এবার একুশের বইমেলা বসছে সোহরাওয়ার্দীতে

দি ঢাকা টাইমস্‌ ডেস্ক ॥ বাংলা একাডেমী থেকে স্থানান্তর হচ্ছে একুশের বই মেলা। সমালোচনা থাকলেও এবারের একুশের বইমেলা বসছে বাংলা একাডেমি-সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দীতে।


একুশে ফেব্রুয়ারিকে কেন্দ্র করে মহান ভাষা শহীদদের স্মরণে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে গড়ে ওঠা এ বইমেলা প্রায় চার দশক পর প্রথমবারের মতো একাডেমি প্রাঙ্গণের বাইরে বসতে যাচ্ছে।

বাঙালির এ প্রাণের মেলা বাংলা একাডেমির বাইরে নিয়ে যাওয়া নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে চলে আসছে বিতর্ক। অবশেষে সে বিতর্কের মাঝেই এবার বইমেলা বাইরে নিয়ে যাওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হলো।

সোমবার বাংলা একাডেমিতে সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয় সমন্বয় সভায় বইমেলাকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ঠিক কোন স্থানে বইমেলা হবে, তা সরেজমিন পরিদর্শন করে নির্ধারণ করা হবে বলে সভায় সিদ্ধান্ত হয়। আজ মঙ্গলবার সংস্কৃতিমন্ত্রীর নেতৃত্বে মেলা কমিটির স্থান পরিদর্শনে যাওয়ার কথা রয়েছে।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মেলা নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হলেও এখনো ওই স্থানের অনুমতি নেওয়া হয়নি বলে জানা গেছে। মেলা কমিটির আহ্‌বায়ক একাডেমির পরিচালক শাহিদা খাতুন জানিয়েছেন, বাংলা একাডেমি-সংলগ্ন রাস্তায় বইমেলার স্টল দেওয়ার জন্য অনুমতি নেওয়া হয়েছিল। এখন নতুন করে গণপূর্ত বিভাগ ও সিটি করপোরেশনের কাছে আবেদন করা হবে।

Related Post

অনেকেই মনে করেন, বাংলা একাডেমির ভেতরে এবার জায়গার পরিসর কমেছে। তাছাড়া সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মেলা আয়োজন সময়ের দাবি ছিল। মেলাটি আয়োজিত হয় মহান ভাষা সৈনিকদের স্মরণে। আর এ ভাষা আন্দোলনের পথ ধরেই এসেছে মহান মুক্তিযুদ্ধ। বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ভাষণ দেন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সঙ্গে স্বাধীনতা সংগ্রামের সম্পর্ক রয়েছে। তাই সেখানে বইমেলা আয়োজিত হলে একুশ আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অপূর্ব সম্মিলন ঘটবে। মেলার তাৎপর্য আরো বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে।

তবে বাংলা একাডেমির সিদ্ধান্তে অনেকেই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। একই অবকাঠামোতে যাতে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের ঢাকা বইমেলা আয়োজন করা যায়, তারই স্বার্থে একটি মহলের ষড়যন্ত্রে ঐতিহ্যবাহী একুশে বইমেলাকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ১৯৭২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি একাডেমির বটতলায় মাত্র ৩২টি বই নিয়ে একাই বইমেলার আয়োজন করেছিলেন ‘মুক্তধারা’ প্রকাশনীর চিত্তরঞ্জন সাহা। স্বাধীন দেশে এটাই ছিল প্রথম বইমেলা। এরপর ১৯৭৬ সালে এসে মেলায় যোগ দেন অন্য প্রকাশকরা। এভাবেই একদিন মহান একুশের স্মৃতি বিজড়িত একটি প্রাণের মেলাতে পরিণত হয় মহান একুশের এই বইমেলা। যা প্রতিবছর ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলা একাডেমী প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।

This post was last modified on জানুয়ারী ২১, ২০১৪ 10:28 পূর্বাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

নখ দেখেই বোঝা যাবে রোগ হয়েছে কি না!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বয়স বৃদ্ধির পর নখ কিছুটা হলেও ভঙ্গুর হতেই পারে। আবার…

% দিন আগে

তরুণ প্রজন্মকে কৃষি উদ্যোক্তা হিসেবে এগিয়ে আসতে হবে- মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ “কৃষি-উদ্যোক্তাদের সর্বাত্মক সহায়তা প্রদান করার পাশাপাশি সরকার তাদের বিকাশে সকল…

% দিন আগে

বিস্ময়কর এক রোবট অ্যাটলাসের গল্প

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মানুষের চেয়ে ভালোভাবে তো একটি রোবট শরীরকে কখনই নিয়ন্ত্রণ করতে…

% দিন আগে

প্রথম পারিশ্রমিক ছিলো ৫০ রুপি: বর্তমানে প্রতি ছবিতে নেন ২০ কোটি!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বর্তমান সময়ে দক্ষিণী চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় একজন অভিনেতা যশ। যিনি সবার…

% দিন আগে

গাজার যুদ্ধ বন্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কথা শুনছে না ইসরায়েল!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি চুক্তি করতে…

% দিন আগে

ভারতে গাধার দুধ বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৬ হাজার টাকা লিটার!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমাদের সমাজে গাধা নামক প্রাণীটি কঠোর পরিশ্রমের রূপক হিসেবে প্রচলিত।…

% দিন আগে