বিচারপতি হাবিবুর রহমান: তিনি থাকবেন সবার হৃদয়ে

দি ঢাকা টাইমস্‌ ডেস্ক ॥ সাবেক প্রধান বিচারপতি ও প্রথম তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বিচারপতি হাবিবুর রহমান ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহিরাজিউন)| গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় অসুস্থবোধ করায় তাকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হলে রাত পোনে ১০টার দিকে তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স ছিল ৮৫ বছর।


মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং পরবর্তীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি একাধারে একজন গবেষক, লেখক, শিক্ষাবিদ, আইনজীবী, অভিধানপ্রণেতা। বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান ১৯৪৯-৫২ এর ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর এই যাত্রাতে জাতি শোকাহত। জাতি তাঁর সকল কর্মকাণ্ডের কথা সব সময় স্মরণ করবে। তিনি থাকবেন সবার হৃদয়ে।

সংক্ষিপ্ত বিবরণী

১৯২৮ খ্রিস্টাব্দের ৩ ডিসেম্বর ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলার জংগীপুর মহকুমার দয়ারামপুর গ্রামে মুহম্মদ হাবিবুর রহমান জন্মগ্রহণ করেন। বাবা মৌলভী জহিরউদ্দিন বিশ্বাস ছিলেন একজন আইনজীবী। জহিরউদ্দিন বিশ্বাস ছিলেন একজন সক্রিয় রাজনৈতিক কর্মী। তিনি প্রথমে আঞ্জুমান এবং পরে মুসলিম লীগ আন্দোলনের সাংগঠনিক পর্যায়ে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় হাবিবুর রহমানের পিতা জাতীয় যুদ্ধ ফ্রন্টের বিভাগীয় নেতা ছিলেন। পশ্চিমবঙ্গ সরকার ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে তাঁকে গ্রেফতার করে বহরমপুর কারাগারে পাঠায়। অবশ্য কয়েকদিন পরই জহিরউদ্দিন বিশ্বাস মুক্তি লাভ করেন। ভারত বিভাগের পর ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে মুশির্দাবাদ ছেড়ে জহিরউদ্দিন বিশ্বাস রাজশাহীতে চলে আসেন এবং স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। হাবিবুর রহমানের মা গুল হাবিবা ছিলেন গৃহিণী।

তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাস বিষয়ের ওপর ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে বি.এ. সম্মান ও ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে এম.এ. পাশ করেন। এরপর তিনি ১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আধুনিক ইতিহাসে বি.এ. সম্মান ও স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।

হাবিবুর রহমান: কর্মজীবন

# হাবিবুর রহমান তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগ দিয়ে ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দে।

Related Post

# তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন। সেখানে তিনি ইতিহাসের রিডার (১৯৬২-৬৪) ও আইন বিভাগের ডিন (১৯৬১) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

# ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি আইন ব্যবসায়কে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন এবং ঢাকা হাই কোর্ট বারে যোগ দেন।

# তিনি সহকারী এডভোকেট জেনারেল (১৯৬৯)

# হাই কোর্ট বার এসোসিয়েশনের ভাইস-প্রেসিডেন্ট (১৯৭২) ইত্যাদি দায়িত্ব পালন করেন।

# তিনি বাংলাদেশ বার কাউন্সিলেরও (১৯৭২) সদস্য ছিলেন।

# ১৯৭৬ থেকে ১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দে পর্যন্ত তিনি হাইকোর্টের বিচারপতি ছিলেন।

# ১৯৮৫ সালে তিনি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে নিয়োগ লাভ করেন।

# তিনি ১৯৯৫ পর্যন্ত আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।।

# ১৯৯০-৯১ মেয়াদে বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ অন্তবর্তীকালীন সরকার প্রধান হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করলে হাবিবুর রহমান ভারপ্রাপ্ত বিচাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

# ১৯৯৫ খ্রিস্টাব্দে প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন।

This post was last modified on জানুয়ারী ১২, ২০১৪ 10:04 পূর্বাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

গাজা এবং লেবাননজুড়ে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৪৫

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ড এবং লেবাননজুড়ে ভয়াবহ হামলা চলমান রেখেছে…

% দিন আগে

এখন থেকে বড় পর্দায় দেখা যাবে রাতের স্বপ্ন!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ স্বপ্ন দেখে তা মনে রাখা সত্যিই দুষ্কর। আর তাই রাতের…

% দিন আগে

রাজবাড়ী বড় মসজিদ

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ৩০ কার্তিক ১৪৩১…

% দিন আগে

পুষ্টিবিদরা যা বলেন: সুজি খাওয়া উপকারী নাকি ক্ষতিকর?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেকই সুজি খেতে খুবই ভালোবাসেন। তাই তারা প্রতিদিন সুজির পায়েস,…

% দিন আগে

বাংলা এবং হিন্দিতে ‘দরদ’-এর ট্রেলার ও গান প্রকাশ [ট্রেলার]

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রথমবারের মতো প্যান ইন্ডিয়ান চলচ্চিত্র বানিয়েছেন নির্মাতা অনন্য মামুন। ঢালিউড…

% দিন আগে

মুরগির লেগপিস প্রতিদিন খাওয়া কী ভালো?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আপনার যদি প্রতিদিন চিকেন খাওয়ার অভ্যাস থাকে, তাহলে জেনে রাখুন,…

% দিন আগে