ঢাকা টাইমস্ রিপোর্ট ॥ বাংলাদেশের পর্যটনের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান হলো কক্সবাজার। অথচ এখানকার বিমান বন্দরটি দীর্ঘদিন ধরেই অবহেলার শিকার। যদিও দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে সরকার ৫শ’ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছিল তাও অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে বাতিল হতে চলেছে!
প্রকাশ থাকে যে, দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে কক্সবাজার বিমান বন্দর উন্নয়নে সরকার ৫শ’ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। কিন্তু প্রকল্প পরিচালকের অনিয়ম, দুর্নীতি আর স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগে বাতিল করা হচ্ছে ৫০০ কোটি টাকার কক্সবাজার বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্প। এরই মধ্যে প্রকল্পের জন্য আবারও দরপত্র আহ্বানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। অনুমোদনের জন্য ফাইলটি প্রধানমন্ত্রীর দফতরে পাঠানো হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এ অবস্থায় নতুন করে দরপত্র আহ্বান করলে প্রকল্প ব্যয় বেড়ে সরকারের গচ্চা যাবে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা। এদিকে অনিয়ম আর স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগে বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয় ও সিভিল অ্যাভিয়েশন থেকে প্রকল্প পরিচালক হাবিবুর রহমানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে।
সিভিল অ্যাভিয়েশনের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, প্রকল্প পরিচালকের এ স্বেচ্ছাচারিতার কারণে গত তিন বছরের সব অর্জন নষ্ট হতে চলেছে। অপর দিকে অভিযোগ উঠেছে, সর্বনিম্ন দরদাতাকে কার্যাদেশ না দিয়ে ৪০ কোটি টাকা বেশি দামে অপর একটি কোম্পানিকে কাজ দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে মন্ত্রণালয়ের প্রভাবশালী একটি পক্ষ। এ জন্য ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে প্রকল্পের ঠিকাদার নিয়োগের প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য উত্থাপন করা হলে সিপিটিইউ রিভিউ প্যানেলের বিরোধিতা করে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠানকে কাজ দিতে আপত্তি জানান খোদ একজন মন্ত্রী। জানা গেছে, দরপত্রে অংশ নেয়া তৃতীয় সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সাফাই গেয়ে কাজ দেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন ওই মন্ত্রী।
এ অভিযোগ অস্বীকার করে সিভিল অ্যাভিয়েশনের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, সব কিছু ঠিকঠাকমতো হয়েছিল। প্রকল্প পরিচালক যদি তথ্য গোপন না করতেন তাহলে দরপত্রের কার্যাদেশ দিতে কোন সমস্যা হতো না। অভিযোগ রয়েছে, প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য যে কোম্পানির নাম চূড়ান্ত করা হয়েছিল তাদের দেয়া ব্যাংক গ্যারান্টির মেয়াদ না থাকার পর একটি সিন্ডিকেট কৌশলে তাদের চূড়ান্ত করেছিল। রহস্যজনক কারণে প্রকল্প পরিচালক এ তথ্য গোপন করে পুরো প্রকল্পটি মন্ত্রিসভা কমিটিতে উপস্থাপন করেছিলেন। ওই পরিচালকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তিনি প্রকল্পের সর্বনিম্ন দরদাতাকে সুবিধা দেয়ার জন্য তাদের পক্ষে কাজ করেছেন। এ ঘটনার পর পর স্পেনের একটি কোম্পানির টাকায় প্রকল্প পরিচালক সিভিল অ্যাভিয়েশনের একজন ঠিকাদারকে নিয়ে স্পেন, সুইজারল্যান্ড আর নেপাল বেড়াতে গেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। তার সঙ্গে একই ফ্লাইটে স্পেন গেছেন প্রকৌশলী মিরাজ উদ্দিন নামে সিভিল অ্যাভিয়েশনের একজন প্রভাবশালী ঠিকাদারও। অভিযোগ রয়েছে, এ ঠিকাদারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে