হত দরিদ্র অবস্থা থেকে সারাবিশ্বকে জয় করলেন নেইমার ডি সিলভা!

দি ঢাকা টাইমস্‌ ডেস্ক ॥ ফুটবল দেশ ব্রাজিলের একটি কথিত ব্যবসা হলো তাদের তরুণ খেলোয়াড়দের পরিপূর্ণ করে ইউরোপের ক্লাবের কাছে বেশি দামে বিক্রি করে দেওয়া। এইভাবে ব্রাজিলের ক্লাবগুলো তাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখে। তবে এই ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ছিল নেইমারের সান্তোসের ক্লাব। ইউরোপের ক্লাবের বেশিদামের প্রস্তাবেও তারা নেইমারকে বিকিয়ে দেয়নি। আজ আমরা দি ঢাকা টাইমসের পাঠকের জন্য নেইমারের ছোটবেলার জীবনচিত্র তুলে ধরবো।


নেইমারকে নিয়ে ক্লাবের হুড়োহুড়ি

নেইমার তখন সবে সান্তোসের ক্লাবের জুনিয়র দল থেকে পেশাদার লীগে পা রেখেছে। এই সময় ইউরোপের ক্লাব ওয়েস্টহ্যাম ইউনাইটেডের নজরে পড়ে নেইমার। তারা সান্তোসের কাছে প্রস্তাব করে ১২ মিলিয়ন ডলার পাউন্ডে নেইমারকে বিক্রি করে দিতে। কিন্তু সান্তোস তাকে ছাড়েনি কেননা তারা নেইমারের ভেতরে প্রতিভার ঝলক দেখতে পায়। এরপর একের পর এক লীগের খেলায় নেইমারের চমকে ইউরোপের ক্লাবগুলোতে শুরু হয় তাকে বাগে পাওয়ার প্রতিযোগিতা। এই প্রতিযোগিতায় প্রথমে নাম লিখায় ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের ক্লাব চেলসি। ২০০৯ সালে ব্রাজিলিয়ান ক্লাব ফুটবলের ফাইনালে পালমেইনারসকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ান হয় নেইমারের ক্লাব সান্তোস। সেই লীগে নেইমারের ছিল ১৯ ম্যাচে ১৪ গোল বয়স মাত্র ১৫ বছর। এইভাবে শুরু হয় নেইমারের জীবনে ফুটবলের আলোক বাতি। যা আজ তাকে নিয়ে গিয়েছে সারাবিশ্বের অন্যতম দামী খেলোয়াড় এবং পরিণত করেছে ব্রাজিলের তারকা খেলোয়াড়ে।

দারিদ্র্যময় জীবন

Related Post

ল্যাটিন আমেরিকার অন্যান্য তারকা খেলোয়াড় যারা এক সময় পুরো পৃথিবী কাঁপিয়েছেন যেমন পেলে এবং ম্যারাডোনা তাদের মতো তার জীবনটিও দরিদ্রতায় পরিপূর্ণ। ল্যাটিন আমেরিকার এই দেশগুলোতে এমনিতেই হতদরিদ্র অবস্থা বিরাজ করে। ফুটপাথ, সমুদ্রসৈকত এবং বস্তিতে খেলতে খেলতে বড় হয়েছেন নেইমার ডি সিলভা। তার বাবা নেইমার ডি সিনিয়র ভাগ্যের চাকা ঘোরানোর জন্য একসময় পাড়ি জমান সাও পাওলো শহরে। তার বিশ্বাস ছিল এখানে এসে তিনি পেশাদার ফুটবল লীগে নাম লেখাতে পারবেন। কিন্তু তার স্বপ্ন পুরোই অধরা থেকে যায় এই সময় তার ঘর আলো করে আসে নেইমার ডি জুনিয়র। ছেলে নিয়েই এবার স্বপ্ন বুনতে শুরু করেন। এরপর সাওপাওলোর রাস্তায় খেলতে খেলতে ফুটবলের প্রেমে পড়ে যান ছোট্ট নেইমার। আর এখান থেকেই শুরু হয় তার স্বপ্নযাত্রা।

ইউরোপের জগত

২০১১ সালের কোপা আমেরিকার মাধ্যমে শুরু হয় তার বহুল প্রতীক্ষিত ব্রাজিলের জার্সি পড়ে খেলা। সেই খেলায় তিনি প্রথম ম্যাচে দুইগোল করে সবার দৃষ্টি কাড়েন। সেই সময় তার বয়স ছিল মাত্র ১৯ বছর। এরপর ২০১৩ সালের কোপা আমেরিকা তাকে খ্যাতির চূড়ান্ত শিখায় নিয়ে যায়। এবারের ম্যাচে নেইমার তার নিজের অস্তিত্ব চিনিয়ে দেন সারাবিশ্বকে। ব্রাজিলের গোল্ডেন বয় হিসেবে তার নাম প্রচারিত হতে শুরু করে। আর শুরু হয় ইউরোপের বড় বড় ক্লাবের যুদ্ধ। এই যুদ্ধে সান্তোসকে হার স্বীকার করতেই হয়। কেননা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, রিয়াল মাদ্রিদ আর বার্সেলোনার সাথে দর কষাকষিতে তাদের টিকে থাকাটা বেশ দুরহ হয়ে পড়লে নেইমারের ইচ্ছায় তাকে বার্সেলোনার কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়।

নেইমারের পুরো নাম নেইমার ডি সিলভা সান্তোস জুনিয়র। ১৯৯২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারী তার জন্ম হয় ব্রাজিলের সাওপাওলোতে। ব্রাজিল বিশ্বকাপের উদ্ভোধনী ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয় এই সাওপাওলোতে। যেখানের রাস্তায় তার স্বপ্নযাত্রা শুরু হয়েছে।

তথ্যসূত্রঃ বায়োগ্রাফি

This post was last modified on জুন ২৩, ২০১৪ 10:13 পূর্বাহ্ন

K. A. B Tohin

Recent Posts

পুষ্টিবিদরা যা বলেন: সুজি খাওয়া উপকারী নাকি ক্ষতিকর?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেকই সুজি খেতে খুবই ভালোবাসেন। তাই তারা প্রতিদিন সুজির পায়েস,…

% দিন আগে

বাংলা এবং হিন্দিতে ‘দরদ’-এর ট্রেলার ও গান প্রকাশ [ট্রেলার]

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রথমবারের মতো প্যান ইন্ডিয়ান চলচ্চিত্র বানিয়েছেন নির্মাতা অনন্য মামুন। ঢালিউড…

% দিন আগে

মুরগির লেগপিস প্রতিদিন খাওয়া কী ভালো?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আপনার যদি প্রতিদিন চিকেন খাওয়ার অভ্যাস থাকে, তাহলে জেনে রাখুন,…

% দিন আগে

উপদেষ্টা নাহিদকে নিয়ে নানা অপপ্রচার: সাবধান করেছেন সমন্বয়ক মাসউদ

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কোটা সংস্কার আন্দোলনের সংগঠন ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’- এর অন্যতম সমন্বয়ক…

% দিন আগে

ইলন মাস্ককে এক লাখ সরকারি চাকরি বাতিলের দায়িত্ব দিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নবনিযুক্ত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারণায় প্রতিশ্রুতি দেন…

% দিন আগে

গোল্ডেন আউল: ৩১ বছর ধরে চলা গুপ্তধন অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটলো

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অবশেষে গত ৩১ বছর ধরে চলা ‘গোল্ডেন আউল’ বিতর্কের অবসান…

% দিন আগে