ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আধুনিক যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে চলেছে তথ্য প্রযুক্তির হাওয়া। তাইতো বর্তমান বিশ্বে তথ্য প্রযুক্তি ছাড়া ভাবাই যায় না। আজ তথ্য প্রযুক্তির সংক্ষিপ্ত সংবাদ-২২ এ বিশ্বের বেশ কিছু তথ্য প্রযুক্তির খবর তুলে ধরা হলো।
অনলাইনে এডোবির ৫ গিগা ফ্রি জায়গা
অনলাইনে বিনামূল্যে দরকারি ফাইল ব্যাকআপ রাখার অনেক সাইট আছে। এবার এডোবি এক্রোবেট ডটকম দিচ্ছে তেমনই ৫ গিগাবাইট জায়গা। আর সঙ্গে দিচ্ছে ডেক্সটপ অ্যাপলিকেশন দ্বারা সহজেই ফাইল আপলোড এবং ডাউনলোড করার সুবিধা।
এজন্য প্রথমে www.acrobatcom সাইটে গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। এক্রোবেট ডটকমে লগইন করেও ফাইল আপলোড এবং ডাউনলোড করা যাবে। আর অনলাইনেই এসব ফাইল সমপাদনাও করা যাবে। তবে ওয়েবসাইটে না গিয়ে ডেক্সটপ অ্যাপলিকেশন দ্বারা ফাইল আপলোড বা ডাউনলোড করতে হলে ক্লাউড ড্রাইভ নামের ১.৯ মেগাবাইটের এই অ্যাপলিকেশনটি www.driveoncloud.com থেকে ডাউনলোড করে ইনস্টল করে নিতে হবে।
সফটওয়্যারটি উইন্ডোজ এক্সপি, ভিসতা এবং উইন্ডোজ ৭ এ চলবে। এবার ক্লাউড ড্রাইভ চালু করে লগইন করুন এবং ড্রাগ-ড্রপের মাধ্যমে বা আপলোড ডাউনলোড বাটনের মাধ্যমে সহজেই ফাইল ফোল্ডার আপলোড বা ডাউনলোড করতে পারেন।
ফেসবুকের বিরুদ্ধে মামলার হুমকি
কনজিউমার গ্রুপ ফেডারেশন অব জার্মান কনজিউমার অর্গানাইজেশনস জানিয়েছে, আগামী ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ফেসবুক যদি তৃতীয় পক্ষের অ্যাপ্লিকেশনের কাছে ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য দেয়া বন্ধ না করে, তাহলে তারা সোশাল মিডিয়াটির বিরুদ্ধে মামলা করবে।
জার্মান আইন অনুযায়ী, ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য তৃতীয় পক্ষের কারও কাছে দেয়ার আগে সেই ব্যবহারকারীকে স্পষ্টভাবে জানাতে হবে। ফেডারেশনের অভিযোগ মতে, ফেসবুক তা করছে না। আর তাই ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এ সেটিংসে পরিবর্তন না হলে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার হুমকি দিয়েছে তারা। ফেসবুক সব সময়ই ব্যবহারকারীদের বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন ও গেমস ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করেছে। সম্প্রতি ফেসবুক অ্যাপ সেন্টার উন্মুক্ত হওয়ার পর ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্যাদি নিরাপদ করার বদলে আরও হুমকির মুখে ফেলেছে ফেসবুক, এমনটাই দাবি করেছে গ্রুপটি। তাদের মতে, ব্যবহারকারী তাদের ব্যক্তিগত তথ্য সেসব অ্যাপ্লিকেশনের সঙ্গে শেয়ার করতে চান কিনা এ প্রশ্ন না করে ফেসবুক প্লে গেম বা সেন্ড টু ফোন ইত্যাদি বাটন ব্যবহার করছে। ফেসবুক মূলত কোন অ্যাপ প্রথমবার ব্যবহার করার সময় জানিয়ে থাকে কী কী তথ্য শেয়ার করতে হবে।
কেনেক্সার দাম ১৩০ কোটি ডলার!
সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান কেনেক্সাকে প্রায় ১৩০ কোটি ডলারে কিনতে যাচ্ছে আইবিএম। প্রতিষ্ঠানটি অধিগ্রহণের মাধ্যমে ক্লাউডভিত্তিক ব্যবসা আরও জোরদার করতে চাইছে আইবিএম।
আইবিএম কর্তৃপক্ষ জানায়, সর্বশেষ কেনেক্সার শেয়ারের দাম ৩২ ডলার ৩৯ সেন্ট ছিল। আইবিএম কর্তৃপক্ষ এ দামের প্রায় ৪২ শতাংশ বেশি দিয়ে ৪৬ ডলারে শেয়ার কিনবে। এ চুক্তির পর কেনেক্সার শেয়ারের দাম ১৩ ডলার ৪০ সেন্ট বা ৪১ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে প্রায় ৪৫ ডলার ৭৯ সেন্ট হয়। এর আগে ২০০৫ সালে কেনেক্সা শেয়ারবাজারে আসার পর এর সর্বোচ্চ মূল্য ছিল ৪৫ ডলার ৯৩ সেন্ট। এর বিপরীতে অধিগ্রহণের খবরে আইবিএমের শেয়ারের দাম কিছুটা কমে যায়। গত সোমবার অধিগ্রহণের খবর প্রকাশ হওয়ার পর প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার মূল্য ২ ডলার ৮ সেন্ট কমে ১৯৫ ডলার ৬৯ সেন্টে দাঁড়ায়। কেনেক্সা দীর্ঘদিন ধরেই লাভ করার চেষ্টা করছিল। ২০০৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির মোট ক্ষতি হয়েছে ১৫ কোটি ডলার। সম্প্রতি অধিগ্রহণবিষয়ক তথ্য প্রকাশ করে আইবিএম। কেনেক্সার সফটওয়্যারের মাধ্যমে বিভিন্ন কোম্পানি ফেসবুক ও লিংকডইন থেকে কর্মী নিয়োগ করতে পারে।
বর্তমানে এ প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকসংখ্যা ৮ হাজার ৯০০ এবং কর্মীসংখ্যা ২ হাজার ৮০০ জন। অধিগ্রহণের পর কোম্পানিটি কীভাবে চলবে জানতে চাইলে আইবিএম এপিকে জানায়, কেনেক্সার গ্রাহকরা আগের মতোই সেবা পাবে। এ ছাড়া তারা চাইলে আইবিএমের সেবাও গ্রহণ করতে পারবে।
নমুরা ইক্যুইটি রিসার্সের গবেষক রিক শেরলান্ড বলেন, এ অধিগ্রহণে আরমংকের সঙ্গে ওরাকল এবং জার্মান ব্যবসা সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এসএপির সঙ্গে প্রতিযোগিতা আরও দৃঢ় হবে।
২৩ ভাগ প্রবৃদ্ধি ভারতের অ্যাপ বাজারে
ভারতের অ্যাপ্লিকেশন বাজারের চলতি বছর আকার ২২ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়ে ২২ কোটি ৭০ লাখ ডলার হবে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠান গার্টনারের একটি পূর্বাভাস থেকে এ তথ্য জানা গেছে। গার্টনার জানায়, ২০১৫ সালের মধ্যে পিসির চেয়ে মোবাইল ডিভাইসেই ক্লাউড কম্পিউটিং অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট জনপ্রিয় হবে। এর পূর্বাভাস অনুযায়ী পিসির জন্য একটি অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপ করা হলে বিপরীতে মোবাইল ডিভাইসের জন্য চারটি অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপ করা হবে। প্রতিবেদন অনুযায়ী মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন, সিস্টেমস ও ডিভাইসগুলো অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্টে রাতারাতি পরিবর্তন আনছে।
এন্টারপ্রাইজ লেভেলে তথ্যবিষয়ক প্রধান কর্মকর্তারা (সিআইও) যে তিনটি বিষয়কে গুরুত্ব দেন, এটি তার অন্যতম। ২০১৩ সালের মধ্যে ল্যাপটপের বদলে ২০ শতাংশের বেশি চাকরিজীবী ট্যাবলেট কমিপউটার ব্যবহার করবেন বলে সিআইওরা আশা করেন। মার্কেট ট্রেন্ডস অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট সফটওয়্যার ওয়ার্ল্ডওয়াইড ২০১২-২০১৬ নামে এক প্রতিবেদনে গার্টনার জানায়, ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের কারণে অ্যাপ্লিকেশনের বাজারে পরিবর্তন আসছে। এগুলোর পরিকল্পনা, নকশা ও কাজে ভিন্নতা আসছে। ফলে পরিবর্তন আসছে অ্যাপ্লিকেশন উন্নয়নের বাজারে। এ বিষয়ে গার্টনারের প্রধান বিশ্লেষক আশিষ রায়না বলেন, দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে এ বাজার। ফলে অ্যাপ ডেভেলপাররা এর সঙ্গে তাল মেলাতে বাধ্য হচ্ছেন। প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, ২০১৫ সাল নাগাদ ভারতের ৯০ শতাংশ বড় প্রতিষ্ঠান ও সরকারি সংস্থাগুলো ক্লাউড কম্পিউটিং ব্যবস্থার আওতায় আসবে। একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ পরিশোধ করলে ক্লাউড স্টোরেজে সংরক্ষিত তথ্য ও সফটওয়্যার ব্যবহার করা সম্ভব।
ভারত ছাড়ছে মটোরোলা!
সেলফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মটোরোলা মবিলিটি প্রাতিষ্ঠানিক পুনর্গঠন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ভারতে কার্যক্রম বন্ধ করতে পারে। প্রযুক্তিবিষয়ক ব্লগ সাইট বিজিআর ইন্ডিয়া এ তথ্য জানিয়েছে। সাইটটির প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটি ভারতে নতুন কোন সেলফোন আনার জন্য কাজ করছে না। এছাড়া হায়দরাবাদে গবেষণা ও উন্নয়ন কেন্দ্র বিক্রির জন্যও প্রস্তুতি নিয়েছে। এ বিষয়ে মটোরোলার এশিয়া-প্যাসিফিকের কমিউনিকেশন পরিচালক উইলিয়াম মসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি পুনর্গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তবে ভারতে কার্যক্রম বন্ধ করা হবে কিনা, সে ব্যাপারে নিশ্চিত করে কিছু বলেননি। ই-মেইলের মাধ্যমে তিনি জানান, বিশ্বব্যাপী চার হাজার কর্মী ছাঁটাই করছে মটোরোলা। এর দুই-তৃতীয়াংশ ছাঁটাই করা হবে যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে থেকে। তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী বিশ্বের ৯০টি কার্যালয়ের এক-তৃতীয়াংশের কাজের আওতা কমিয়ে আনা হবে। ভারতের ওপরও এর প্রভাব পড়বে। তবে তারা দেশটিতে উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। বিশ্লেষকদের মতে, অ্যাপল ও স্যামসাংয়ের কাছে বাজার হারিয়েছে এক সময়ের শীর্ষ এ প্রতিষ্ঠানটি।
চলতি বছরেই বিক্রি হবে ১০ কোটি ট্যাবলেট
ট্যাবলেট কম্পিউটার কম্পিউটিং খাতে ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বেড়েই চলেছে এর বিক্রি। বাজারে প্রবেশ করছে নতুন সব প্রতিষ্ঠানও। সম্প্রতি গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবিআই রিসার্চ জানিয়েছে, চলতি বছরে ট্যাবলেট কম্পিউটারের বিক্রির পরিমাণ ১০ কোটি ইউনিটের মাইলফলক ছাড়িয়ে যাবে। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা দক্ষিণ কোরিয়ার স্যামস্যাংয়ের গ্যালাক্সি ট্যাবের বাজার দখল ৮ শতাংশ। এর পরের অবস্থানে রয়েছে অ্যামাজনের কিন্ডেল ফায়ার, আসুস, ডেল এবং এলজি। এবিআই আরও জানায়, গুগল ও মাইক্রোসফটের ট্যাবলেট কম্পিউটার বাজারে আসার ফলে এর বাজার আরও প্রসারিত হবে। বিশ্লেষক ওরের মতে, ২০১২ সালের পুরো বছরে ১০ কোটি ১০ থেকে ১০ কোটি ২০ লাখ ইউনিট ছাড়িয়ে যাবে।
জরিপে আরও জানা গেছে, সেলফোন নেটওয়ার্কের সাহায্য ছাড়াই অধিকাংশ ট্যাবলেট ওয়াই-ফাইয়ের মাধ্যমে ইন্টারনেটে সংযুক্ত হয়। ট্যাবলেটে সেলফোন নেটওয়ার্কের ব্যবহার আগের বছরের তুলনায় ১২ শতাংশ কমেছে। অধিকাংশ বিশ্লেষকের ধারণা, চলতি বছরের শেষ দিকে অ্যাপলের আইপ্যাডের ছোট সংস্করণ এবং অ্যামাজনের কিন্ডেল ফায়ারের হালনাগাদ সংস্করণ বাজারে আসার সম্ভাবনা আছে। এছাড়া অক্টোবরে মাইক্রোসফটের সারফেস বাজারে আনা হবে বলে জানা গেছে। এবিআইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ট্যাবলেট কম্পিউটারের বিক্রি বেড়ে নতুন রেকর্ড তৈরি হয়। এ সময় বিক্রি হয় ২ কোটি ৫০ লাখ ইউনিট। এ সময় ট্যাবলেট কম্পিউটার বিক্রির পরিমাণ গত বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় ৭৭ ও চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় ৩৬ শতাংশ বেড়েছে।
এবিআইয়ের প্রাথমিক মূল্যায়ন অনুযায়ী, ট্যাবলেট কম্পিউটারের বাজারে শীর্ষে থাকা অ্যাপলের আইপ্যাডের দখল ৬৯ শতাংশ। এবিআইয়ের বিশ্লেষক জেফ ওর জানান, ২০১০ সালে সব প্রতিষ্ঠান মিলে যে পরিমাণ ট্যাবলেট কম্পিউটার বিক্রি করেছে, ২০১২ সালে প্রায় একই পরিমাণ আইপ্যাড বিক্রি হয়। বছরের এ পর্যন্ত আইপ্যাড বিক্রির পরিমাণ ১ কোটি ৭০ লাখ ইউনিট। বিক্রি হওয়া আইপ্যাডের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষা খাতে তুলনামূলক কম দামে বিক্রি করা ১০ লাখ ইউনিট আইপ্যাডও অন্তর্ভুক্ত।