মানবজাতির বিস্তৃতির লড়াইয়ের কারণেই পরিবেশ থেকে হারিয়ে গিয়েছে ম্যামথ

দি ঢাকা টাইমস্‌ ডেস্ক ॥ সম্প্রতি গবেষণায় বিজ্ঞানীরা বলছেন, বরফ যুগের অতিকায় হস্তীমত ম্যামথগুলো মানব শিকারীদের অতি শিকারের ফলে বিলুপ্ত হয়েছে। কিন্তু এর আগে মনে করা হতো পরিবেশের পরিবর্তনের কারণে এই ম্যামথগুলো পরিবেশ থেকে হারিয়ে গিয়েছে।


নতুন এই গবেষণায় এই সকল প্রাণীদের বিলুপ্ত হওয়ার জন্য মানুষদের দায়ী করা হচ্ছে। পরিবেশ তাদের যতটা না ক্ষতি করতে পেরেছে মানুষ তাদের তার চেয়েও বেশি ক্ষতি করেছে। এছাড়াও আরো কিছু প্রাণীর পরিবেশ থেকে হারিয়ে যাওয়ার পেছনে মূল কারণ হলো মানুষ; তার মধ্যে রয়েছে বড় দাতের বিড়াল, বড় আকারের ক্যাঙ্গারু এবং কালো চিতার মতো দেখতে একপ্রকার সিংহ। প্রায় ১৭৭ প্রজাতির প্রাণীর এই অস্তিত্ব বিনাশের পেছনে রয়েছে মানুষের ভূমিকা। আজ থেকে প্রায় ১৩২০০০ বছর আগে এই প্রাণীগুলো আমাদের এই পরিবেশে টিকে ছিল। কিন্তু মাত্র ২০০০ বছর পূর্বে মানুষের বিস্তৃতি শুরু হলে এই প্রাণীদের বিনাশ শুরু হয়।

বিজ্ঞানীরা সাম্প্রতিক সময়ে একটি গবেষণায় বলেছেন যে, তারা চেষ্টা করছেন এই হারিয়ে যাওয়া ম্যামথদের ক্লোনিং এর মাধ্যমে আবার পরিবেশে ফিরিয়ে আনা যায় কিনা। বিশেষজ্ঞরা সেই গবেষণার ফলশ্রুতিতে সাম্প্রতিক সময়ে রাশিয়ার সাইবেরিয়ার কারকাস এলাকায় আবিষ্কার করেছেন ৪৩০০০ বছর আগের একটি ‘হাই কোয়ালিটি ডিএনএ’। এই লোমশ ম্যামথগুলো আজ থেকে ৪০০০ বছর আগে সর্বশেষ সাইবেরিয়ার এই অঞ্চলে টিকে ছিল। এই ক্লোনিং প্রক্রিয়াটি সাধারণত সম্পন্ন করা হবে একটি স্ত্রী ম্যামথের সরোগেট পদ্ধতির মাধ্যমে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই ক্লোনিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পরিবেশের বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া ৩০ শতাংশ প্রাণীদের ফিরিয়ে আনা যাবে।

প্লাইস্টোসিন যুগের পরেই শুরু হয়েছিল বরফযুগ, সাংখ্যিক হিসেবে এই সময়কালটি শুরু হয়েছিল ১.৮ মিলিয়ন বছর পুর্বে এবং শেষ হয়েছিল আজ থেকে ১১৭০০ বছর আগে। বিজ্ঞানীরা গত ৫০ বছর ধরে জানার চেষ্টা করছেন কোনটির কারণে একসাথে এতগুলো প্রাণীর বিলুপ্ত ঘটেছিল। সাম্প্রতিক গবেষণায় তা ফুটে উঠে যে, মানবজাতির বিস্তৃতির কারণে এই সকল দানবাকার প্রাণীগুলো পরিবেশ থেকে হারিয়ে গিয়েছে। বড় প্রাণীদের একটি বড় অংশই পরিবেশের পরিবর্তনের সাথে সাথে টিকে থাকতে পারার সামর্থ্য ছিল। কেননা তারা বরফযুগের একটি বিস্তৃতি সময়কে ভালোভাবে পার করে আসতে পেরেছে।

Related Post

আজ থেকে ১০০০০০ বছর আগে আধুনিক মানুষগুলো আফ্রিকা থেকে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে। এই ছড়িয়ে পড়ার মাঝে তাদের টিকে থাকার জন্য শুরু হয় দানবাকার প্রাণীদের সাথে লড়াই। এই লড়াইয়ে মানবজাতি টিকে যায় আর হারিয়ে যায় বিশালাকার প্রাণীরা। চার্লস ডারউইনের সেই বিখ্যাত সূত্র আমাদের এই বাস্তবতার কথা মনে করিয়ে দেয়, যেখানে তিনি বলেছিলেন, শুধুমাত্র যোগ্যরাই টিকে থাকবে।

তথ্যসূত্রঃ ডেইলিমেইল

This post was last modified on জুন ১০, ২০১৪ 1:45 অপরাহ্ন

K. A. B Tohin

Recent Posts

ডায়াবেটিস রোগিরা ‘ইনস্ট্যান্ট নুডলস’ খেলে কি রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ‘ইনস্ট্যান্ট নুডলস’ স্বাদে মিষ্টি না হলেও এই ধরনের খাবারে শর্করার…

% দিন আগে

বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের কান্ট্রি ম্যানেজার হিসেবে সাব্বির আহমেদকে নিয়োগ দিলো ভিসা

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পেমেন্ট প্রযুক্তিতে বিশ্বের নেতৃস্থানীয় প্রতিষ্ঠান ভিসার বাংলাদেশ, নেপাল এবং ভুটানের…

% দিন আগে

বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ইন্টারন্যাশনাল ডিজ্যাবিলিটি আর্ট ফেস্টিভ্যাল

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অন্তর্ভূক্তিমূলক থিয়েটার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী শিল্পীদের নিয়ে ব্রিটিশ কাউন্সিলের দীর্ঘমেয়াদী প্রচেষ্টার…

% দিন আগে

বিয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন শাকিব খান!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেতা শাকিব খান। অপু বিশ্বাস ও বুবলীকে…

% দিন আগে

৬ মাসে ইসরায়েলি বর্বরতায় গাজায় নিহত ১৩ হাজার শিশু

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গাজা উপত্যকায় গত ৬ মাসে নিহত শিশুদের সংখ্যা আঁতকে উঠার…

% দিন আগে

আপনার চরিত্র কেমন তা আপনার আঙুলের আকৃতিই বলে দেবে!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আপনার ব্যক্তিত্ব কীরকম তা বলে দিতে পারে আপনার আঙুলের আকৃতি!…

% দিন আগে