শীতে হাঁচি–কাশি থেকে রেহাই পেতে যা করবেন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শীতের শুরুতেই অনেকের সবচেয়ে সাধারণ স্বাস্থ্যসমস্যায় হলো হাঁচি-কাশি। তাপমাত্রা কমে গেলে পরিবেশে ধুলাবালির পরিমাণও তখন বাড়ে, বাতাস শুষ্ক হয়ে ওঠে ও সর্দিজ্বরজনিত ভাইরাস সক্রিয় হয়ে পড়ে।

যে কারনে শিশু থেকে বয়স্ক- সব বয়সী মানুষেরই হাঁচি-কাশি, নাক দিয়ে পানি পড়া, গলা ব্যথা কিংবা সর্দিজ্বর দেখা যায়। তবে কিছু সহজ নিয়ম মেনে চললে শীতের এই বিরক্তিকর সমস্যা থেকে সহজেই রেহাই পাওয়া সম্ভব।

আপনাকে প্রথমেই রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর দিকেই নজর দিতে হবে। শীতে শরীরের ভিটামিন-সি’র ঘাটতি দেখা দিলে সর্দিকাশির ঝুঁকি বাড়ে। তাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় আমলকি, কমলা, লেবু, পেয়ারা, টমেটো ও শাকসবজি রাখা জরুরি। পাশাপাশি পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করলে গলা এবং নাকের শুষ্কতা কমে, ভাইরাস জমাট বাঁধার সুযোগও কমে যায়। অনেকেই শীতে পানি কম পান করেন, যা ঠান্ডাজনিত সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে দেয়।

Related Post

শীতে গরম পোশাক পরা এবং শরীর উষ্ণ রাখা আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ করণীয়। বিশেষ করে বাইরে বের হওয়ার সময় মাথা, নাক এবং কান ঢেকে রাখা উচিত। ঠান্ডা বাতাস সরাসরি শরীরে লাগলে নাক-গলার শ্লেষ্মা ঝিল্লি শুকিয়ে গিয়ে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। ঘরে বা অফিসে খুব বেশি ঠান্ডা এসি ব্যবহার করাও এড়িয়ে চলা উচিত।

হাঁচি-কাশি প্রতিরোধে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঘরবাড়িতে ধুলাবালি জমতে না দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। রুম পরিষ্কার রাখা, বিছানার চাদর নিয়মিত ধোয়া, কার্পেট বা পর্দা পরিষ্কার রাখা জরুরি। বাইরে থেকে বাড়ি ফিরেই হাত-মুখ সাবান দিয়ে ধুয়ে নেওয়া উচিত। কারণ ভাইরাস সবচেয়ে বেশি ছড়ায় হাতের মাধ্যমে। গণপরিবহন বা জনসমাগমস্থলে গেলে নিয়মিত হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা ভালো।

গরম পানি বা ভাপ নেওয়া শীতের কাশি-সর্দিতে খুবই কার্যকর। নাক বন্ধ বা গলা ব্যথা হলে দিনে ২–৩ বার গরম পানির ভাপ নিলে তাৎক্ষণিক আরাম পাওয়া যায়। কাশির সমস্যা হলে মধু, আদা এবং লেবুর গরম চা উপকার দিতে পারে। তবে শিশুদের ক্ষেত্রে মধু দেওয়ার আগে অবশ্যই বয়স বিবেচনা করতে হবে।

অতিরিক্ত হাঁচি-কাশি দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকলে তা এড়িয়ে না গিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। অনেক সময় অ্যালার্জি, ব্রংকাইটিস বা অন্য কোনো শ্বাসতন্ত্রের সমস্যার কারণেও এই ধরনের উপসর্গ দেখা দিতে পারে। তাই সঠিক যত্ন এবং সচেতনতা থাকলে শীতের হাঁচি-কাশির ঝামেলা থেকে সহজেই মুক্ত থাকা সম্ভব হবে।

>>>>>>>>>>>>>>

ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।

লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-

১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর

২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।

সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-

১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।

২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।

৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।

৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।

৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।

৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।

৭. ত্বকে র‌্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।

রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :

১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।

২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।

এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

অপরদিকে

জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:

১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।

২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।

৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।

৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।

৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।

৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।

৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।

৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org

This post was last modified on ডিসেম্বর ৮, ২০২৫ 5:03 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ও গণভোট ১২ ফেব্রুয়ারি

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আাজ (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ…

% দিন আগে

তেল দিয়ে তৈরি ভাজা–পোড়া এড়িয়ে চলবেন কেনো?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় ভাজা–পোড়া খাবারের উপস্থিতি খুবই সাধারণ। পেঁয়াজু, বেগুনি,…

% দিন আগে

শুটিংয়ে দগ্ধ আরিফিন শুভ এখন ভালো আছেন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ হঠাৎ করে কিছুদিন আগেই খবর ছড়িয়েছিল, নতুন সিনেমার শুটিংয়ে অগ্নিদগ্ধ…

% দিন আগে

খাদ্যদ্রব্যে রাসায়নিক ব্যবহার: বন্ধ্যাত্ব বাড়াসহ বিশ্ব জুড়ে ভয়াবহ ঝুঁকিতে মানবস্বাস্থ্য

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ রাসায়নিক ব্যবহার নিয়ে গবেষণাটি করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন…

% দিন আগে

ফরাসি মহিলা ও তার ঘুমন্ত বিড়ালের কারণে জরিমানা

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এমন খবর শুনলে সত্যিই আজব মনে হয় কিন্তু বাস্তবে তাই…

% দিন আগে

সূর্যদয়ের দৃশ্য ও মনের অনুভূতি

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫ খৃস্টাব্দ, ২৬ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২…

% দিন আগে