ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দেশের ডেইরী ফার্মগুলোর অবস্থা বড়ই করুন। দুধের যে পরিমাণ চাহিদা তা পূরণ হচ্ছে না। এমতাবস্থায় যেগুলো চালু ছিল তাও বন্ধের উপক্রম হয়েছে। সমপ্রতি লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে মিল্কভিটার ৪০টি দুগ্ধ খামার বন্ধ হয়ে গেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
প্রকাশ, দেশে গো-খাদ্যের অভাবে প্রত্যন্ত অঞ্চলের অনেক দুগ্ধ খামার ইতিমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। যেগুলো চালু রয়েছে সেগুলোর অবস্থাও করুণ। ১৯৯১ পর দেশে ডেইরী খাতে যে আন্দোলন অর্থাৎ ‘শ্বেত বিপ্লব’ শুরু হয়েছিল তা আজ আর নেই। প্রয়াত মার্শাল শাহ আলমের নেতৃত্বে দেশের দুগ্ধ মালিক সমিতি সে সময় সংঘবদ্ধ হয়ে এই ডেইরী পোলট্রি সেক্টরে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধন করেছিলেন। সে সময় বিদেশী বস্তাপচা গুঁড়োদুধ আমদানি বহু কমে এসেছিল। পরবর্তীতে ২০০০ সালের ১ অক্টোবর ডেইরী সেক্টরের এই অগ্রপথিক মার্শাল শাহ আলমের মৃত্যু হলে এই সেক্টর আর সেইভাবে এগুতে পারেনি। তাঁর মূল নীতি ছিল দেশপ্রেমের ভিত্তিতে প্রতিটি নাগরিক যদি এই সেক্টরে মনোনিবেশ করতে পারে তাহলে দেশের দুগ্ধ চাহিদা মেটানো সম্ভব। তাহলে বিদেশী বস্তাপচা গুঁড়োদুধের ওপর আমাদের আর নির্ভর করতে হতো না।
সমপ্রতি খবর পাওয়া গেছে, দেশের বৃহত্তম দুগ্ধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান মিল্কভিটার লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার দুগ্ধ উৎপাদনকারী ৪০টি খামার বন্ধ হয়ে গেছে। গোখাদ্য সংকট, খাদ্যের দাম বৃদ্ধি, পরিবহন সমস্যা ও দুধের মূল্য কমসহ বিভিন্ন সংকটের কারণে গত দুই বছরে এ খামারগুলো বন্ধ হয়ে যায়। খামারিরা তাদের গাভী বিক্রি করে দিয়েছে। বর্তমানে ২২টি খামার লোকসানের মুখে থাকায় বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।
জানা গেছে, রায়পুর উপজেলার মিতালীবাজার এলাকায় ১৯৯৮ সালে মিল্কভিটার কার্যক্রম চালু হয়। এরপর ২০০২ সালে মিল্কভিটার দুগ্ধ শীতলীকরণ কারখানার কার্যক্রম শুরু হয়। সমবায়ীদের কাছ থেকে দুধ ক্রয় করে এ কারখানায় শীতলীকরণ (ঠাণ্ডা) করে মিল্কভিটার ঢাকার মিরপুরে প্রধান কারখানায় পাঠানো হয়। এদিকে মিল্কভিটার ভবনের জন্য ২০০১ সালে মিতালীবাজার এলাকায় সরকার পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৫ একর ৪৭ শতাংশ জমি অধিগ্রহণ করে। পরে ওই জমি মিল্কভিটাকে বরাদ্দ দেয়। দীর্ঘদিনও বরাদ্দকৃত জমিতে ভবন নির্মাণ না হওয়ায় বর্তমানে একটি ভাড়া করা জরাজীর্ণ ভবনে তাদের কার্যক্রম চলছে।
স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ৩-৪ বছর ধরে উৎপাদন স্থান থেকে কারখানা পর্যন্ত আনা দুধ পরিবহনে খরচ বেড়ে গেছে। চরাঞ্চল থেকে আনা দুধের পরিবহনে ১০ ঘণ্টার ওপর সময় লেগে যাওয়ায় অনেক সময় ফ্যাটের মান নিম্ন হয়। এ কারণে দুধ ফেলে দিতে হয়। নানা সংকটের কারণে সমিতিগুলোকে বিপুল পরিমাণ লোকসান দিতে হয়। ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা কাঁচা দুধ টাটকা রাখার জন্য ২০০৩ সালে স্থানীয় সমিতির সভাপতিদের ল্যাক্টো পার-অক্সাইড কেমিক্যাল ব্যবহারের ওপর রায়পুরের উপকূলীয় হাজীমারা এলাকায় প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। অথচ অদ্যাবধি মিল্কভিটা থেকে ওই কেমিক্যাল সরবরাহ করা হয়নি।
উপজেলার পূর্ব গাইয়ারচর দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমিতির সভাপতি হারিছ মিয়া জানান, ৮ বছর আগে শুরুতে তার সমিতির সদস্য ছিল ৬০ জন। এরইমধ্যে তার ৪০ জন সদস্যই তাদের দুগ্ধ উৎপাদনকারী খামার বন্ধ করে দিয়েছে। গত ৪ বছরে খড়, ভুসি ও খৈলসহ অন্য দানাদার খাদ্যের মূল্য বেড়েছে তিনগুণ। গরুর চিকিৎসা ব্যয়ও বেড়ে গেছে অনেকগুণ। তিনি আরও জানান, প্রতিটি গাভীর পেছনে দৈনিক গড়ে ৫০০ টাকা খরচ হলেও উৎপাদিত দুধের মূল্য পাওয়া যাচ্ছে তার চেয়ে কম। দুগ্ধ উৎপাদনের ব্যয় বেশি হওয়ায় লোকসান দিয়ে অধিকাংশ সমিতির সদস্যরা তাদের গাভী বিক্রি করে দিয়েছে। এতে অনেক সমিতি বন্ধ হয়ে যায়।
