Categories: জ্ঞান

বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভাইরাস আবিষ্কার!

দি ঢাকা টাইমস্‌ ডেস্ক ॥ ৩৪ হাজার বছর পুরনো ভূগর্ভস্থ হিমায়িত বরফ খন্ডের নিচে পাওয়া গেছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভাইরাস। সাইবেরিয়ার ভূগর্ভস্থ হিমায়িত অঞ্চলে প্রায় ১০০ ফুট গভীরে পাওয়া গেছে এই ভাইরাস।


একদল ফরাসি বিজ্ঞানী এই ভাইরাসটি আবিষ্কার করেছেন। গবেষকরা মনে করছেন, ভাইরাসটি হিমায়িত হওয়ার বয়স ১০ হাজার বছর। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায়, ভাইরাসটি একধরনের রোগজীবাণু। ভাইরাসটি পুরোপুরি মৃত নয় আবার একে জীবিত বলেও ধরা যাচ্ছে না। সত্যিকারঅর্থে এই ভাইরাস জীব ও জড়ের সংমিশ্রণ। প্রানীদেহে এটি জীবের মত আচরণ করে এবং বংশবৃদ্ধি করে। কিন্তু পোষক দেহের বাইরে এর আচরণ পুরোপুরি মৃত জড়ের মত।

২০০০ সালে এই ফরাসি বিজ্ঞানী দল যাদের নেতৃত্বে ছিলেন জীন-মিচেল ক্ল্যাভেরি এবং চ্যান্টেল অ্যাবেরগেল সাইবেরিয়ার আয়ুনোস্কু অঞ্ছলে আসেন বিরূপ পরিবেশে ভাইরাসরা কিভাবে টিকে থাকে সেটি পরীক্ষা করার জন্য। গবেষকরা বরফ খন্ডের মাঝে ড্রিলিং করার সময় অপ্রত্যাশিতভাবে ১০ হাজার বছরের হিমায়িত ভাইরাসটি পুনরুদ্ধার করেন। তারা খুব যত্ন সহকারে বরফ খন্ডের গভীরের মাটি আহরণ করেন এবং বাইরের আবরণকে অ্যালকোহল দ্বারা নিস্কাশন করেন। রেডিওকার্বন ডেটিং এর মাধ্যমে বুঝতে পারেন মাটিগুলো প্রায় ৩৪ হাজার বছর পুরোনো। মাটির এই নমুনাগুলো পরীক্ষা করতে করতে প্রায় একবছর চলে যায়।

Related Post

২০০৩ সাল পর্যন্ত পাওয়া প্রায় সকল ভাইরাসই ছিল অতিক্ষুদ্র এবং কিছু কিছু ব্যাকটেরিয়া কোষের ভগ্নাংশ। এর আগে যতগুলো বড় আকারের ভাইরাস আবিস্কার হয়েছে তার বেশিরভাগই পাওয়া গিয়েছে চিলির উপকূলে। প্যানডোরা ভাইরাস, অন্যতম বড় আকারের ভাইরাস যার দৈর্ঘ্য মাত্র ১ মাইক্রোমিটার। কিন্তু বর্তমানে আবিষ্কৃত পিথোভাইরাস যার দৈর্ঘ্য ১.৫ মাইক্রোমিটার, যা সাধারণ ভাইরাসের তুলনায় ১০০ গুন বড়। আলোক অণুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে দেখা যায় এর আকার ডিম্বাকৃতি।

আগের আবিষ্কৃত বড় আকারের ভাইরাসগুলো যেমন প্যানডোরা ভাইরাস, মেগাভাইরাস জীনগতভাবে প্রায় একই। কিন্তু হিমায়িত নতুন এই ভাইরাসটি সম্পূর্ণ আলাদা প্রকৃতির। গবেষকরা মনে করেন হিমায়িত এই ভাইরাসটি নিয়ে গবেষণা আমাদের নতুন দিক নির্দেশনা দিবে। এখান থেকে একটি বিষয় পরিষ্কার হয় যে, এই ভাইরাসগুলো হিমায়িত বরফে প্রায় ৩০ হাজার বছর টিকে থাকতে পারে। কারণ তারা তাদের বিপাকীয় ক্রিয়ার মাধ্যমে কোন অতিরিক্ত শক্তি ব্যয় করে না। এর কারণ এদের জড় অবস্থার রুপান্তর যা তাদের টিকে থাকাকে দীর্ঘায়িত করে।

উল্লেখ্য যে, ভাইরাসরা এককোষী অ্যামিবা অথবা ব্যাকটেরিয়ার দেহে প্রবেশ করে তাদের কোষকে নিজের দখলে নিয়ে নেয়। তারপর নিজের শরীরের ডিএনএ দ্বারা হুবহু প্রতিলিপি তৈরি করে। এভাবেই পোষকদেহে তারা বংশবৃদ্ধি করে থাকে।

তথ্যসূত্রঃ স্মিথসোনিয়ান

This post was last modified on মার্চ ৮, ২০১৪ 2:16 অপরাহ্ন

K. A. B Tohin

Recent Posts

আইফোনের নতুন গেম ইমুলেটর ডেলটা

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সম্প্রতি ডেলটা নামে আইফোনের একটি নতুন ইমুলেটর অ্যাপ তৈরি হয়েছে।…

% দিন আগে

চমক দেখাতে আসছে ‘পুষ্পা-২’

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দক্ষিণী সিনেমা ‘পুষ্পা’র তুমুল জনপ্রিয়তার পর মুক্তি পেতে চলেছে ‘পুষ্পা-২’।…

% দিন আগে

পাহাড়ি রাস্তায় লাফিয়ে চলা মেয়েটির ছবিতে কী কী পরিবর্তন আছে তা বলতে পারবেন?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ছোট বেলায় কিশোর পত্রিকার পাতায় আমরা অনেকেই এমন খেলা খেলেছি।…

% দিন আগে

সিলেটের সাদা পাথর: এক অপার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১…

% দিন আগে

গরমে করলার সঙ্গে কয়েকটি খাবার খেলে উপকার পাবেন না: কোন সেই খাবার?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা জানি করলা খেলে সুস্থ থাকে শরীর। তবে সঙ্গে বা…

% দিন আগে

হুমকির মুখে সফটওয়্যার এবং স্টার্টআপ খাতের উদ্যোগ

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এই বছরের জুন মাসে শেষ হচ্ছে সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি সার্ভিস…

% দিন আগে