কক্সবাজার প্রকল্পে অংশ নেয়া একজন বিদেশী ঠিকাদারেরও। ধারণা করা হচ্ছে, ওই কোম্পানির কাছ থেকে ঘুষ হিসেবে প্রকল্প পরিচালক স্পেন ও সুইজারল্যান্ডের টিকিট নিয়ে বিদেশ ভ্রমণে গেছেন। এসব কারণে সিভিল অ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষ ও বিমান মন্ত্রণালয় থেকে প্রকল্প পরিচালক হাবিবুর রহমানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। এ অবস্থায় তিন বছর ধরে চলমান এ প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা বলেছেন, এখন যদি নতুন করে দরপত্র আহ্বান করতে হয় তাহলে বর্তমান সরকারের আমলে এ প্রকল্প শুরু করা সম্ভব হবে না। একই সঙ্গে ৫০০ কোটি টাকার প্রকল্প বেড়ে দাঁড়াবে ৮০০ কোটি টাকায়। এতে সরকারের গচ্চা যাবে কমপক্ষে ৩০০ কোটি টাকা।
প্রকল্প সম্পর্কে ২০ জুন বিমান মন্ত্রণালয় থেকে সিভিল অ্যাভিয়েশনের চেয়ারম্যানের কাছে পাঠানো কৈফিয়ত তলব করা চিঠিতে বলা হয়েছে, কক্সবাজার বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্প (প্রথম পর্যায়) শীর্ষক প্রকল্পের ঠিকাদার নিয়োগের জন্য ক্রয়প্রস্তাব ২০ জুন সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে উপস্থাপিত হয়। ওই সভায় আলোচনা চলাকালে বিড বন্ডের বিষয় সম্পর্কে মন্ত্রণালয় আগে অবহিত না থাকায় এ বিষয়ে সচিব কোন জবাব দিতে পারেননি। পাশাপাশি কুয়ান্তার স্থানীয় প্রতিনিধি হিসেবে করোলা কর্পোরেশন থেকে ঢাকা ব্যাংকের মাধ্যমে বিড বন্ড দাখিলের যে কথাটি উত্থাপিত হয়েছে তা-ও এর আগে মন্ত্রণালয়ের গোচরীভূত করা হয়নি। ফলে ওই সভায় সচিব বিব্রতবোধ করেন। এ কারণে বর্ণিত বিষয় কেন মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়নি, তা জানাতে প্রকল্প পরিচালক হাবিবুর রহমানকে এক দিন সময় দেয়া হয়। এদিকে মন্ত্রণালয়ের চিঠি পেয়ে সিভিল অ্যাভিয়েশন থেকেও প্রকল্প পরিচালক হাবিবুর রহমানকে শোকজ করা হয়েছে। ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, হাবিবুর রহমান প্রকল্পের অনেক তথ্য দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির কাছে গোপন করেছেন। এ কারণে তাকে ব্যাখ্যা প্রদানের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের একটি সূত্র জানায়, নতুন করে দরপত্র আহ্বান করা হলে এ জন্য কমপক্ষে এক বছর লাগবে। তাতে বর্তমানে সরকারের অগ্রাধিকার এ প্রকল্পটি এ মেয়াদে শুরু করা সম্ভব হবে না। তা ছাড়া এরই মধ্যে তিন বছর শেষ হয়ে গেছে। এ সময়ে প্রকল্প ব্যয় বেড়ে যাবে কমপক্ষে ৩০০ কোটি টাকা, যা সরকারের জন্য বোঝা হয়ে দেখা দেবে। এ ছাড়াও প্রকল্প কাজ শুরু করতে দেরি হয়ে বিশ্বব্যাপী পর্যটন আকর্ষণে সরকারের যে টার্গেট সেটা ব্যাহত হবে। এ জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে প্রকল্পটি বাতিল না করে অন্য কোন পন্থায় কাজ শুরু করার জন্য চেষ্টা চলছে। তবে মন্ত্রিসভা কমিটির একজন সদস্য জানান, নতুন দরপত্র আহ্বান না করে যদি গোঁজামিল দিয়ে প্রকল্পকাজ শুরু করা হয় তাহলে দুর্নীতি দমন কমিশনে এ জন্য মামলা হবে। তাতে সবাইকে আসামি হতে হবে। এ জন্য গোঁজামিল দিয়ে কোন ধরনের কাজ করতে রাজি নন ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির কোন সদস্য। তবে মন্ত্রিসভা কমিটির সদস্যরা এ অনিয়ম-দুর্নীতির জন্য সিভিল অ্যাভিয়েশনের কর্মকর্তা, প্রকল্প পরিচালক হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলাসহ কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, যেহেতু কক্সবাজার দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন শহর। সেহেতু সমুদ্র উপকূলীয় এলাকায় প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় আকাশপথে দ্রুত যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপনের উদ্দেশ্যে কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিকমানের বিমানবন্দরে উন্নীত করার পদক্ষেপও নেয়া হয়। এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে সরকার থেকে কক্সবাজার বিমানবন্দর উন্নয়ন (প্রথম পর্যায়) প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ৩ হাজার ২৬৫ কোটি টাকা। ২০০৯ সালের অক্টোবর থেকে ২০১৩ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদের এ প্রকল্পটি ২০০৯ সালের ২৯ অক্টোবর একনেকে অনুমোদিত হয়। জানা যায়, কক্সবাজার উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় রানওয়ের আয়তন বাড়বে। কক্সবাজার বিমানবন্দরের বর্তমান রানওয়ের দৈর্ঘ্য ৬ হাজার ৭৭৫ ফুট। এটি বাড়িয়ে ৯ হাজার ফুট করা হবে। রানওয়ের চওড়া ১২০ ফুট থেকে বাড়িয়ে ২০০ ফুটে উন্নীত করা হবে। তা ছাড়া রানওয়ের শক্তি বৃদ্ধি, এয়ারফিল্ড লাইটিং সিস্টেম স্থাপন, ফায়ার ফাইটিং ভেহিকল ক্রয় ও সর্বাধুনিক যোগাযোগ যন্ত্রপাতি স্থাপনের কাজ করা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু একজন ব্যক্তির স্বেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতির কারণে আজ এই প্রকল্পটি বন্ধ হতে চলেছে। নতুন করে দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে প্রকল্প হাতে নিলে তার জন্য যে ব্যয় বৃদ্ধি পাবে তার দায়িত্ব কে নেবে? এই প্রশ্ন এখন সকলের।
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। বৃহস্পতিবার, ১ মে ২০২৫ খৃস্টাব্দ, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা জানি শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অংশই হলো কিডনি। কিডনি বিকল হতে…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গ্রাহকের জন্য আরও সমৃদ্ধ অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করার অংশ হিসেবে নতুন…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমাদের সকালটা শুরু করা দরকার স্বাস্থ্যকর খাবার দিয়ে। তাই ওজন…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাংলাদেশের কে-ড্রামা ভক্তদের অপেক্ষার পালা শেষ; আগামী ১ মে ‘ডিসেন্ডেন্টস…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পাকিস্তানের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন,…
View Comments
বাংলাদেশ এর দুরনিতির চেস কুথাই
wonderful post. Ne'er knew this, thankyou for letting me know.
vE9v8V A big thank you for your article.Really looking forward to read more. Will read on...
nice site, so jealous right now
I wish to express thanks to the writer just for rescuing me from this challenge. Because of scouting through the world-wide-web and finding notions that were not beneficial, I thought my life was gone. Living minus the answers to the problems you've solved as a result of your review is a critical case, as well as the kind that might have adversely damaged my career if I had not discovered your blog post. That talents and kindness in touching the whole lot was crucial. I'm not sure what I would have done if I hadn't discovered such a step like this. I can at this time look ahead to my future. Thanks for your time so much for your reliable and sensible help. I won't hesitate to refer your web blog to any individual who needs to have recommendations about this topic.
Good website! I really love how it is easy on my eyes and the data are well written. I am wondering how I might be notified whenever a new post has been made. I have subscribed to your feed which must do the trick! Have a nice day!