দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পশুর প্রতি মানুষের ভালবাসা দেখেছি আমরা কিন্তু এবার দেখা যায় মানুষের প্রতি একটি পশুর কতখানি ভালবাসা রয়েছে। এমনই একটি ঘটনা নেদারল্যান্ডসের রটারডাম চিড়িয়াখানার।
এমনই একটি ঘটনার স্বাক্ষী এই ছবিটি। পশুর প্রতি যে মানুষটি আজীবন ভালবাসা দেখিয়েছেন তিনি কেনই বা পাবেন না সেই পশুর ভালবাসা? তা কি কখনও হতে পারে? না হতে পারে না। আর তাই সেটিই প্রমাণ হলো যে, যে যেমন কাজ করবে, সে তেমন ফল পাবে। পশুর প্রতি ছিল এক অসীম ভালবাসা। আর তাই মৃত্যুশয্যায় এসে সেই পশুরাও তাঁকে দেখিয়েছেন ভালবাসার দৃষ্টান্ত। এমনই ঘটনা ঘটেছে নেদারল্যান্ডসে।
সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, মারিও নামের ওই ব্যক্তি দীর্ঘ ৫৪ বছরের জীবনে বেশির ভাগ সময় কাটিয়েছেন চিড়িয়াখানায়। চিড়িয়াখানার পশুপাখিদের মধ্যেই কেটেছে জীবনের অধিকাংশ সময়। তাঁর কাজই ছিল পশুপাখির দেখাশোনা করা। কিন্তু ক্যান্সার তার জীবনকে করে তুলেছে এক দুর্বিষহ। কয়েকটা মাসে বদলে গেছে মারিওর জীবন চিত্র। ওষুধ, ইনজেকশন আর হাসপাতালের বিছানায় বসে প্রতিনিয়ত ক্যানসারের যন্ত্রণায় কাটছে তার দিন রাত।
ক্যান্সারের আক্রান্ত মৃত্যু পথযাত্রী মারিও ডাক্তারদের কাছে আবদার করেছিলেন, একবার চিড়িয়াখানায় পুরনো ঠিকানায় ফিরতে চান। খবর চলে যায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘অ্যাম্বুল্যান্স উইশ ফাউন্ডেশনের’ কানে। জীবনের শেষ প্রান্তে পৌঁছে যান যারা, এমন মানুষের ইচ্ছা পূরণই মূলত তাদের কাজ। মারিওর কথা শুনতেই তোড়জোড় শুরু করে ওই সংগঠনের কর্মীরা। বিশাল জানালা দিয়ে দুই চোখ ভরে আশপাশ দেখা যায় এমন একটি বিশেষ ব্যবস্থার এ্যাম্বুলেন্স নিয়ে হাজির হন তারা। ওই অ্যাম্বুল্যান্সে করে মারিওকে নিয়ে যাওয়া হয় নেদারল্যান্ডসের রটারডাম চিড়িয়াখানায়। নড়াচড়ার ক্ষমতা নেই তার, তাই গায়ে চাদর চাপা দিয়ে বেল্ট দিয়ে বিছানার সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে দেওয়া হয় শরীরটাকে। ঘুরিয়ে দেখানো হয় চিড়িয়াখানার চারিদিকে।
৫৪ বছর বয়সী চিড়িয়াখানার মেইন্টেইন্যান্স কর্মী মারিও অনেকদিন যাবত টার্মিনাল ক্যান্সারে ভুগছিলেন। তার বেচে থাকার আশা সর্বোচ্চ আর এক সপ্তাহ ছিল। তিনি হাসপাতালের বেড থেকে তার শেষ ইচ্ছা জানান যে, চিড়িয়াখানার জিরাফদের থেকে বিদায় নিতে চান। এই প্রানীগুলোকে তিনি বেশি পছন্দ করতেন। লোকটির শেষ ইচ্ছে পূরণের লক্ষ্যে বহনযোগ্য বেডটিসহ তাকে নিয়ে আসা হয় চিড়িয়াখানায়। জিরাফটি লোকটির দিকে এগিয়ে আসে তাকে একটি আন্তরিক চুমু দেয় যেন শেষ বিদায় জানাচ্ছে। দৃশ্যটি সবাইকে মর্মাহত করে। উপস্থিত সবাই বলেন তারা এমন হৃদয়বিদারক দৃশ্য আর দেখেননি।
মারিও নামের লোকটির এই শেষ বিদায়ে সাহায্য করে উইশ ফাউন্ডেশন নামের একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। “প্রানীগুলো তাকে চিনতে পারে এবং বুঝতে পারে তার শরীরের অবস্থা ভালো নয়, ফলে তারা এগিয়ে আসে তাকে আদর করে”-কথাগুলো বলেন উইশ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি সেখানে উপস্থিত ছিলেন। মারিও তার এই শেষ ইচ্ছের কথা প্রথম প্রকাশ করে ডাচ পত্রিকা অ্যালজিম্যানের কাছে, সেখান থেকে জেনে উইশ ফাউন্ডেশন তা পূরণে এগিয়ে আসে। মারিও তার সহকর্মীদের থেকেও বিদায় নিয়েছে। তার জীবনের বেশিরভাগটাই সে রোটারডেমের চিড়িয়াখানায় কাটিয়েছে।
উইশ ফাউন্ডেশনের প্রধান আরো বলেন, “আমরা খুবি আনন্দিত যে আমরা তার শেষ ইচ্ছেটুকু পূরণ করতে পেরেছি।” উইশ ফাউন্ডেশন মূলত হাসপাতালে থাকা মৃত্যুপথযাত্রীদের শেষ ইচ্ছে পূরণে কাজ করে থাকেন। তারা বহনযোগ্য বেড, প্লেন এবং অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে রোগীকে যেখানে যেতে চায় সেখানে নিয়ে যায়। ২০০৭ সালে এই প্রতিষ্ঠানটি যাত্রা শুরু করে। গতবছর তারা এমনি একজন মৃত্যুপথযাত্রীর শেষ ইচ্ছা পূরণ করে আলোচনায় আসেন।
তথ্যসূত্রঃ ডেইলিমেইল
This post was last modified on মার্চ ২৫, ২০১৪ 11:19 পূর্বাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ঈদ-উল-ফিতর ২০২৫ উপলক্ষে এনটিভি'র ৭ দিন ব্যাপী বিশেষ অনুষ্ঠানসূচী। আজ…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আজ (সোমবার) পবিত্র ঈদ-উল- ফিতর। মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসবের একটি…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। সোমবার, ৩১ মার্চ ২০২৫ খৃস্টাব্দ, ১৭ চৈত্র ১৪৩১…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গরমের এই সময় সজনে ডাঁটা পাওয়া যায় বাজারে। কচি-সবুজ ডাঁটাগুলো…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ঈদ-উল-ফিতর ২০২৫ উপলক্ষে এনটিভি প্রতি বছরের মতো এবারও ৭ দিনব্যাপী…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাংলাদেশের আকাশে আজ (রবিবার) ১৪৪৬ হিজরি সনের পবিত্র শাওয়াল মাসের…