দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভক্ত সেজে এর আগেও এসেছিল খুনিরা। এমন কথা বলেছেন, মৃত লুৎফর রহমান ফারুকের পরিবার। তবে পুলিশ এখনও কোন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পায়নি।
ঘটনার দিনের বিবরণ দিয়েছেন মৃত লুৎফর রহমান ফারুকের পরিবার। তারা বলেছেন, মাগরিবের নামাজ আদায়ের সময় ঘাতকরা ফিস ফিস করে কথা বলায় লুৎফর রহমান ফারুক ক্ষুব্ধ হন। এ সময় তিনি ধমক দিলে ঘাতকদের একজন নামাজ শেষ না করেই উঠে পড়েন। নামাজ শেষ হওয়ার পরপরই শুরু হয় অপারেশন। শনিবারের ওই ঘটনায় বেঁচে যাওয়া স্বজনদের কাছ থেকে গোয়েন্দারা এসব তথ্য পেয়েছেন।
সংবাদ মাধ্যমকে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলেছেন, ইমাম মাহদির প্রধান সেনাপতি দাবিদার লুৎফর রহমান ফারুকসহ তার অনুসারীদের হত্যার উদ্দেশে আগেও কয়েকবার ওই বাসায় এসেছিল খুনিরা। তবে শনিবারের আগে তাদের সেসব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। বহু মুরিদের আসা-যাওয়ার কারণে হয়তো আগের টার্গেট মিস হয়েছে এমন ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনার দিন হত্যাকাণ্ডের অন্তত এক ঘণ্টা আগে খুনিরা ওই বাসায় আসে। কথিত পীরের সঙ্গে ধর্ম নিয়ে আলোচনা শেষে একসঙ্গে নামাজও পড়ে ঘাতকরা। পরে মিশন শেষে নির্বিঘ্নে পালিয়ে যায় তারা।
এদিকে গত ৩ দিনেও চাঞ্চল্যকর ৬ হত্যাকাণ্ডের কারণ ও খুনিদের সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেনি তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, তিনটি কারণকে সামনে রেখে তারা তদন্ত কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। তদন্তে ধর্মীয় মতবাদকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। কারণ লুৎফর রহমান ফারুক প্রচলিত ইসলাম ধর্মের বিরোধিতা করতেন। তার ধর্মবিরোধী কিছু বক্তব্য বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে দেখানো হয়েছে গত দু’দিন ধরে। তিনি ঈমান মাহদির প্রধান সেনাপতি ছিলেন টিভি সাক্ষাৎকারেও তা বলেছিলেন। ওই সাক্ষাৎকারে তিনি ৩ বার গ্রেফতার হওয়ার কথাও স্বীকার করেন।
এদিকে এ খুনের ঘটনায় অন্তত ৭টি উগ্রপন্থী দলের ওপর গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করেছে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। নিহত লুৎফর রহমান ফারুকের ভাগ্যক্রমে বেঁচে যাওয়া ছেলে আবদুল্লাহ আল ফারুক বলেন, আমরা নির্দিষ্টভাবে কাওকে সন্দেহ করতে পারছি না। তবে আমার বাবা জঙ্গিবাদ ও উগ্রপন্থীদের বিরুদ্ধে কথা বলতেন। তারাই এ ঘটনা ঘটাতে পারে।
একটি পত্রিকার অনলাইন খবরে বলা হয়েছে, ২০০৭ সালে গ্রেফতার হওয়ার পর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকার সময় হরকাতুল জিহাদের (হুজি) শীর্ষ নেতা মুফতি হান্নানের (্মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত) সঙ্গে ইসলাম ধর্ম নিয়ে লুৎফর রহমান ফারুকের বিরোধ বাধে। লুৎফর রহমানের ভক্ত যাত্রাবাড়ীর কাঁচামাল ব্যবসায়ী আজিজুর রহমান বাবুলের উদ্বৃতি দিয়ে ওই খবরে আরও বলা হয়, লুৎফর রহমান ২০০৭ সালে গেণ্ডারিয়ার সাধনার গলিতে থাকার সময় ৯ ভক্তসহ পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন। তাদের মধ্যে আজিজুর রহমান বাবুলও ছিলেন। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ৪ মাস ১৯ দিন ছিলেন তারা। সে সময় একই জায়গায় থাকতেন হুজির শীর্ষ নেতা মুফতি হান্নান। উক্ত বাবুল আরও বলেন, মুফতি হান্নানের ধর্মীয় মতবাদ আর লুৎফর রহমানের ধর্মীয় মতবাদ ভিন্ন। কার মতবাদ সঠিক কার বেঠিক তা নিয়ে মুফতি হান্নানের সঙ্গে তুমুল কথা কাটাকাটি হয় লুৎফর রহমানের। অবশ্য কিছু দিন পর মুফতি হান্নানের সঙ্গে লুৎফর রহমানের সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেছেন, সম্ভাব্য তিনটি কারণ- ধর্মীয় মতবাদ, পারিবারিক বা ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব ও সম্পত্তি বা ডাকাতিকে সামনে রেখে হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করছে ডিবির তিনটি টিম। এখনও পর্যন্ত খুনিদের সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে হত্যাকাণ্ডে সরাসরি ৮ জন অংশ নেয় বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে। নিহত লুৎফর রহমানের ভক্ত শাহেদা ও নিহত সরোয়ারুল ইসলাম ফারুক ওরফে মনির শ্বশুর গোলাম মোস্তফাসহ অন্তত ১০ জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেও উল্লেখযোগ্য কোন তথ্য পাওয়া যায়নি বলে তিনি জানান। যে কারণে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। তবে গোয়েন্দা পুলিশ তাদের তদন্ত অব্যাহত রেখেছেন। শীঘ্রই তারা এর প্রকৃত মোটিভ বের করতে পারবেন বলে আশা করছেন।
This post was last modified on ডিসেম্বর ২৪, ২০১৩ 4:09 অপরাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ স্বপ্ন দেখে তা মনে রাখা সত্যিই দুষ্কর। আর তাই রাতের…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ৩০ কার্তিক ১৪৩১…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেকই সুজি খেতে খুবই ভালোবাসেন। তাই তারা প্রতিদিন সুজির পায়েস,…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রথমবারের মতো প্যান ইন্ডিয়ান চলচ্চিত্র বানিয়েছেন নির্মাতা অনন্য মামুন। ঢালিউড…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আপনার যদি প্রতিদিন চিকেন খাওয়ার অভ্যাস থাকে, তাহলে জেনে রাখুন,…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কোটা সংস্কার আন্দোলনের সংগঠন ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’- এর অন্যতম সমন্বয়ক…
View Comments
ইস্লাম বিসসাস না করলে ভাই এমন অবস্থাই হয়।