এ ব্যাপারে মিল্কভিটার পরিচালক বেলাল হোসেন ভূঁইয়া বলেন, রায়পুরে সাড়ে ১৬ কোটি টাকার মহিষের কৃত্রিম প্রজননের একটি প্রকল্প সরকারের বিবেচনায় রয়েছে। ওই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে উপকূলীয় হাজার হাজার সমবায়ীর মধ্যে বিপ্লব ঘটবে। মিল্কভিটার রায়পুর কারাখানার ম্যানেজার আকতার হোসেন প্রায় ৪০টি খামার বন্ধ হয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। মিল্কভিটার রায়পুর কারখানা সূত্র জানায়, কারখানাটি চালু হওয়ার শুরুতে গাভী পালনকারী স্থানীয় কৃষকদের নিয়ে ৬২টি দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমিতি গঠন করা হয়। তখন প্রত্যেক সমিতিতে সদস্যের সংখ্যা ১৫ থেকে ২৫ জন ছিল। প্রত্যেক সদস্য ১০০ থেকে ৩০টি পর্যন্ত উন্নতজাতের গাভী নিয়ে দুগ্ধ খামার করে।
এসব সমিতির মাধ্যমে মিল্কভিটা দুধ ক্রয় করে থাকে। দুধের ফ্যাটের মান অনুযায়ী স্থানীয় সমিতিগুলো প্রতিলিটার দুধের দাম গড়ে ৩২ টাকা পেয়ে থাকে। ফ্যাটের মান নিম্ন হলে ক্রয় না করে তা ফিরিয়ে দেয়া হয়। বর্তমান চালু থাকা ২২টি সমিতি কারখানায় দুধ সরবরাহ করে আসছে। চালু থাকা সমিতিগুলোর সদস্য সংখ্যাও কমে গেছে। কারখানায় দুধ ক্রয়ের পরিমাণও কমছে দিন দিন।
স্থানীয় খামারিরা মনে করেন, সমিতি থেকে মিল্কভিটায় সরবরাহকৃত দুধের মূল্য বাড়িয়ে দেয়া, মিল্কভিটার বর্তমানে খালি পড়ে থাকা নিজস্ব জায়গায় কারখানা নির্মাণ, দুধ টাটকা রাখার কেমিক্যাল সরবরাহ, মিল্কভিটা থেকে গাভীর উন্নত চিকিৎসার ব্যয় বহন করা ও চরাঞ্চলে গাভী পালনের স্থানের (বাথান) জন্য সরকারের খাস জমি বরাদ্দ দেয়া হলে বন্ধ হয়ে যাওয়া খামারগুলো আবার চালু করা যাবে। এতে সদস্যরা গাভী পালনে উৎসাহ পাবে। কাঁচা ঘাসের সংকট দূর এবং সদস্যদের লোকসান দিতে হবে না।
This post was last modified on জুলাই ১২, ২০১২ 12:03 অপরাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরায়েলের গণহত্যা এবং আগ্রাসন পুরোপুরি বন্ধ…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ "রাখে আল্লাহ মারে কে' কথাটি আবারও প্রমাণ হলো। ঘটনাটি ঘটেছে…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। সোমবার, ৬ মে ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বয়স বৃদ্ধির পর নখ কিছুটা হলেও ভঙ্গুর হতেই পারে। আবার…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ “কৃষি-উদ্যোক্তাদের সর্বাত্মক সহায়তা প্রদান করার পাশাপাশি সরকার তাদের বিকাশে সকল…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মানুষের চেয়ে ভালোভাবে তো একটি রোবট শরীরকে কখনই নিয়ন্ত্রণ করতে…
View Comments
Purely to follow up on the update of this theme on your web-site and would really want to let you know simply how much I valued the time you took to produce this handy post. In the post, you spoke regarding how to really handle this matter with all convenience. It would be my own pleasure to build up some more thoughts from your site and come as much as offer some others what I learned from you. I appreciate your usual great effort.
You have brought up a very fantastic points , thanks for the post.
We are a group of volunteers and opening a new scheme in our community. Your site provided us with valuable information to work on. You have done an impressive job and our entire community will be grateful to you.
I'm honored to receive a call from my friend as soon as he discovered the important guidelines shared on your own site. Looking at your blog article is a real great experience. Many thanks for taking into account readers at all like me, and I wish you the best of success as a professional in this domain.
I got what you intend, appreciate it for posting .Woh I am delighted to find this website through google. "You must pray that the way be long, full of adventures and experiences." by Constantine Peter Cavafy.
Wow, awesome weblog structure! How lengthy have you ever been blogging for? you make running a blog glance easy. The overall look of your website is great, as well as the content!
F*ckin' remarkable things here. I'm very happy to peer your article. Thanks so much and i am having a look forward to contact you. Will you please drop me a mail?
Installed this on my cell phone and pill. Everything syncs with alternate server devoid of any concerns.
Wow! Thank you! I constantly wanted to write on my site something like that. Can I implement a fragment of your post to my website?
Thankyou for selective information .