দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কবি আল মাহমুদের ‘জলবেশ্যা’ গল্প অবলম্বনে চলচ্চিত্র ‘টান’ মুক্তি পেয়েছে। ছবিটি শুক্রবার কলকাতায় মুক্তি পেয়েছে। মাত্র কয়েকদিনে ছবিটি ভালো মুনাফা করেছে।
ব্যতিক্রমি এক উগ্র সাজপোশাক এবং চটুল প্রকৃতির বেদেনীদের জীবন নিয়ে বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান কবি আল মাহমুদের ছোটগল্প ‘জলবেশ্যা’ অবলম্বনে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘টান’ গত শুক্রবার কলকাতায় মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
কবি আল মাহমুদ তাঁর ছোট গল্পে তুলে ধরেছেন সুন্দরবন এলাকার বাস্তব কিছু কাহিনী। সুন্দরবনে গেলে জলবেশ্যার দেখা মেলে জল-জঙ্গলের প্রত্যন্ত অঞ্চলে। কবি আল মাহমুদের জল, জঙ্গল আর জলবেশ্যাদের সেই গল্পনির্ভর কাহিনী নিয়ে ছবি বানিয়েছেন মুকুল রায় চৌধুরী। মুক্তির আগেই টান ছবির পোস্টারে ছেয়ে গিয়েছিল পুরো কলকাতা শহর। মুকুল মূলত বিজ্ঞাপন জগতের মানুষ, তাই প্রচারণাকে অন্যদের চেয়ে একটু বেশিই গুরুত্ব দেন তিনি।
জলবেশ্যার গল্প নিয়ে আল মাহমুদ বলেন, ‘জলবেশ্যা গল্পটি সত্য না হলেও এটা আমার দেখা একটা বাস্তব চিত্র থেকে লেখা। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার লালপুর গ্রামে মেঘনা নদীর পাড়ে জেলেপল্লী আমি দেখেছি। ঠিক সেই সময় গল্পটি লিখেছিলাম। গল্পটি এতটাই জটিল যে কেও এটা আন্দাজও করতে পারবে না।’
টান চলচ্চিত্র নিয়ে আল মাহমুদ বলেন, ‘আমি চাই এটা সবার হৃদয় ছুঁয়ে যাক। তবে সাহিত্য এবং সিনেমা এক জিনিস নয়। সিনেমার আলাদা একটা ঢং ও ভাষা রয়েছে। পুরোপুরি সাহিত্যের মতো হয়তো এটা হবে না। আবার লেখকের সব কল্পনাও সিনেমায় তুলে ধরা সম্ভব নয়। সাহিত্য চলচ্চিত্রে রূপ দিলে আসলে একটু পরিবর্তন ঘটে। তবে দু’টিরই প্রয়োজন রয়েছে। যারা চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন তারা সাহিত্যিকদের কাছ থেকে উপদেশ নিলে ইতিবাচক একটা ফল পাওয়া সম্ভব।’
ছবির দৃশ্যে রয়েছে, ছবির শুরুতে পানির ওপর ভাসছে সারি সারি ছোট ডিঙি নৌকা। কুপির আলোয় সেখানেই হররোজের দিন গুজরান। মাছ ধরা আর সাপের সন্ধান। সাপ কেন না, সাপের খেলা দেখিয়েই যে জীবন চলে বেদেনিদের। এর বাইরেও এদের রয়েছে অন্য একটা জীবন। কী সেই জীবন? সামান্য অর্থের বিনিময়ে একচিলতে ডিঙিতেই শরীর দিতে হয় অর্থাৎ দেহব্যবসা করতে হয় ওদের। তাই ওরা ‘জলবেশ্যা’।
টান ছবিতে বাংলাদেশের জুয়েল মামুদের লেখা গানে সুর দিয়েছেন টলিউডের ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত। ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন, ঋতুপর্ণ সেনগুপ্ত। অন্যান্য শিল্পীদের মধ্যে রয়েছে পামেলা, দেবলিনা চক্রবর্তী, রাজেশ শর্মা প্রমুখ। ছবির বেশ কিছু অংশের শুটিং সুন্দরবনে হলেও বেশির ভাগ শুটিং হয়েছে কলকাতার বাইপাসের পাশে এক ভেড়িতে। ওই ভেড়িতেই তৈরি করা হয়েছিল জলবেশ্যাদের ভাসমান বেশ্যাপল্লী।
২১ ফেব্রুয়ারি চলচ্চিত্রটি কলকাতায় মুক্তি পেয়েছে। মুক্তি পাওয়ার পর থেকে এ কদিনে বেশ ভালো মুনাফা করেছে বলে জানা গেছে।