পৃথিবীর তুলনায় বিপুল পরিমাণ পানির উপস্থিতি শনাক্ত করা গেল এক বামন গ্রহে

দি ঢাকা টাইমস্‌ ডেস্ক ॥ পৃথিবী ছাড়াও মহাবিশ্বের নানা জায়গায় পানির অস্তিত্ব থাকতে পারে। এই বিষয়ে বিজ্ঞানীদের সংশয়ের শেষ নেই। বরং তারা আশাবাদী। কেননা পানির উপস্থিতির সাথে জড়িয়ে আছে প্রাণ থাকার প্রসঙ্গ। তাই বিজ্ঞানীদের অনুসন্ধানের শেষ নেই। সম্প্রতি এক চমকপ্রদ তথ্য পাওয়া গেছে পৃথিবীর বাইরের পানির অস্থিত্ব প্রসঙ্গে। সৌরজগতেরই একটি বামন গ্রহে প্রচুর পরিমাণ পানি রয়েছে, বলে ধারণা করছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। এই পানি স্বচ্ছ এবং এর পরিমাণ পৃথিবীর থেকেও বেশি হতে পারে।


পৃথিবী থেকেও বেশি পানির উপস্থিতি থাকতে পারে, জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের ধারণা করা বামন গ্রহটির নাম সেরেস। রোমান দেবী সেরেস এর নামানুসারে গ্রহটির নামকরণ করা হয়েছে। সেরেস দেবীকে মনে করা হতো, অংকুরোদগম, ফসল ফলানো এবং মাতৃ স্নেহের দেবী। ইতালীয় জ্যোতির্বিদ গুইসেপ্পি পিয়াজ্জি ১৮০১ খ্রীস্টাব্দের ১লা জানুয়ারী এটি আবিস্কার করেন।

পাঠকদের মনে প্রশ্ন আসতে পারে বামন গ্রহ কি? এটি কি গ্রহ না অন্য কিছু! আসলে বামন গ্রহ (Dwarf planet) হচ্ছে, সৌরজগতের এক ধরনের জ্যোতিষ্ক যা সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘূর্ণায়মান কিন্তু এদের গ্রহ বা উপগ্রহ বলা যায় না। গ্রহ বা উপগ্রহে সংজ্ঞায়িত করা যায় না বলে জ্যোতির্বিজ্ঞান বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিয়ন জ্যোতিষ্কটির এরূপ শ্রেনীকরণ করেছে। ইতোপূর্বে ৪৫ বছর ধরে সেরেস কে গ্রহাণু হিসাবেই মনে করা হত। ২০০৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সেরেস কে বামন গ্রহ হিসাবে স্বীকৃতি দেয়া হয়।

সেরেস গ্রহাণু বেল্ট বা গ্রহানু বলয়ের একমাত্র বামন গ্রহ। গ্রহাণু বলয় বা গ্রহাণু অঞ্চল হচ্ছে মঙ্গল এবং বৃহস্পতি গ্রহের দুই কক্ষপথের মাঝামাঝিতে অবস্থিত অঞ্চল। এই অঞ্চলের জায়গা জুড়ে রয়েছে সাধারণত গ্রহাণু, অন্যান্য বস্তুসমূহ। গ্রহাণু হল প্রধানত পাথর দ্বারা গঠিত বস্তু যা তারাকে কেন্দ্র করে আবর্তন করে। আমাদের সৌরজগতে গ্রহাণুগুলো ক্ষুদ্র গ্রহ (Minor planet অথবা Planetoid) নামক শ্রেণীর সবচেয়ে পরিচিত বস্তু। এরা ছোট আকারের গ্রহ যেমন বুধের চেয়েও ছোট। বেশিরভাগ গ্রহাণুই মঙ্গল এবং বৃহস্পতি গ্রহের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত গ্রহাণু বেল্টে থেকে নির্দিষ্ট উপবৃত্তাকার কক্ষপথে সূর্যকে আবর্তন করে।

Related Post

সাম্প্রতিক পর্যবেক্ষন সমূহ থেকে জানা যায়, সেরেসের পৃষ্ঠ পানি, বরফ ও পানিতে দ্রবীভূত বিভিন্ন খনিজ পদার্থের মিশ্রন দিয়ে তৈরি। ধারনা করা হয় এর পাথুরে কেন্দ্র এবং তার চারপাশে ঘিরে থাকা তরল পানির মহাসাগর রয়েছে।

এই বছর ২২ জানুয়ারি, ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি’র বিজ্ঞানীরা সেরেস বামন গ্রহটির আবহমণ্ডল এবং পৃষ্ঠ তলে পানির উপস্থিতি শনাক্ত করেন। হার্শেল স্পেস মানমন্দির এর দূরবর্তী ইনফ্রারেড সক্ষমতা কাজে লাগিয়ে পানির উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, সেরেসের পৃষ্ঠতলের পানি এখনো বরফ অবস্থায় আছে। নিকট ভাবিষ্যতে যদি এই বরফ গলে স্বচ্ছ পানিতে পরিণত হয় তবে তা পৃথিবীর মোট পানির আয়তনের তুলনায় বেশি হবে।

তথ্যসূত্র: দি টেক জার্নাল, নাসা, উইকিপিডিয়া

This post was last modified on আগস্ট ২১, ২০১৪ 8:43 পূর্বাহ্ন

এহ্‌তেশাম

Recent Posts

আবারও বিয়ের পিড়িতে বসলেন সানি লিওন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বলিউড অভিনেত্রী ও মডেল সানি লিওন আবারও বিয়ের পিড়িতে বসলেন।…

% দিন আগে

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আজ প্রেসিডেন্ট নির্বাচন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আজ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর)…

% দিন আগে

ব্র্যাক ব্যাংক এর সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর বেসিসের

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) সদস্যদের জন্য…

% দিন আগে

৩ স্ত্রী, ২ বান্ধবী, ১০ সন্তানকে নিয়ে সংসার বেকার যুবকের!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ৩ স্ত্রী, ২ বান্ধবী, ১০ সন্তানকে নিয়ে সংসার বেকার যুবকের!…

% দিন আগে

অবার এক প্রাকৃতিক সৌন্দর্য

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ২০ কার্তিক ১৪৩১…

% দিন আগে

পিরিয়ডকালীন কী ধরনের খাবার খেলে রক্তাল্পতার ঝুঁকি এড়ানো যাবে?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সাধারণতভাবে দেখা যায়, বেশিরভাগ মহিলা রক্তাল্পতার ঝুঁকিতেই ভোগেন। পিরিয়ডের সময়…

% দিন আগে