দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভাড ইউনিভার্সিটির একটি লাইব্রেরীতে উনিশ শতকের একটি বই পাওয়া গিয়েছে যা মানুষের চামড়া দিয়ে বাঁধানো। একদল রাসায়নিক বিশেষজ্ঞ এবং জীববিজ্ঞানী বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার পর নিশ্চিত হন যে, এই বইটির মলাট মানুষের চামড়া দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।
মানুষের চামড়া দিয়ে বাঁধাই করা এই বইটি লিখা হয়েছে মানুষের আত্মা নিয়ে। বইটির মুখবন্ধে লিখা রয়েছে যে বইটি লিখা মানুষের আত্মা নিয়ে তার মোড়কটি হওয়া উচিত মানুষের চামড়া দিয়ে। দি দেসটিনিস ডি লেম বা The Destiny of the Soul বা আত্মার গন্তব্য নামের এই বইটির এই মুখবন্ধ দেখে বিশেষজ্ঞরা এর প্রতি আকৃষ্ট হন। তারা বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার পর বুঝতে পারেন এর লেখক এটি কথার কথা হিসেবে লেখেননি বরং সত্যিই এর মোড়ক মানুষের চামড়া দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয়ের হুতোন লাইব্রেরীতে বইটি সংরক্ষিত ছিল। ফরাসি কবি ও উপন্যাসিক আর্সেন হুসে (১৮১৫-১৮৯৬) এই বইটির লেখক। তিনি বইটিতে আত্মা তার গভীর দর্শনের বিষয়ক অনেকগুলো প্রবন্ধ রচনা করেন। ডা.লুডোভিক বুল্যান্ড ১৯৩০ সালে হুতোন লাইব্রেরীর নিকট বইটি অনুদান হিসেবে প্রদান করেন।
ডা.লুডোভিক বুল্যান্ড ছিলেন আর্সেন হুসোর একজন বন্ধু। আর্সেন তার এই বন্ধুকে বইটি উপহার হিসেবে প্রদান করেন। তার মুখবন্ধে লিখা ছিল, যে বই আত্মা নিয়ে লেখা তার মোড়কটি অবশ্যই মানুষের চামড়া দিয়ে তৈরি করা উচিত। তারপর লুডোভিক স্ট্রোকে মারা যাওয়া একজন নারী মানসিক রোগীর চামড়া দিয়ে বইটি বাঁধাই করেন। পেপটাইড মাস ফিঙ্গারপ্রিন্ট পদ্ধতির মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হন যে, এই বইটির মোড়ক ভেড়া, ছাগল বা অন্য কোন প্রাণীর চামড়া দিয়ে তৈরি নয়। বরং এটি তৈরি মানুষের চামড়া দিয়ে। পরবর্তীতে লিকুইড ক্রোমাটোগ্রাফী টেন্ডেম মাস স্পেক্টোগ্রাফী পরীক্ষায় দেখা যায় যে, পেপটাইড বন্ধনগুলোতে যে অ্যামাইনো এসিড রয়েছে তা মূলত প্রাইমেট বর্গের প্রাণীদের সাথেই মিলে যায় আর এ থেকে বোঝা যায় এর চামড়া মানুষের।
তথ্যসূত্রঃরোস্টোরি