দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিজ্ঞানসম্মতভাবে ও যুক্তির নিরিখে পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণা পরমাণু এই কথাটি আধুনিক মানবসমাজে প্রথম তুলে ধরেন জন ডাল্টন। আজকের পৃথিবীর এই প্রযুক্তিগত উন্নতির জন্য ডাল্টনের পরমাণুবাদ পথপ্রদর্শক।
প্রাচীন ভারতীয় দার্শনিক কণাদ সর্বপ্রথম পরমাণুবাদ বা কণাবাদ প্রকাশ করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন প্রত্যেকটি পদার্থ অতিক্ষুদ্র কণা দ্বারা গঠিত। তিনি এর নাম দিয়েছিলেন পরমাণু। গ্রীক দার্শনিক ডেমোক্রিটাসও পদার্থের বিভাজ্যতার কথা বলেছিলেন। বস্তুত তাদের এই মতবাদগুলো ছিল দার্শনিক মতবাদ। সেখানে মৌলিক বিজ্ঞানের চেয়ে দর্শনই প্রধান ছিল, যুক্তির চেয়ে কল্পনা ছিল বেশি। বিজ্ঞানসম্মতভাবে পরমাণুবাদকে প্রথম তুলে ধরেন জন ডাল্টন।
১৭৬৬ সালের, ৬ সেপ্টেম্বর ইংল্যান্ডের ইগসফিল্ড গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন জন ডাল্টন। গ্রামেই শুরু হয় তার প্রাথমিক শিক্ষা, ছেলেবেলায় তিনি রপ্ত করেন গ্রীক ও ল্যাটিন ভাষা। জন্মগতভাবে তিনি ছিলেন বর্ণান্ধ। বিজ্ঞান ও অংকের তীব্র আকর্ষণ থেকে উচ্চ শিক্ষার জন্য ভর্তি হন কলেজে। সেখান থেকে অর্জন করেন উচ্চতর ডিগ্রি। বিজ্ঞানে এম.এস.সি ডিগ্রি লাভের পর তিনি ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন। এখানেই তিনি গবেষক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। অধ্যাপনার শুরুতে তিনি আবহাওয়াবিদ্যা নিয়ে আগ্রহী ছিলেন, তাই প্রতিদিনের আবহাওয়া, বাতাসের বেগ এবং বায়ুচাপ লিখে রাখতেন।
আবহাওয়াবিদ্যার প্রবনতা থেকেই তিনি গ্যাসীয় পদার্থ নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। ১৮০০ সালে প্রকাশ করেন গ্যাস আয়তন সূত্র এবং গ্যাস অংশ সূত্র। সূত্র দুটি প্রকাশের সাথে সাথে বিজ্ঞানী সমাজে সাড়া পড়ে যায় এবং তিনি রসায়ন বিজ্ঞানী হিসেবে প্রসিদ্ধি লাভ করেন। গ্যাস নিয়ে গবেষণার সময় তার মনে পদার্থের গঠন সম্পর্কে চিন্তা সৃষ্টি হয়। সেখান থেকেই জন্ম হয় ‘পরমাণুবাদ’ নামক বিখ্যাত মতবাদটি। তিনি প্রকাশ করেন “প্রত্যেক মৌলিক পদার্থ অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অবিভাজ্য কণা দ্বারা গঠিত। এই কণাগুলোকে ভাঙ্গাও যায় না, গড়াও যায় না। তিনি এর নাম দেন পরমাণু বা এটম। একই মৌলের পরমাণুগুলো ধর্মে ও ভরে একই রকম কিন্তু ভিন্ন ভিন্ন মৌলের পরমাণুগুলো ধর্মে ও ভরে বিভিন্ন”।
ডাল্টনের এই পরমাণুবাদটি আধুনিক রসায়নের সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ কিন্তু এটি আধুনিক রসায়নের পথ প্রদর্শন করেছিল। ফলে তাকে আধুনিক রসায়নের প্রতিষ্ঠাতা বলা হয়। তিনিই প্রথম পরমাণুর সাংকেতিক চিহ্ন এবং পরমাণুর ভর সম্পর্কে ধারণা প্রদান করেন। এছাড়াও ডাল্টন প্রকাশ করেন উচ্চ চাপে ও নিম্ন তাপমাত্রায় কোন গ্যাসকে তরলে পরিণত করা যায়। এটি গ্যাস তরলীকরণ সূত্র নামে পরিচিত। আধুনিক শিল্পক্ষেত্রে এর জোরালো ভুমিকা রয়েছে।
মজার বিষয় হলো চিকিৎসাবিজ্ঞানে লাল-সবুজ বর্ণান্ধতাকে “ডাল্টনিজম” বলে। ডাল্টন বলতেন বংশগত কারণেই তার চোখে লাল-সবুজ রঙ উপলদ্ধি করার গ্রাহককোষটি নেই। পরবর্তীতে তার চোখের জেনেটিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে বিষয়টির সত্যতা প্রমাণিত হয়। লন্ডনের বিখ্যাত রয়েল সোসাইটি ১৮২৬ সালে রসায়নে তার অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে সম্মানসূচক ফেলোশিপ প্রদান করেন। ১৮৪৪ সালের ২৬ জুলাই এই মহান বিজ্ঞানী ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টার শহরে পরলোকগমন করেন।
তথ্যসূত্রঃ বায়োগ্রাফি
This post was last modified on মার্চ ৬, ২০১৪ 11:18 পূর্বাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেকেই খেতে বসলে মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই খাওয়া শেষ হয়ে যায়।…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বরগুনার আরডিএফ মিলনায়তনে ‘ভরসার নতুন জানালা’ শীর্ষক কৃষিবিষয়ক সহায়তা উদ্যোগের…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ নিজের আইফোনের ব্যাটারি হেলথ নিয়ে যদি কৌতূহলী হয়ে থাকেন কিংবা…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী তারিন জাহান এবার দেশের গণ্ডি পেরিয়ে কোলকাতার…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দীর্ঘ ৭ মাসের যুদ্ধের পর অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় দ্বিতীয় দফা…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভারতের আগ্রার সেগানা গ্রামের একটি প্রাক-মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দেরি করে স্কুলে…