ঢাকা টাইমস্ রিপোর্ট ॥ দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন ক্রমশ কঠিন আকার ধারণ করছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন বাংলাদেশ সফরের পর যে আশার আলো দেখা গিয়েছিল তাও কতটা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে সন্দেহ রয়েছে।
কারণ আবারও রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে চার্জসিট দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে গাড়ি পোড়ানোর মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ১৮ দলের ৪৫ নেতাকর্মীকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেছে পুলিশ। একই সঙ্গে পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেছে। ১০ মে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক নুরুল আমিন ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে এ অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ১৩ মে মামলার ধার্য তারিখে অভিযোগপত্রটি আনুুষ্ঠানিকভাবে উপস্থাপন করা হবে। ওইদিন পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। এ মামলার অভিযুক্তদের আগাম জামিন প্রশ্নে হাইকোর্টের বিভক্ত আদেশের ওপর শুনানি গ্রহণের জন্য ১০ মে বিকালে প্রধান বিচারপতি তৃতীয় বিচারপতির বেঞ্চ গঠন করে দিয়েছেন। বিচারপতি মোহাম্মদ আনোয়ার উল হকের নেতৃত্বাধীন একক বেঞ্চ ওই দ্বিধাবিভক্ত আদেশের বিষয়টির ওপর শুনানি গ্রহণ করবেন। ১৩ মে তৃতীয় বেঞ্চে শুনানি হতে পারে। তৃতীয় বেঞ্চে বিষয়টির নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এ মামলার আসামিরা যে অবস্থায় আছেন সেভাবে থাকবেন বলে জানিয়েছেন সরকারের অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এমকে রহমান ও অভিযুক্তদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন।
অপর দিকে দেশের রাজনৈতিক এই পরিস্থিতিতে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা বলেছেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে সংলাপ, সমঝোতা ও সমাধান অনেক বেশি জরুরি। পাশাপাশি দুই নেত্রীকে সংঘাতের পথ পরিহার করে সহনশীলতার পথে হাঁটার পরামর্শও দিয়েছেন তারা। বক্তারা বলেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও তেমন কোন অগ্রগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে না বলে দেশে বর্তমানে খুন রাহাজানি গুম সন্ত্রাস বেড়েই চলেছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বর্তমানে বড় একটি সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে। আর এ সমস্যার কারণে সরকার ও বিরোধী দলের মাঝে দ্বন্দ্ব-সংঘাত লেগে আছে। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের কোন একটি দল একদিন ধ্বংস হয়ে যাবে। সরকার ও বিরোধী দলের দ্বন্দ্ব-সংঘাতে দেশের নিরীহ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলেও জানান বৈঠকের বক্তারা। দেশের রাজনীতি নিয়ে চলমান উদ্বেগ বা সংকট এবং প্রধান দুই দলের মধ্যে বিদ্যমান দূরত্ব কমাতে নাগরিক সমাজকে এগিয়ে আসার পরামর্শ দিয়ে বক্তারা বলেন, এসব সমস্যা নিরসনের জন্য দেশের নাগরিক শক্তিকে জাগিয়ে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে।
সংগঠনের সহ-সভাপতি এম হাফিজ উদ্দিন খানের সভাপতিত্বে ১০ মে সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে অনুষ্ঠিত ‘চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও নাগরিক উদ্বেগ’ শীর্ষক এ গোলটেবিল বৈঠকে অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন এএসএম শাহজাহান, অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহম্মেদ, অধ্যাপক ড. অজয় রায়, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন, আবুল হাসান চৌধুরী, অধ্যাপক আবদুল মান্নান, আলী ইমাম মজুমদার, বদিউর রহমান, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, এ আকরাম, মাহমুদুর রহমান মান্না, অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, ড. পিয়াস করিম, হুমায়ুন কবির হিরু, অধ্যাপক আসিফ নজরুল, নুরুল হক মজুমদার, অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম চৌধুরী বাবুল, মেহের ই খুদা, জাকির হোসেন, ইঞ্জিনিয়ার মুসবাহ আলীম, অধ্যাপক কামাল আতাউর রহমান, সাংবাদিক মুনির হায়দার প্রমুখ।
