দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিতে বাংলাদেশ একটি উদীয়মান দেশ এবং বিশ্ব অর্থনীতিতে বাংলাদেশ একটি অনাবিষ্কৃত রত্নভাণ্ডার! আগামী ১০ বছরেই বিশ্বে সমৃদ্ধশালী ১১ দেশের কাতারে অবস্থান নেবে বাংলাদেশ!
আমেরিকার পররাষ্ট্র বিষয়ক মাসিক ম্যাগাজিন ষ্টেট ম্যাগাজিন তাদের ফেব্রুয়ারির বিশেষ সংখ্যায় বাংলাদেশ নিয়ে প্রতিবেদন করে। ষ্টেট ম্যাগাজিনের এই সংখ্যায় বাংলাদেশ ইস্যুকে তাঁরা প্রচ্ছদ হিসেবেই বেছে নেয়। বাংলাদেশ নিয়ে বিশেষ বিশ্লেষণ নির্ভর প্রবন্ধটি লিখেছেন ঢাকায় নিয়োজিত সাবেক যুক্তরাষ্ট্রের কনসাল আগনিয়ানা ইভানোভা। তিনি তাঁর এই প্রবন্ধে বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী রাজনিতিক এবং অর্থনীতিক অবস্থার পেক্ষাপট এবং অনলাইন কমিনিটির বিষয়ে বিস্তারিত মতামত তুলে ধরেন।
আগনিয়ানা ইভানোভা মনে করেন বাংলাদেশ ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকে নানান ঘাত প্রতিঘাত পার করে এখন শক্ত অর্থনীতির ভিত্তি স্থাপনের পথেই এগোচ্ছে। যদিও বাংলাদেশে রাজনিতিক দল সমূহের মাঝে নানান সমস্যা এবং ভিন্নমত রয়েছে তবে সমৃদ্ধি বাংলাদেশে থেমে নেই। বাংলাদেশের প্রধান শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে এখানকার ১৬ কোটি জনসংখ্যা। ধীরে ধীরে এসব জনসংখ্যা দেশের অর্থনীতির হাল ধরছে। বাংলাদেশের শিক্ষা, সংস্কৃতির বিশেষ বিকাশ ঘটছে একই সাথে এখানে স্বাস্থ্য সেবা উন্নয়ন এবং শিশু জন্ম মৃত্যু হার অনেকটাই সফল ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা গেছে।
বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল হাতিয়ার হিসেবে প্রতিবেদনে বলা হয় বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পের কথা। বাংলাদেশের পোশাক শিল্প বর্তমানে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ পোশাক রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে দৃঢ় অবস্থান দিয়েছে। খুব শীগ্রই এই শিল্প আরও অগ্রমুখী খাত হিসেবেই নিজেকে বিকাশ করতে সক্ষম হবে। বাংলাদেশের পোশাক শিল্প ধীরে ধীরে এই অঞ্চলে বিশেষ এক অবস্থান তৈরি করেছে যা মূলত সাশ্রয়ী শ্রম এবং দৃঢ় মানসিকতার জোরেই। বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে কাজ করছে বিশাল জনগোষ্ঠী যার ৩ ভাগের ২ ভাগ হচ্ছে নারী।
এছাড়া বাংলাদেশের বিনিয়োগ খাতকেও এশিয়া অঞ্চলের সবচেয়ে লোভনীয় খাত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। এখানে বলা হয় বিশ্বের বিখ্যাত এবং শক্তিশালী কোম্পানি সমূহ বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। এসব কোম্পানির কথা বলতে গিয়ে প্রতিবেদনে উঠে আসে শেভরণ, বোইং, কঙ্কোফিলিপ্স ইত্যাদি কোম্পানির বাংলাদেশে বিনিয়োগের সম্ভাবনার বিষয়ে।
প্রতিবেদনে বলা হয় বাংলাদেশের গ্রাম্য অর্থনীতি এবং শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের জন্য এখানে কাজ করছে অসংখ্য এনজিও! বাংলাদেশেই পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি এনজিও কাজ করছে এবং বাংলাদেশ এসব এনজিওর সুফলও পাচ্ছে।
আমেরিকার প্রতিষ্ঠান গোল্ড ম্যান সাক্স এর বিশেষ জরীপেও বাংলাদেশের সম্ভাবনার কথা উঠে এসেছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়। প্রতিবেদনে সরাসরি বলা হয় নানান প্রতিবন্ধকতা থাকলেও বাংলাদেশের বৃহৎ একটি জনসংখ্যা এক সাথে দেশের সমৃদ্ধির জন্য অসাম্প্রদায়িক চেতনায় কাজ করে যেতে আগ্রহী।
বাংলাদেশের তরুণ সমাজের প্রশংসা করে প্রতিবেদনে বলা হয় বাংলাদেশের রয়েছে একটি সচেতন প্রজন্ম। এই তরুণ প্রজন্ম দেশের উন্নয়ন এবং সমৃদ্ধির জন্য নিবেদিত প্রান। বাংলাদেশের শক্তিশালী অনলাইন কমিনিটির নেতৃত্ব দিচ্ছে এই তরুণ সমাজ ফলে এখানে দেশের নানান সমস্যা এবং তাঁর বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তোলার জন্য অগ্রগামী ভূমিকা রাখছে তাঁরা!
সূত্রঃ ষ্টেট ম্যাগাজিন ফেব্রুয়ারি সংখ্যা