on ডিসেম্বর ৩, ২০২৫ 4:53 অপরাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। সোমবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৫ খৃস্টাব্দ, ২৩ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শীতকালে বাতাসের আর্দ্রতা কমে যাওয়া এবং ঠাণ্ডা হাওয়ার কারণে মুখের…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা পরিচালিত পারসিভিয়ারেন্স রোভার সম্প্রতি…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ স্বাস্থ্য সচেতন জীবনের অন্যতম শর্ত হলো সঠিক খাবার বেছে নেওয়া।…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভারতের দক্ষিণি সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী রাশমিকা মান্দানা তার জীবনের অভিজ্ঞতার…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের এক বাসিন্দা তার বাড়ি বিক্রির বিজ্ঞাপনে লিখেছেন-“ফ্লোটিং…