গোলটেবিল বৈঠকের বক্তারা আরও বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে সুপথে না আনতে পারলে কখনও সমাজ পরিবর্তন করা যাবে না। প্রধান দুই দল যদি সংকট নিরসনে দায়িত্ব গ্রহণ না করে, তবে এ দায়িত্ব নাগরিক সমাজকেই গ্রহণ করতে হবে। প্রধান দুই দলের অসহনশীলতার কারণে দেশে তৃতীয় শক্তির আগমন ঘটতে পারে বলে ধারণা করছেন অনুষ্ঠানের আলোচকরা। সরকারের মাঝে আত্মসমালোচনা নেই বলে দিন দিন প্রতিবাদের ভাষা সংকুচিত হয়ে আসছে বলেও মনে করেন তারা।
মূল প্রবন্ধে অধ্যাপক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আমাদের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হয়ে উঠছে। বহুদিন থেকেই আমাদের রাজনৈতিক অঙ্গনে অসহিষ্ণুতা ও সংঘাত চলে আসছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দলের নেত্রী পরস্পরের ছায়া পর্যন্ত মাড়ান না। তিনি বলেন, সংঘাতের রাজনীতির পরিণতি হিসেবে অতীতে কিছু রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হলেও, গত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে আহসান উল্লাহ মাস্টার, শাহ এএমএস কিবরিয়া প্রমুখের হত্যার মাধ্যমে এ গর্হিত কর্মে যেন নতুন মাত্রা যুক্ত হয়। ২৫ জুন ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের কমিশনার ও বিএনপি নেতা চৌধুরী আলমের গুম ও তাকে আজ পর্যন্ত খুঁজে না পাওয়া অতীতের সহিংস রাজনীতির পুনরাবৃত্তিই ঘটিয়েছে। প্রবন্ধ থেকে উল্লেখ করে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, শুধু এপ্রিল মাসেই রাজনৈতিক সহিংসতায় সারাদেশে ২৪ জন নিহত ও দুই হাজার ৫২৮ জন আহত হয়েছে। ১৭ এপ্রিল ইলিয়াস আলী ও তার গাড়িচালকের রহস্যজনক নিখোঁজের ঘটনাটি দেশব্যাপী আলোচনা-সমালোচনার ঝড় তুলেছে। ‘আইন ও সালিশ কেন্দ্রে’র তথ্যানুযায়ী, ২০১০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০ এপ্রিল ২০১২ পর্যন্ত ২৭ মাস ১৯ দিনে সারাদেশে ১০০ ব্যক্তি আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে অপহরণের শিকার হয়েছে বলেও লিখিত বক্তব্যে জানান বদিউল আলম মজুমদার।
সমাজবিজ্ঞানী অজয় রায় বলেন, কেউ যদি মনে করেন রাজনৈতিক দল দিয়ে কিছু হবে না- এ ভাবনাটা ঠিক নয়। ব্যর্থ রাষ্ট্রের পরিস্থিতি বাংলাদেশে নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি। রাজনীতি ও সংস্কৃতিতে দুর্নীতি প্রশ্রয় পেয়েছে। এ ব্যাপারে সুশীল সমাজের চিন্তার কথাগুলো জনগণকে বলতে হবে। জনগণের কথাগুলো রাজনৈতিক দলগুলো যেন শুনতে বাধ্য হয় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে হবে বলেও মনে করেন তিনি।
আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, যেখানে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন ও ভারতের অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখার্জির কথা চলে না, সেখানে জনগণের কথায় কাজ চলে। তিনি নাগরিক শক্তিকে জাগিয়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে বলেন, নাগরিক শক্তিকে গড়ে তুলতে হবে। নাগরিক সমাবেশ ঘটাতে হবে। তখন নাগরিক রায় বলবে, আমরা তোমাদের ঝগড়া চাই না।
সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, যতদিন বাংলাদেশের রাজনীতিতে সংখ্যাগরিষ্ঠতার পদ্ধতি বহাল থাকবে, ততদিন দুই দলই থাকবে। তৃতীয় দল আসবে না। এজন্য প্রয়োজন ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ। তিনি বলেন, আমাদের দুই দল নিয়েই থাকতে হবে। তাই তাদের নিয়ে কিভাবে ভালো থাকা যায় সে পথ বের করতে হবে। এজন্য প্রধান দুই দলকে সংলাপে বসার আহ্বান জানান তিনি।
