দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাবা ছিলেন মিষ্টির দোকানী সেই সুবাদে নিজেও কাজ করেন মিষ্টির দোকানে। তবে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র চন্দ্র শেখর ঘোষ (৫৩) এখন ভারতের নতুন অনুমোদন পাওয়া দুটি ব্যাংকের একটির মালিক!
একেবারে খাদের কিনারা থেকে কিভাবে পাহাড় চূড়ায় উঠা যায় এমন নজির সৃষ্টি করেছেন বাংলাদেশের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র চন্দ্র শেখর ঘোষ! তার জন্ম আগরতলার ত্রিপুরায়, বাবা আগরতলাতেই একটি ছোট মিষ্টির দোকানের মালিক ছিলেন। শৈশব থেকে দেখে এসেছেন কিভাবে জীবন যুদ্ধে বাবা মিষ্টির দোকান চালিয়ে সংসার চালিয়েছেন। তার বাবা কষ্ট করে সংসার চালালেও সন্তানকে শিক্ষিত করে তুলতে প্রত্যয়ী ছিলেন। বাবার আগ্রহে চন্দ্র শেখর ঘোষ ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগে। এখান থেকেই মাস্টারর্স ডিগ্রি অর্জন করেন।
মাস্টারর্স ডিগ্রি অর্জন করার পর চন্দ্র শেখর ঘোষ যোগ দেন বাংলাদেশের দ্রুত বর্ধনশীল আন্তর্জাতিক পুরুস্কারপ্রাপ্ত এনজিও ব্র্যাকে। এখানেই তিনি ব্র্যাক প্রতিষ্ঠাতা ফজলে হাসান আবেদকে কাছে থেকে দেখেন। এবং তার থেকে বিভিন্ন পরামর্শ গ্রহণ করেন। এক সময় চন্দ্র শেখর ফিরে যান আগরতলাতে, সেখানে গিয়ে কাজ করেন কিছু এনজিও নিয়ে। তবে সেখানে তিনি দেখতেপান কিছু এনজিও ১০০% কিছু কিছু ক্ষেত্রে ২০০% সুদ নিয়ে গ্রাম্য মানুষদের কিভাবে শোষণ করছে। এই প্রেক্ষিতে চন্দ্র শেখর নিজের কাছে থাকা মাত্র ২ লাখ রুপি দিয়েই শুরু করেন নিজের একক প্রতিষ্ঠান ন-ব্যাংকিং ফিনান্সিয়াল কোম্পানি (এনবিএফসি) বন্ধন ফিনান্সিয়াল সার্ভিস।
এর পর নিজের ঐকান্তিক প্রচেস্টা আর একাগ্রতার কারণে তাঁকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। সম্প্রতি রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া নতুন যে দু’টি ব্যাংকের অনুমোদন দিয়েছে তার মধ্যে চন্দ্র শেখরের ব্যাংকটি অন্যতম। এক্ষেত্রে চন্দ্র শেখরকে লড়তে হয়েছে ভারতের নাম করা কোম্পানি সমূহের সাথে। তবে সবাইকে পেছনে ফেলেই চন্দ্রশেখর অবশেষে ভারতের নতুন অনুমোদন পাওয়া দুটি ব্যাংকের একটির লাইসেন্স পেয়েছেন।
এবিষয়ে চন্দ্র শেখর বলেন, “আমি জানতাম আমার কাজের মূল্যায়ন আমি পাবো, তবে যাদের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে আমরা লাইসেন্স পেয়েছি তা অনেকটাই অকল্পনীয় ছিলো অনেকের কাছেই।”
তিনি আরও বলেন, ‘আমি কঠিন সময়ের মোকাবেলা করে বেড়ে উঠেছি। আমি আমার বাবার মিষ্টির দোকান থেকে পাওয়া সহায়তা কাজে লাগিয়েছি। এক্ষেত্রে দুজন মানুষ আমার অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছেন, তাঁরা হচ্ছেন বাংলাদেশের ফজলে হাসান আবেদ এবং ভারতের সিদবির ব্রজমোহন’।