দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গোথিক সাইন্স ফিকশনে একটি গল্প ছিল যেখানে সাদা কোট পরিহিত একজন ব্যক্তি তার কারখানায় কৃত্রিম রক্ত এবং হাড় তৈরি করতো। গোথিক সাইন্স ফিকশনের সেই গল্প আজ বাস্তবে পরিণত হতে চলেছে।
প্রথমবারের মতো কারখানায় কৃত্রিম রক্ত উৎপাদনের জন্য মানব শরীরের স্টীম সেলের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ উপায় আবিষ্কৃত হয়েছে। এটি আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের সবচেয়ে চমকপ্রদ আবিস্কার। এর মাধ্যমে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়াররা শরীরের বায়ো-ম্যাকানিজমে পরিবর্তনের মাধ্যমে মানব শরীরের দুরারোগ্য রোগের চিকিৎসার পথ সুগম করতে পারবে বলে আশা করা যায়। ইতোমধ্যে আমরা চিকিৎসাবিজ্ঞানের সাথে প্রকৌশল এবং প্রযুক্তিবিদ্যার সমন্বয় দেখতে পেয়েছি। থ্রিডি প্রিন্টারের মাধ্যমে গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রে মানব শরীরের হাড় এবং বায়োনিক অঙ্গ তৈরি করা হয়েছে।
মার্ক টার্নার কৃত্রিম রক্তকোষ তৈরির গবেষণার প্রধান বিশেষজ্ঞ। তাদের এই গবেষণার পেছনে ওয়েলকাম ট্রাস্ট ফাউন্ডেশন নামের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে বিনিয়োগ করা হয়েছে ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। টেলিগ্রাফকে দেওয়া বিবৃতিতে মার্ক টার্নার বলেন আমরা ক্লিনিক্যাল ট্রান্সফিউশনের জন্য এই লোহিত কণিকা কোষ তৈরি করছি।
প্রফেসর টার্নার বলেন, লোহিতকণিকার কৃত্রিম উৎপাদনের উপায় হিসেবে তারা একটি বায়োমেকানিক্যাল ডিভাইস তৈরি করেছে। এই ডিভাইসটির মাধ্যমে তৈরি হয় ইন্ডাক্টেড প্লুরিপোটেন্ট স্টীম সেল বা আইপিএস সেল। এই কৃত্রিম কোষ তৈরির মূল কাঁচামাল হিসেবে কাজ করে মানব শরীরের লোহিত রক্ত কণিকা। জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়াটি মানব শরীরে যেমন থাকে তেমনি ইন্ডাক্ট কোষেও যেন তা বজায় থাকে তার দিকে বেশি করে লক্ষ্য রাখা হয়। মার্ক টার্নার আরো জানায় প্রথমদিকে তারা বিশ্বের সবচেয়ে দুর্লভ রক্ত ও নেগেটিভ তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে।
মার্ক টার্নার আরো বলেন, বিশ্বের আরো অনেক দেশেই একই রকমের গবেষণা করা হচ্ছে। কিন্তু তারাই প্রথম নিরাপত্তা নির্দেশক মাপকাঠি এবং গুনগত মান বজায় রেখে কৃত্রিম রক্ত কোষ তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। পরীক্ষামূলকভাবে ২০১৬ সালে কৃত্রিম রক্ত মানুষের শরীরে প্রয়োগ করা হবে। থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত তিনজন রোগী ইতোমধ্যে এই কৃত্রিম রক্ত গ্রহণ করতে রাজি হয়েছেন। থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের কিছুদিন পরপর রক্ত পরিবর্তন করতে হয়। উৎপাদিত এই রক্ত শরীরে প্রয়োগের পর নিয়মিত মনিটরিং করা হবে।
রক্তের এই কৃত্রিম লোহিত রক্তকণিকা নিরাপদ। কৃত্রিম এই লোহিত রক্তকণিকা যেন মানুষের হাতের নাগালে থাকে সে রকম উৎপাদনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এছাড়াও সকল রোগের চিকিৎসা উপযোগীভাবে এবং রোগীদের শারীরিক অবস্থার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে কার্যকারিতার দিকে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে। ব্লাডব্যাংকগুলো নিরাপদ রক্তের সন্ধানে এখন রক্ত পেতে বেশ হিমশিম খেতে হচ্ছে। বিশেষকরে ১৯৮০ সালের পর থেকে রক্ত দাতার থেকে রক্ত গ্রহণের পূর্বে এইচআইভি এবং হেপাটাইটিস-বি পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এরফলে সারা পৃথিবী জুড়ে নিরাপদ রক্ত পাওয়াটা বেশ কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মার্ক টার্নার আরো জানান, রক্তের এই পাওয়া না পাওয়া পরিস্থিতিতে যুক্তরাজ্যে প্রতিবছর ২ মিলিয়ন ইউনিট রক্তের প্রয়োজন হয়। এক ইউনিট রক্তে প্রায় এক ট্রিলিয়ন লোহিতরক্তকণিকা থাকে। এক ইউনিট রক্ত ট্রান্সফিউশনের জন্য প্রায় ১২০ ইউরো খরচ হয়। এমতবস্থায় এই কৃত্রিম রক্ত চিকিৎসাক্ষেত্রে নতুন দিকের উন্মোচন করবে বলে আশা করা যায়।
তথ্যসূত্রঃ টেলিগ্রাফ
This post was last modified on এপ্রিল ২২, ২০১৪ 10:12 পূর্বাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারী ২০২৫ খৃস্টাব্দ, ২৩ পৌষ ১৪৩১…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ব্রণ বিষয়ে চিকিৎসকরা মনে করেন, অ্যাডাল্ট অ্যাকনির নেপথ্যে মূল কারণ…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সেরা প্রযুক্তি আও উদ্ভাবনের জোরে বিনোদনের সংজ্ঞাকে প্রতিনিয়ত পাল্টে দিচ্ছে…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভিটামিন বি১২ শরীরের কতগুলো গুরুত্বপূর্ণ কাজ পরিচালনা করে। তাই এই…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আজ (সোমবার) আজিমপুর কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন বাংলা সিনেমার কিংবদন্তী…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় গত ৩ দিনে…