এহেন পরিস্থিতিতে দেশের নাগরিকদের দায়িত্ব রয়েছে সরকার ও বিরোধীদল উভয়কে সংলাপে বসাতে বাধ্য করা। সে দায়িত্ব থেকে সরে আসার অর্থ দাঁড়াবে দেশে সংঘাতময় পরিস্থিতি আরও ঘনিভূত হওয়া। তাই সকলকে এগিয়ে আসতে হবে সংকট উত্তরণের পথ বের করতে। কারণ হত্যা-গুম সহ নানা ধরণের কর্মকাণ্ডসহ দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বর্তমানে এমন এক জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে যে সংঘাত অনিবার্য। তাছাড়া তত্ত্বাবধায়ক ইস্যুটিও দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রধান বিষয়। সেটিও সময় থাকতে সরকারি দলকেই ভাবতে হবে।
This post was last modified on মে ১১, ২০১২ 3:17 অপরাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেকই সুজি খেতে খুবই ভালোবাসেন। তাই তারা প্রতিদিন সুজির পায়েস,…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রথমবারের মতো প্যান ইন্ডিয়ান চলচ্চিত্র বানিয়েছেন নির্মাতা অনন্য মামুন। ঢালিউড…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আপনার যদি প্রতিদিন চিকেন খাওয়ার অভ্যাস থাকে, তাহলে জেনে রাখুন,…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কোটা সংস্কার আন্দোলনের সংগঠন ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’- এর অন্যতম সমন্বয়ক…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নবনিযুক্ত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারণায় প্রতিশ্রুতি দেন…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অবশেষে গত ৩১ বছর ধরে চলা ‘গোল্ডেন আউল’ বিতর্কের অবসান…
View Comments
|I’m not that much of a internet reader to be honest but your sites really nice, keep it up! I'll go ahead and bookmark your site to come back down the road. All the best
|Thanks for sharing your ideas. I'd personally also like to say that video games have been at any time evolving. Better technology and enhancements have aided create reasonable and fun games. These types of entertainment games were not actually sensible when the real concept was first of all being tried. Just like other areas of know-how, video games way too have had to develop by many years. This itself is testimony on the fast development of video games.
I have been browsing online more than 3 hours today, but I never found any interesting article like yours. It's pretty price sufficient for me. Personally, if all webmasters and bloggers made just right content as you did, the net will probably be a lot more helpful than ever before. "Learn to see in another's calamity the ills which you should avoid." by Publilius Syrus.
that’s really good to know, thx
It's actually a nice and useful piece of info. I'm glad that you shared this useful information with us. Please keep us up to date like this. Thank you for sharing.
|It’s actually a cool and helpful piece of information. I’m satisfied that you shared this helpful info with us. Please stay us up to date like this. Thank you for sharing.
I have recently started a web site, the info you provide on this web site has helped me greatly. Thanks for all of your time & work.
Thanks on behalf of sharing superb in order. Your web-site is fantastically cool. I am impressed by the info that you have taking place this site. It reveals how nicely you perceive this subject. Bookmarked this web summon, will get nearer back representing more articles.
I have the benefit of the efforts you have situate in this, gratitude for all the great blog posts.
|That is really attention-grabbing, You are an overly skilled blogger. I've joined your rss feed and stay up for in search of extra of your excellent post. Also, I have shared your website in my social networks!